এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃতদের বাড়িতে চাকরি, মমতার দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে! ধুয়ে দিলেন সুকান্ত!

ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃতদের বাড়িতে চাকরি, মমতার দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে! ধুয়ে দিলেন সুকান্ত!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এতদিন ধরে শুধু বিরোধীরাই বলেছিল যে, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়েছে। কিন্তু সে কথা মানতেই চায়নি রাজ্য সরকার। কিন্তু এবার রাজ্য মন্ত্রিসভার একটি সিদ্ধান্তের পর স্পষ্ট হলো যে, না, এই রাজ্য সরকার অন্তত কিছুটা হলেও স্বীকার করেছে যে, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়েছে। কিন্তু সেই হিংসায় যারা মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে বলে রাজ্য মন্ত্রীসভা সিদ্ধান্ত নিলেও তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। শুধুমাত্র তৃণমূলের যারা মারা গিয়েছেন, তাদেরকেই কি চাকরি দেওয়া হবে, নাকি এ ক্ষেত্রে কোনো দল, রং না দেখে সবার জন্য একই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য! এই প্রশ্ন কিন্তু উঠছে। তাই রাজ্য মন্ত্রীসভা ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃতদের পরিবারের একজনকে হোম গার্ডের চাকরি দেবে বলে ঘোষণা করলেও, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মনে। দিল্লি থেকে ফিরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি যে কথা বলেছেন, তা চাপে ফেলে দিয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে। কিন্তু কি এমন বলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? যা নিয়ে এত চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে!

প্রসঙ্গত, এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ভোট পরবর্তী হিংসায় তৃণমূলের বাইরে যে কেউ মারা গেছে, এটা তো মুখ্যমন্ত্রী মানতেই চান না। তিনি তো ভাবেন, শুধুমাত্র তৃণমূলের লোকেরাই মারা গিয়েছে বিরোধীদের কেউ মারা যায়নি। তাই বিরোধীদের লোকেরা সেই চাকরি পাবে তো, এটা একটা বড় প্রশ্ন।” একাংশ বলছেন, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে বিরোধীদের সাইডে রেখে কার্যসিদ্ধি হাসিল করাই এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এক্ষেত্রেও ভোট পরবর্তী হিংসাকে স্বীকার করলেও, শুধুমাত্র বেছে বেছে তৃণমূলের যারা মারা গিয়েছে, তাদের বাড়িতেই হয়ত চাকরি পৌঁছে দেবে রাজ্য। কিন্তু বিরোধীদের প্রচুর সংখ্যক কর্মী সেই হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন। অথচ তাদের দিকে দৃষ্টি নেই এই প্রশাসনের। কারণ তাহলে তো প্রমাণ হয়ে যাবে যে, এই রাজ্যে বিরোধীরা কতটা দমন পীরনের শিকার। তাই মুখে মুখ্যমন্ত্রী চাকরি দেওয়ার অনেক বড় বড় কথা বলতে পারেন। কিন্তু বাস্তবটা অন্য হতে পারে। বেছে বেছে বিরোধীদেরকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র শাসকদলের নেতাদের বাড়িতেই সেই চাকরি পৌঁছে দেওয়া হতে পারে। এই সংশয় ক্রমশ তীব্র হচ্ছে বলেই মত একাংশের।

বিজেপির দাবি, বিরোধী দলের কর্মীদের খুন করে বিরোধী রাজনীতিকে শেষ করে দেওয়াই তো এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য। বিরোধীরা যাতে না থাকে, তার সরকারের বিরুদ্ধে বলার মত লোক যাতে না থাকে, সেটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান টার্গেট। তাই ভোট পরবর্তী হিংসায় সবথেকে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন বিরোধী নেতা কর্মীরাই। এখন চাকরি দেওয়ার অনেক বড় বড় কথা মুখ্যমন্ত্রী বলছেন। কিন্তু সেই চাকরি বিরোধী নেতাদের বাড়িতে যে পৌঁছবে না, যারা প্রাণ হারিয়েছেন শাসক দলের সঙ্গে লড়াই করে, তাদের মা-বোনেরা বা বাড়ির সদস্যরা যে চাকরি পাবে না, এটা স্পষ্ট। তাই মন্ত্রীসভার এই সিদ্ধান্ত আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। এতে আখেরে তৃণমূল ছাড়া আর কেউ লাভবান হবে না বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মানতেই চান না যে, এই রাজ্যে বিরোধীরা নির্যাতনের শিকার। তিনি এমন একটা ভাব দেখান যেন, এই রাজ্যে গণতন্ত্রকে তিনি লালন এবং পালন করছেন। অথচ গোটা দেশে তো পরের কথা, গোটা বিশ্বে এইরকম গণতন্ত্র ধ্বংসকারী শাসক কোথাও নেই। বিরোধীদের বক্তব্য তেমনটাই। কিন্তু তারপরেও লজ্জা নেই এই রাজ্যের শাসকদলের। এখন নিজেকে মানবতার প্রতিমূর্তি হিসেবে তুলে ধরার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট পরবর্তী হিংসায় যারা মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারের একজন করে সদস্যকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু এখানেও মা মাটি মানুষের সরকারের দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে চলে আসবে। প্রমাণ হয়ে যাবে, সেই চাকরি শুধুমাত্র পেয়েছেন তৃণমূলের লোকেরাই। তাই সময় থাকতেই এই ব্যাপারে শাসক দলকে সতর্ক করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। কিন্তু তারপরেও যদি রাজ্য সরকার একতরফা আচরণ করে, তাহলে তার ফল ভয়ংকর হতে পারে। যদি সত্যিই সকলের বাড়িতে যারা ভোট পরবর্তী হিংসায় মারা গিয়েছেন, তাদের বাড়িতে চাকরি পৌঁছে দিতে হয়, তাহলে আদালতে জমা দেওয়া তালিকা নিয়ে এই ব্যাপারে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত রাজ্য সরকারের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!