মমতার নির্দেশই শিরোধার্য! ভোটের পর ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফেরাতে আসরে তৃণমূল নেতারা তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য May 10, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপি নেতা কর্মীদের উপর হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এমনকি হিংসার ঘটনা বাড়তে শুরু করায় কার্যত চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল গোটা রাজ্যজুড়ে। আর এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই হিংসার ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলে দলমত নির্বিশেষে সকলকে বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিভিন্ন জায়গায় যখন বিজেপি বনাম তৃণমূলের লড়াই কার্যত হিংসার পরিবেশ সৃষ্টি করছে, ঠিক তখনই উল্টো ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানে। যেখানে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করল তৃণমূল কংগ্রেস। যে ঘটনাকে স্বাগত জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। নির্বাচনের সময় লড়াই হলেও, কেন নির্বাচনের পরবর্তী সময় কালে হিংসা বাড়তে থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল গোটা রাজ্যজুড়ে। আর এই পরিস্থিতিতে হিংসার ঘটনা বন্ধ করে যেভাবে শাসক দলের নেতারা ঘরছাড়া বিরোধী কর্মীদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করলেন, তাতে আশ্বস্ত হতে শুরু করেছে এলাকার মানুষ। জানা গেছে, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত রায়ান গ্রামের বিজেপি কর্মীদের একাংশ ঘরছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবার সেই ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি শেখ জামাল। যেখানে বিরোধী কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে ঘরছাড়াদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন তিনি। আর তৃণমূল নেতার এই আশ্বাস পেয়ে এখন রীতিমত নিজেদের বাড়িতে ফিরে আসতে শুরু করেছেন বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক লড়াইয়ের পর এখন এই ধরনের সৌজন্যতা যে বঙ্গ রাজনীতিতে কার্যত নজির গড়ল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একাংশ বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে হিংসা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তৃতীয়বার তৃণমূল সরকার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরেও যদি এইভাবে শাসক দলের নেতাকর্মীদের ভয়ের কারণে বিরোধীরা ঘরছাড়া হতে শুরু করে, তাহলে পরবর্তী যে কোনো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে। তাই তার কথা মাথায় রেখেই সৌজন্যের আবহ তৈরি করে বিরোধী ঘরছাড়া নেতাদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করলেন এই তৃণমূল নেতা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে ঘরে ফিরে আসা বিজেপি কর্মী সামশের আলি বলেন, “ভয়ে ঘর ছেড়েছিলাম. জামাল ভাই যেভাবে বাড়ি ফিরতে বলেছে, তাতে আশ্বস্ত হয়ে ফিরলাম। এবার আমরা তৃণমূলের সঙ্গে চলার কথা ভাবছি।” এদিকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়ি ফিরিয়ে কার্যত খুশি তৃণমূল নেতা শেখ জামাল। এদিন তিনি বলেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিংসার বিরুদ্ধে। ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্তও সবাইকে নিয়ে চলতে বলেছেন।” এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিংসা থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে নির্দেশ দেওয়ার কারণেই দলের নেতা কর্মীরা ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের ঘরে ফিরিয়েছেন বলে দাবি করছেন বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কোথাও অশান্তি করা যাবে না। তাই যারা ভোটে হেরে নিজে থেকেই বাড়িছাড়া হয়েছেন, তাদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আমরা অশান্তি চাই না।” এদিকে যদি তাদের নেতা-কর্মীদের এইভাবে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে গোটা ঘটনাকে স্বাগত জানানো হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল রায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনে লড়াইয়ের সময় তা যতই কঠিন হোক না কেন, ফলাফল প্রকাশের পর তা সকলের মেনে নেওয়া উচিত। কিন্তু তার পরিবর্তে যদি হিংসার ঘটনা ঘটে এবং প্রতিপক্ষ শিবিরের নেতা-কর্মীরা বাড়িছাড়া হন, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এক্ষেত্রে যারা জয়লাভ করে আসেন, তাদের নমনীয় হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। আর ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ফিরিয়ে সেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করে কার্যত নজির গড়লেন বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের রায়না গ্রামের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি শেখ জামাল। যে ঘটনাকে স্বাগত জানাচ্ছেন দলমত নির্বিশেষে সকলেই। আপনার মতামত জানান -