এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আগামী এপ্রিলেই কি রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের পিআরটি ‘অভিশাপ’ থেকে মুক্তি মিলতে চলেছে? আদালতের পদক্ষেপে বাড়ল জল্পনা

আগামী এপ্রিলেই কি রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের পিআরটি ‘অভিশাপ’ থেকে মুক্তি মিলতে চলেছে? আদালতের পদক্ষেপে বাড়ল জল্পনা

রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের কাছে পিআরটি স্কেল না পাওয়ার যন্ত্রনা যেন অভিশাপের মত। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনের ঝড় তুলেছে। এমনকি, পিআরটি আন্দোলন করতে গিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ‘অযোগ্য’ বিশেষণের পাশাপাশি সমাজ গোড়ার কারিগর শিক্ষকদের জেলে যেতে হয়েছে। এখানেই শেষ নয় – পিআরটি স্কেল না পাওয়ার যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে রাজ্যের শিক্ষকরা ছুটে গেছেন শিক্ষামন্ত্রী থেকে রাজ্যপালের দরজায় – কিন্তু, প্রতিশ্রুতি ছাড়া এখনও পর্যন্ত কিছুই জোটে নি কপালে!

কিন্তু, এর মাঝেই আজ আদালতের নির্দেশে কোথাও যেন আসার আলো দেখা গেল। এনসিটিইর নির্দেশিকা মেনে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা নিজেদের যোগ্যতা বাড়িয়ে নিয়েছেন আগেই। কিন্তু, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মত যোগ্যতা বাড়লেও রাজ্য সরকার সেই কেন্দ্রীয় হারে বেতন দিতে নারাজ ছিল। আর তাই, বিভিন্ন দপ্তরে আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি রাস্তায় নেমে আন্দোলনও করে পিন্টু পাড়ুইয়ের সভাপতিত্বে থাকা সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশন (WBPTTA)। কিন্তু তাতেও রাজ্য সরকারের ঘুম না ভাঙ্গায় অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হতে একপ্রকার বাধ্য হয় সংগঠনটি।

আজ কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সমাপ্তি চ্যাটার্জীর এজলাসে মামলাটির প্রথম শুনানি ছিল। আর, প্রথম শুনানিতেই WBPTTA-এর আইনজীবী একরামুল হক বারির সওয়াল শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি। রাজ্যের শিক্ষকরা নিজেদের যোগ্যতা বাড়াতে বাধ্য হলেও, কেন ও কোন যুক্তিতে রাজ্য সরকার তাঁদের প্রাপ্য পিআরটি স্কেল দিচ্ছে না – তার জবাব দাবি করেন রাজ্য সরকারি আইনজীবীর কাছে। আর বিচারপতির ওই রুদ্রমূর্তি সামনে কার্যত বাকরহিত হয়ে যান সরকারি আইনজীবী।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এরপরেই বিচারপতি রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট নির্দেশ দেন আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে, আর তার দু সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীদের পাল্টা হলফনামা জমা দিতে হবে। আর রাজ্য সরকার যদি সেই হলফনামা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে পারে, তাহলে বিনা হলফনামাতেই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে এবং সেই দিনই বিচারপতি এই মামলার একতরফা রায়দান করে দিতে পারেন বলে জানান। এই মামলার পরবর্তী শুনানি এপ্রিল মাসের কোনো একদিন হবে বলে জানা গেছে। ফলে, রাজ্যের শিক্ষক মহলে তীব্র জল্পনা ছড়িয়েছে – সেক্ষেত্রে হয়ত এপ্রিল মাসেই পিআরটি স্কেল না পাওয়ার যন্ত্রণার দিন শেষ হতে চলেছে।

স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের এই বঞ্চনা দিতে যিনি এই লড়াইকে আদালতে টেনে নিয়ে গেছেন সেই ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই কলকাতা হাইকোর্টের আজকের পদক্ষেপে অত্যন্ত খুশি। এই ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের ১ লক্ষ ৯৭ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকা এই যন্ত্রনায় ভুগছিলেন। ২০১০ সাল থেকে এই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা NCTE-এর নির্দেশ অনুযায়ী নিজেদের যোগ্যতা বৃদ্ধি করে উচ্চমাধ্যমিকে ৫০% নম্বরের পাশাপাশি বাধ্যতামূলক ভাবে DLEd ডিগ্রী সম্পূর্ণ করেছেন, কিন্তু যোগ্যতা বাড়লেও বেতন কাঠামোর পরিবর্তন হয়নি।

পিন্টুবাবু আরও বলেন, এই বিষয়ে আমরা মাননীয় রাজ্যপাল, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি, রাস্তায় নেমে আন্দোলন সংগ্রামও করেছি। কিন্তু, কথাবার্তা এগোলেও, এখনও তা কোথাও ফলপ্রসূ হয় নি – তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই আমরা মহামান্য হাইকোর্টের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হলাম। আর আজকে সমগ্র ঘটনা শুনে মহামান্য বিচারপতি যেভাবে বিস্মিত হয়েছেন ও রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেছেন – তাতে আমরা নিশ্চিত আমরা খুব শীঘ্রই এর সুবিচার পাব। ফলে, আজকের পরে বলতেই পারি – PTTI ব্রিজ কোর্সের মাধ্যমে বৈধ্যতা যেভাবে ছিনিয়ে এনেছিলাম, ঠিক সেই ভাবে সারা দেশের অন্যান্য রাজ্যের ন্যায় বাংলাতেও পিআরটি স্কেলের স্বীকৃতি ছিনিয়ে আনব এবং তা খুব শীঘ্রই।

পিন্টু পাড়ুইয়ের নেতৃত্বে পিআরটি স্কেল নিয়ে আন্দোলনরত ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!