এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আজকের পর বাংলার সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক ভোটের রঙটা কি গেরুয়া হয়েই গেল? বাড়ছে জল্পনা

আজকের পর বাংলার সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক ভোটের রঙটা কি গেরুয়া হয়েই গেল? বাড়ছে জল্পনা


বর্তমান রাজ্য সরকারের উপর এই মুহূর্তে বোধহয় সবথেকে বেশি ক্ষিপ্ত রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কর্মচারীরা। একের পর এক আন্দোলন ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। আর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকা নেতা তথা সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে কথা বলে এই ব্যাপারে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেল।

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের এই ক্ষোভ কি অহেতুক? রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার আগে কি বলেছিলেন? তৎকালীন বাম সরকারকে কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য ছিল, যে সরকার সরকারি কর্মীদের বঞ্চনা করে তাদের ক্ষমতায় থাকার এক মুহূর্তও কোনো অধিকার নেই! তাঁকে বিশ্বাস করে সরকারি কর্মচারীরা দু হাত উজাড় করে তাঁকে সমর্থন করেছিলেন – আর তার প্রতিদানে তিনি কি দিচ্ছেন – কখনো ৪৯%, তো কখনো ৫৪% ডিএ বাকি! নজিরবিহীন ও অনৈতিকভাবে ‘ইন্টেরিম রিলিফ’ ডিএর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া, যার ফলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন আদতে কমে গেল!

তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে দেবাশীষবাবু আরও বলেন, বেতন কমিশন সাড়ে তিন বছরেও দিনের আলো দেখলো না! এই সরকার না গেলে কোনওদিন দেখবেও না! কেননা বেতন কমিশনের সদস্যরা কিছু জানেনই না, এদিকে বেতন কমিশনের মেয়াদ শুধু বৃদ্ধিই হয়ে যাচ্ছে! আর এই নিয়ে কেউ একটা প্রতিবাদ করলে তাঁদের ধরে বদলি করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কর্মচারীদের ন্যায্য পাওনা থেকে দিনের পর দিন বঞ্চিত করে যাচ্ছেন – আর মুখ বন্ধ করতে রাজ্যজুড়ে বদলি সন্ত্রাস চলছে। প্রাথমিক শিক্ষকরা তাঁদের ন্যায্য পিআরটি স্কেল পাচ্ছেন না – তার জন্য আন্দোলন করলে শিক্ষকদের ধরে জেলে পোরা হচ্ছে। রাজ্য জুড়ে যে কি পরিমান বিশৃঙ্খলা আর দমন-পীড়ন চলছে এইসব তার সামান্য নমুনা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

দেবাশীষবাবু আরও বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের কপালে ‘লবডঙ্কা’ ছাড়া কিছুই নেই তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। কর্মচারীরা ন্যায্য পাওনা চাইলে, কুমির ছানার মত মুখ্যমন্ত্রীর হাতে অজুহাত – টাকা নাই, টাকা নাই! অথচ খেলা, মেলা, কার্নিভ্যাল করতে টাকার ঠিক জোগাড় হয়ে যায়! পাড়ার ক্লাব থেকে দুর্গাপুজোর অনুদান সেখানেও ওনার টাকা আছে! এমনকি তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মত – একই ‘বিদ্বজনকে’ পাঁচ বার পাঁচ রকম পুরস্কার দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করার ব্যাপার আছে – শুধু টাকা নেই যাঁদের হাত ধরে রাজ্যটা চলছে, তাঁদের ন্যায্য পাওনাটা মিটিয়ে দেওয়ার।

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, আজ মালদাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারকে গত অর্থ কমিশন বাবদ আগের ইউপিএ সরকারের চেয়ে গত সাড়ে চার বছরে এনডিএ সরকার আড়াই গুন বেশি অর্থ বরাদ্দ করেছে। অথচ, রাজ্য সরকারি কর্মচারী বা শিক্ষকরা বকেয়া ডিএ বা কেন্দ্রীয়হারে বেতন কোনোটাই পান নি। পাশাপাশি অমিত শাহ বকেয়া ডিএ থেকে এখনো কেন সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করা গেল না – সেই প্রশ্ন তুলেছেন – আছে কি এর কোনো জবাব রাজ্য সরকারের কাছে? এরই পাশাপাশি, তিনি স্পষ্ট করেছেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সরকারি কর্মী ও শিক্ষকদের সমস্ত পাওনা-গন্ডা মিটিয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপুরাতেও আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম – ক্ষমতায় এলে সরকারি কর্মচারীদের সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং বাস্তবে তা করেও দেখিয়েছি।

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, আমরা সরকারী কর্মচারী পরিষদের পক্ষ থেকে মাননীয় অমিত শাহ মহাশয়কে এর জন্য আমাদের হার্দিক অভিনন্দন জানাই। কেননা আমাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায়, এই প্রথম কোনও সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের শীর্ষনেতাকে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের আর্থিক দুর্দশার প্রতিবাদে সোচ্চার হতে ও প্রকাশ্যে সহানুভূতি প্রকাশ করতে দেখলাম। সুতরাং, অমিত শাহের এই বক্তব্যের পর আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আজ থেকে বাংলার সমস্ত সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক ভোটের রঙ গেরুয়া হয়ে গেল। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনেই, রাজ্যের শাসকদলের সর্বোচ্চ নেত্রী পোষ্টাল ব্যালট এবং ইভিএম মেশিন খুলে স্পষ্ট দেখতে পাবেন সরকারি কর্মচারী, সরকারি অনুদান প্রাপ্ত কর্মচারী, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও তাঁদের পরিবার পরিজন এবং অন্যান্য ভুক্তভোগী কর্মচারীদের ভোট পদ্ম চিহ্ণেই নিশ্চিতভাবে পড়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!