এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বালুরঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূলের টিকিট পেতে জোরদার লড়াই তিন-তিনজন হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীর?

বালুরঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূলের টিকিট পেতে জোরদার লড়াই তিন-তিনজন হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীর?

আসন একটি – আর তার জন্য জোর লড়াই একসঙ্গে তিন-তিনজন নেতা-নেত্রীর। তবে সেটা বিরোধী বনাম শাসকের লড়াই নয়। এ যেন পুরোটাই শাসকের সাথে শাসকের লড়াই। হ্যাঁ, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এরকমই এক দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছে বালুরঘাট লোকসভা আসনটি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২০১৪ সালে এই নাটকের শহর বালুরঘাটে তৃণমূলের প্রতীকে দাঁড় করানো হয় নাট্যকার অর্পিতা ঘোষকে।

আর এরপরই বিপুল ভোটে জিতে এসে বালুরঘাটে নিজের রাজনৈতিক অনুগামীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে শুরু করেন সাংসদ অর্পিতাদেবী। কিন্তু সাংসদ জেলার সমস্ত সংগঠনকে নিজের হাতে আনতে চাইলে পাল্টা পথে নামেন দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিপ্লব মিত্রও – বলে জানিয়ে থাকেন জেলার রাজনৈতিক মনোভাবাপন্ন মানুষ। আর এই নিয়ে জেলা সভাপতি ও সাংসদের অনুগামীদের লড়াই বহুবার প্রকাশ্যেই চলে এসেছে।

অন্যদিকে, জেলায় শাসকদলের রাজনীতিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর সাথে জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিবাদ দীর্ঘদিনের। ফলে বিগত ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে সেই শঙ্করবাবু বনাম বিপ্লববাবু লড়াইয়ে এই জেলায় অনেক আসনই হারাতে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে – বলে গুঞ্জন ওঠে শাসকদলের অন্দরেই। আর যার ফলে, প্রবল ক্ষুব্ধ হন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়‌। প্রকাশ্যে এ নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার নেতাদের ধমকও দেন তিনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু, তারপরও জেলার নেতাদের আভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব এতটুকুও কমেনি বলে খবর। সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাজার ঠিক প্রাকমুহূর্তে এখন গোটা জেলা জুড়ে শাসকদলের প্রার্থী নিয়েই শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা। জানা গেছে, ফের এই বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ার আশায় ইতিমধ্যেই ঘর গোছাতে শুরু করেছেন বর্তমান সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। এমনকি, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসাবে সেখানে ইতিমধ্যেই ঘরভাড়া নিয়ে ওয়ার রুম বানানোর প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছেন তিনি বলে খবর।

পাশাপাশি, প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তলায় তলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট লোকসভা আসন থেকেই নিজেরা প্রার্থী হবেন এ আশায় দিন গুনছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র এবং বালুরঘাটেরই প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শংকর চক্রবর্তীও – বলে তীব্র জল্পনা ছড়িয়েছে শাসকদলের অভ্যন্তরে। এদিকে কে প্রার্থী হবেন সে নিয়ে শাসকদলের এই তিন নেতার মধ্যে লড়াই চললেও এই জেলা রাজনীতিতে তপনের বিধায়ক তথা রাজ্যের বর্তমান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার ভূমিকার দিকেও নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল।

কেননা বিধায়ক এবং মন্ত্রী থাকার সুবাদে বাচ্চুবাবু লোকসভায় প্রার্থী হতে না পারলেও তিনি জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী তথা শঙ্কর চক্রবর্তীর অনুগামী বলেই পরিচিত। ফলে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে যদি এই বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিপ্লব মিত্রকে প্রার্থী করে তৃণমূল কংগ্রেস তাহলে এই জেলায় ২০১৬-র পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। অন্যদিকে পুনরায় বর্তমান সাংসদ অর্পিতা ঘোষকে প্রার্থী করা হলেও সেখানে বিপ্লব মিত্র এবং শঙ্কর চক্রবর্তীর ভূমিকা – ঠিক কি হবে তা নিয়েও ধন্দে রয়েছেন অনেকে।

এনিয়ে, প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না কোনো দলীয় নেতা-কর্মীই! কিন্তু, তাঁরা রীতিমত শঙ্কিত নেতারা নির্দেশ দিলেও, নিজেদের প্রিয় নেতা বা নেত্রীকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে না পেলে – দলীয় কর্মীরা ঠিক কি পদক্ষেপ নেবেন! এদিক থেকে কিছুটা সেফসাইডে রয়েছেন শঙ্করবাবু। কিন্তু দলীয় স্তরে তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে যে, দক্ষ প্রশাসক হিসেবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নয়নমনি হলেও তিনি খুব একটা জনসংযোগে ব্রতী নন। এদিকে দলীয় সূত্রের খবর, বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিপ্লব মিত্রের সাথে জেলার অন্যান্য সমস্ত তৃণমূল নেতারই অহিনকুল সম্পর্ক।

তবে এই জেলার রাজনীতিতে বিপ্লব মিত্রের হাতে সংগঠনের একটি বড় অংশ রয়েছে। আর তাই ভোটে জিততে হলে সেই সংগঠনকে পাশে পেতেই হবে। এমতাবস্থায়, বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট পাওয়া নিয়ে অর্পিতা ঘোষ, বিপ্লব মিত্র এবং শঙ্কর চক্রবর্তীর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলার খবরে আসরে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। শাসকদলের টিকিট নিয়ে এই কোন্দলে শেষ পর্যন্ত গেরুয়া শিবির – বালুরঘাট লোকসভা আসনটি দখল করবে বলে নিশ্চিত জেলা বিজেপির নেতারা।

আর তাইতো শাসকদলের নেতাদের টিকিট পাওয়া নিয়ে এহেন প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে রসিকতার সুরে জেলা বিজেপির অনেকেই বলছেন, “রথ বলে আমি দেব, পথ বলে আমি, মূর্তি বলে আমি দেব, হাসেন অন্তর্যামী”! রাজনৈতিক মহলের মতে, শাসকদলের তিননেতার মধ্যে যদি টিকিট পাওয়া নিয়ে এহেন লড়াই চলতে থাকে তাহলে নিশ্চিতভাবে এই বালুরঘাট লোকসভা আসনে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যাবে বিজেপি। তবে শেষ পর্যন্ত বালুরঘাটে আগামী লোকসভা নির্বাচনে শাসকশিবিরের তরফ থেকে কে প্রার্থী হন তা তো ঠিক করবেন সর্বোচ্চ নেত্রীই। আর তিনি নির্দেশ দেওয়ার পরেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ পুষে রেখে ‘বিদ্রোহের’ পথে হাঁটতে সাহস করবেন কি কোন নেতা-কর্মী? সেই দিকেই তাকিয়ে এখন সমগ্র রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!