প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে চরম হেনস্থা বঙ্গের শিক্ষকদের – একসঙ্গে জোড়া পদক্ষেপের পথে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য December 27, 2018 গতকাল রাতেই প্রকাশিত খবরে আমরা জানিয়েছিলাম, পশ্চিমবঙ্গে নবনিযুক্ত ও অবশিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য ন্যাশনাল ইন্সটিউট অফ ওপেন স্কুলিং-এর (এনআইওএস) যে প্রশিক্ষণের পরীক্ষা (ডিএলএড) হয়েছিল – সেই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে চরম হেনস্থার মুখে শুধুমাত্র বাংলার শিক্ষকরা। রাজ্যের শিক্ষকমহলের অভিযোগ – প্রথমকথা, কোনো পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের, কোনোমতেই পরীক্ষার্থীদের নয়। প্রশ্নপত্র ফাঁস কাণ্ডে মূল অভিযুক্তদের খোঁজে তদন্ত না চালিয়ে, হঠাৎ পরীক্ষা বাতিলের মত সিদ্ধান্ত কেন? দ্বিতীয়ত, পরীক্ষা যেহেতু সর্বভারতীয়, সেক্ষত্রে বিশেষ একটি রাজ্যের ক্ষেত্রে (পড়ুন শুধুমাত্র বাংলা) কেন পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে? শিক্ষকমহলের অভিযোগ, আজকের হোয়াটস্যাপ বা ফেসবুকের যুগে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে খবর যেতে সময় লাগে কয়েক মুহূর্ত। সেক্ষত্রে, ভারতবর্ষের বিভিন্ন কোনায় সেই ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন ছড়িয়ে যায় নি তার নিশ্চয়তা কোথায়? তাহলে পরীক্ষা বাতিল হলে – তা সারা ভারতের ক্ষেত্রে হোক, শুধুমাত্র বাংলার শিক্ষকদের এইভাবে অপমান বা বঞ্চনা কেন করা হচ্ছে। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদী শিক্ষক মইদুল ইসলামের নেতৃত্ত্বে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত একসঙ্গে জোড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে। প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে সংগঠনের তরফ থেকে আগামীকাল ২৮ শে ডিসেম্বর, দুপুর ১ টার সময় এনআইওএস-এর কলকাতার রিজিওনাল অফিসের সামনে পরীক্ষা বাতিলের ‘অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত রুখে দিতে’ ধর্ণা কর্মসূচি ও ডেপুটেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তার থেকেও বড় কথা, সংগঠনের তরফ থেকে দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসাবে শীতকালীন ছুটির পর কলকাতা হাইকোর্ট খুললেই আগামী ৩ রা জানুয়ারী সেখানে এই নিয়ে মামলা করতে চলেছে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। আর যে মামলা লড়বেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএর সাংবিধানিক অধিকার এনে দেওয়া ও রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য ঐতিহাসিক ডিও-বিএলও মামলার রায় এনে দেওয়া আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। এই প্রসঙ্গে মইদুলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা আগেই জানিয়েছিলাম, এই প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় শুধুমাত্র বাংলার শিক্ষকদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে তা অন্যায়। এটা বাংলার শিক্ষক সমাজের কাছে চরম অপমানকর। আমার কাছে পঞ্চাশোর্ধ বহু শিক্ষকের ফোন এসেছে – যাঁদের বক্তব্য, এইভাবে তো তাঁদের একপ্রকার হেনাস্থায় করা হচ্ছে। আর তাই, আগে দেওয়া কথা মত, এই ব্যাপারে রাস্তায় নেমে আন্দোলন ও আইনি ব্যবস্থা নিতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। অন্যদিকে, ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য, এনআইওএস-এর ৫০৬ ও ৫০৭ বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে – এটি সর্বভারতীয় পরীক্ষা হলেও, শুধুমাত্র বাংলার শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতীতে, ২০১৩-১৪ সালে দিল্লি থেকে সিজিএল-এর প্রশ্নপত্র ফাঁসে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পুরো পরীক্ষা বাতিল করা হয় এবং তা সমগ্ৰ দেশের ক্ষেত্রে বলবৎ করা হয়। তাই, এই নিয়ে বাংলার শিক্ষকদের স্বার্থে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, বাংলার শিক্ষকরা আদালতের সুবিচার পাবেন। আপনার মতামত জানান -