এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার বুজরুকির পর্দাফাঁস, চাকরি নিয়ে রাজ্যের পোল খুলে দিলেন শুভেন্দু!

মমতার বুজরুকির পর্দাফাঁস, চাকরি নিয়ে রাজ্যের পোল খুলে দিলেন শুভেন্দু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-যে কোনো বিষয়েই চোখ বন্ধ করে এই রাজ্যের সরকারকে ভরসা করা যায় না। নিজেদের আখের গোছানো ছাড়া, নিজেদের দলের কর্মীকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া ছাড়া এই সরকার আর কিছুই বোঝে না। একতরফা নিয়ম নীতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার প্রশাসন চলে। বিরোধীদের তরফ থেকে তোলা এই ধরনের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি যখন রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ভোট পরবর্তী হিংসায় যারা মারা গিয়েছে, তাদের পরিবারের একজন করে সদস্যকে চাকরি দেবে, তখন বিরোধী নেতাদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে সন্দেহের বাতাবরণ। অনেকেই বলছেন, এখানেও মিথ্যে নাটক এবং বুজরুকির আশ্রয় নেবে রাজ্যের শাসকদল। বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে সেই চাকরি পৌঁছে দেওয়া হবে। কিন্তু যারা বিরোধী দলের কর্মী হিসেবে ভোট পরবর্তী হিংসায় মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে না। তবে সেই বিষয়ে এবার শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বললেন, তা অত্যন্ত মারাত্মক। যার ফলে রাজ্য সরকার চরম বিপাকে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, এদিন মন্ত্রিসভার এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি রাজ্য সরকারের পদ্ধতি নিয়ে যথেষ্ট সংশয় প্রকাশ করেন। কারণ শুভেন্দু অধিকারী জানেন যে, এই রাজ্য সরকারের ওপর বিন্দুমাত্র ভরসা নেই এবং এই রাজ্য সরকার আর যাই হোক, বিরোধী কর্মীদের মৃত্যু যেখানে স্বীকার করে না, সেখানে তারা তাদের বাড়িতে চাকরি পৌঁছে যাবে, এটা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। তাই একেবারে মুখের মত জবাব দিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “যারা তৃণমূলের হয়ে বোমা বাঁধতে গিয়ে মারা গিয়েছেন, সেই সমস্ত হার্মাদদের পরিবারে হয়ত চাকরি পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রকৃত যারা ভোট পরবর্তী হিংসায় মারা গিয়েছেন, বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা, তাদের বাড়িতে চাকরি পৌঁছে দেবে না এই সরকার। এটা আমার আশঙ্কা রয়েছে।” এখন তৃণমূল বলতেই পারে যে, শুভেন্দু অধিকারী বিরোধীতা করার জন্যই বিরোধীতা করছেন। যখন পদ্ধতি শুরুই হয়নি, তখন তা নিয়ে প্রশ্ন তিনি তুলছেন কেন? তবে এখানেই অনেকে বলছেন, ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। তৃণমূলের নীতিগত চরিত্র কি, তারা কতটা স্বেচ্ছাচারী, কতটা প্রতিহিংসা পরায়ন, তা আর কেউ না বুঝুন, শুভেন্দু অধিকারী খুব ভালো মতই বুঝেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্যাসিস্ট মনোভাব আজকে গোটা রাজ্যকে শেষ করে দিয়েছে। তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আগেভাগেই নিজের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করে পরবর্তীতে সরকার যাতে এই কাজ করলে তা হাতেনাতে ধরা যায়, তার জন্য সমস্ত কিছু প্রস্তুত করে রাখলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিজেপির দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেতাকর্মীদের মৃত্যু হয়েছে, এ কথা স্বীকার পর্যন্ত করেন না। তিনি ভাবেন ,তার দলের কর্মী ছাড়া এই রাজ্যে কারওর মৃত্যু হয়নি। অর্থাৎ নিজের হাতে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে নিজের কর্মীদের পরিবারের কাছে চাকরি পৌঁছে দিয়ে বিরোধীদের সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা শেষ পর্যন্ত করে যাবেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। আর এটা শুভেন্দু অধিকারীও খুব ভালো মত ধরে ফেলেছেন। যারা সত্যিই রাজনৈতিক লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের বাড়িতে হয়ত চাকরি পৌঁছবে না। চাকরি পৌঁছে যাবে তাদের বাড়িতে, যারা বোমা বাঁধতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আসলে এই সরকারের কাছে তো দুষ্কৃতিরাই প্রধান সম্পদ। তাই তাদের বাড়িতে, তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সব বিলিয়ে দেবে এই রাজ্যের ফ্যাসিস্ট সরকার। তবে যদি তা হয়, তাহলে তার প্রতিরোধ কি করে করতে হয় তা বিরোধীরা জানে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ার দানের ওপর কেউ ভরসা করে না। সামান্য একটা হোমগার্ডের চাকরি দিয়ে তিনি ভাবছেন, ভোট পরবর্তী হিংসায় যারা মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারের ভোট তিনি কিনে নিতে পারবেন। কিন্তু একটি ভোটে সন্ত্রাস এবং তার জেরে একটি পরিবারের সদস্যের মৃত্যু, সেই পরিবারের কতটা ক্ষতি করেছে, তা পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে বোঝার মত মানসিকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি কোনোটাই নেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। তা না হলে তিনি আইন শৃঙ্খলাকে মজবুত করতে পারতেন। সুষ্ঠভাবে ভোটের পরে পুলিশকে কঠোর হাতে সন্ত্রাস দমন করার নির্দেশ দিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে এখন সিমপ্যাথি আদায় করতে এই সমস্ত চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখানেও দ্বিচারিতা করা শুরু করবে রাজ্য সরকার। প্রকৃতই যারা মারা গিয়েছেন, তাদের বাড়িতে চাকরি না দিয়ে সেই চাকরি পৌঁছে যাবে বোমা বাঁধা মৃত হার্মাদদের পরিবারের বাড়িতে। শুভেন্দু অধিকারীর আশঙ্কার পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!