এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিজেপি ঘনিষ্ঠতা সন্দেহে এবার টিকিট কাটতে চলেছে বহু দাপুটে তৃণমূল নেতার? তীব্র হচ্ছে জল্পনা

বিজেপি ঘনিষ্ঠতা সন্দেহে এবার টিকিট কাটতে চলেছে বহু দাপুটে তৃণমূল নেতার? তীব্র হচ্ছে জল্পনা

কথায় আছে, ঘরশত্রু বিভীষণদের আগেভাগেই চিনতে হয়। লোকসভায় ধাক্কা খাওয়ার পর এখন তৃণমূল কংগ্রেস সেই ঘরশত্রুরা যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে, তার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিল। বস্তুত, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ফল খারাপ হয়েছে। যার মূল কারণ দলীয় নেতৃত্ব থেকে কাউন্সিলরদের স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতি।

তবে লোকসভা নির্বাচনে অন্যান্য জেলার সাথে সাথে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একমাত্র লোকসভা কেন্দ্র বালুরঘাট দখল করে নেয় ভারতীয় জনতা পার্টি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিপ্লব মিত্রকে। দায়িত্ব দেওয়া হয় অর্পিতা ঘোষকে। এদিকে দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার পরেই দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন বিপ্লব মিত্র।

কিন্তু বিপ্লববাবু বিজেপিতে যোগ দিলেও গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকা তার ভাই প্রশান্ত মিত্র সহ একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে জল্পনা ছাড়িয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত প্রশান্ত মিত্র বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁকে গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে সরিয়ে তৃণমূলের তরফে নতুন চেয়ারম্যান করা হয় অমলেন্দু সরকারকে।

তবে প্রশান্তবাবু বিজেপিতে যোগ দিলেও, তার সঙ্গে তলায় তলায় তার অনুগত 4 জন কাউন্সিলর যোগাযোগ রাখছেন বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই সেদিক থেকে সেই সমস্ত কাউন্সিলরদের আর ভবিষ্যতে পৌরসভা নির্বাচনে টিকিট দিতে চাইছে না ঘাসফুল শিবির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্ত কাউন্সিলরদের টিকিট দিলে তারা যে ভবিষ্যতে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে না, এর কোনো গ্যারান্টি নেই।

আর তাই এখন থেকে আগামী গঙ্গারামপুর পৌরসভার নির্বাচনের আগে টিকিট দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে চাইছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বস্তুত, আগামী 2020 সালে গঙ্গারামপুর পৌরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। আর তাই তার আগে থেকে পুর নির্বাচনে টিকিট দেওয়া নিয়ে সজাগ তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের অমলেন্দু ভূষণ সরকার মুখ খোলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তিনি বলেন, “আগামী বছর আমাদের পৌরসভার মেয়াদ শেষ হবে। তাই গঙ্গারামপুর পৌরসভার নির্বাচন রয়েছে 2020 সালে। আমরা এককভাবে এখানে ক্ষমতায় এসেছিলাম। বর্তমানে 13 জন কাউন্সিলর আমাদের দলের সঙ্গে থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাকি 5 জন বিজেপি হয়ে গিয়েছে। তাই আমরা তাদের হিসেব ধরছি না।”

তাঁর কথায়, “তারা আমাদের টিকিটে এখন দল বিরোধী কাজকর্ম করছেন। তার মধ্যে তিনজন কাউন্সিলরের সদস্যপদ বাতিলের জন্য ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। বাকি দুইজন কাউন্সিলরও আমাদের নজড়ে রয়েছেন।” কিন্তু প্রশান্ত মিত্র ঘনিষ্ঠ তৃণমূলে থাকা কাউন্সিলররা অবশ্য বলছেন, তারা এখনও বিজেপিতে যাননি। তাই তাদের বিরুদ্ধে দলের এহেন মন্তব্য সত্যিই শোভা পায় না।

এদিন এই প্রসঙ্গে প্রশান্ত মিত্র ঘনিষ্ঠ 11 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুজাতা বিশ্বাস বলেন, “দল টিকিট দেবে কিনা, সেই ব্যাপারে আমি ভাবছি না। আমি তো এখনও দলবদল করিনি। তবে দল টিকিট দিলেও আমি আর দাঁড়াব না। আমরা পাঁচজন কাউন্সিলর এক সঙ্গেই রয়েছি। নির্বাচনের বিষয়েও কিছু ভাবছি না। একজন কাউন্সিলর হিসেবে মানুষের হয়ে কাজ করছি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন থেকেই গঙ্গারামপুর পৌরসভার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। কেননা বিপ্লব মিত্র তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় রাজনৈতিক পরিস্থিতির বদল ঘটতে শুরু করেছে। তাই সেদিক থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর, যারা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তাদের টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছে শাসকদল।

সেক্ষেত্রে নতুন মুখদেরই গঙ্গারামপুর পৌরসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে টিকিট দিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন গোটা পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তবে, লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে এই অঞ্চলে বিজেপির উত্থান হয়েছে, তাতে আগামীদিনে এখানে তৃণমূল-বিজেপি তীব্র টক্কর হতে বাধ্য বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা। এই পরিস্থিতিতে সন্দেহের বশে টিকিট না দেওয়া হলে, সেক্ষত্রে ফল হিতে-বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছেন শাসকদলেরই একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!