প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কিছুদিন আগেই বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের কথা সামনে এনে একাধিক বিজেপি নেতা কর্মীকে দলেরই কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শোনা গিয়েছিল। আর সেখানেই সামনে এসেছিল বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রসঙ্গ। কারণ তাদের কথায়, দলের তৃণমূল থেকে যে সমস্ত নেতাকর্মীরা বিজেপিতে এসে যোগ দিয়েছেন তাদেরকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেখানে বিজেপির আদপে যারা পুরনো কর্মী, তারা দলের মধ্যে থেকে ব্রাত্য হয়ে যাচ্ছিলেন বলেই অভিযোগ করা হয়।

তবে এরআগে শুক্রবার বসিরহাটের জেলা দলীয় কার্যালয়ে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সকলকে এক সঙ্গে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ তার কিছু দিন আগে বসিরহাট থানার কাছে একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে বিজেপির সভায় দলেরই লোকজন ঢুকে অশান্তি করে সভা ভন্ডুল করেছিল বলে জানা গিয়েছিল।

সেখানে দলের বসিরহাট জেলা সভাপতি তারক ঘোষের অপসারণের দাবি তোলা হয়। তাঁকে হেনস্থা করা হয়। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। আর এরই মধ্যে দলের জেলা সভাপতির অপসারণের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে বিজেপিরই কিছু সদস্যকে।

এক্ষেত্রে দলের কর্মীদের তরফে অভিযোগ, এরই মধ্যে রবিবার নিজেদের দলীয় কার্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে নতুন করে তালাও ঝোলান বিজেপির কিছু নেতা-কর্মী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন আগে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে মিনাখাঁ উত্তর মণ্ডলের সভাপতি পুলিন গাইন, হাড়োয়া দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি বিজয় নষ্কর, সন্দেশখালি ১ মণ্ডলের সভাপতি সঞ্জয় পাল এবং সন্দেশখালি ২ পশ্চিম মণ্ডলের সভাপতি মনোরঞ্জন রফতানকেও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, এমনই ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিজেপির কিছু নেতা-কর্মী দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে, মুখে কালো কাপড় বেঁধে, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলে বসিরহাট শহরে টাউনহলের পাশে জেলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মাইকে স্লোগান দেওয়া হয়। সেখানে অবিলম্বে সভাপতিকে অপসারণ করতে হবে এই দাবি করা হয় বলেও জানা গেছে।

সেইসঙ্গে বিজেপির অবস্থান-বিক্ষোভ চলে বলেও জানা যায়। দলীয় কার্যালয়ের তালা হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে নতুন তালা দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যা না মিটলে লাগাতার অনশন বিক্ষোভে সামিল হওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলেও জানা যায়।

আর এই ঘটনার পরে বিজেপির জেলার সহ সভাপতি দুলাল রায়, জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কর্মকার এবং বসিরহাট পৌর মণ্ডলের সভাপতি বিশ্বনাথ রক্ষিতকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই প্রসঙ্গে দুলাল রায়, বিশ্বনাথ রক্ষিত জানিয়েছেন, বিরোধী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েই পরিকল্পনা করে দলের জেলা সভাপতি পুরনো কর্মীদের সরিয়ে দিচ্ছেন।

আর তাঁকে অপসারণ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলেও জানা গেছে। অন্যদিকে, পুলিন গাইনের কথায়, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আমরা দল গড়েছিলাম। এখন তাঁদের পদ থেকে অন্যায় ভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কোনও ভাবেই মানব না।” অন্যদিকে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির বসিরহাট জেলার সভাপতি তারক জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে সব জানানো হয়েছে। দল এর বিচার করবে বলেই আশা রেখেছেন তিনি।