এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > ঝাড়গ্রাম কি ক্রমশ শাসকের হাতের বাইরে? থালা হাতে অভিনব প্রতিবাদে আক্রান্তদের পরিবার

ঝাড়গ্রাম কি ক্রমশ শাসকের হাতের বাইরে? থালা হাতে অভিনব প্রতিবাদে আক্রান্তদের পরিবার


ফের ঝাড়গ্রামে শাসকবিরোধী হওয়া উত্তাল হল মাওবাদী হানায় নিহত এবং নিখোঁজদের পরিবারকে চাকরি দেওয়ার দাবীতে। এদিন ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড়ে এবং জেলাশাসকের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হলেন মাওবাদী হানায় মৃত এবং নিহতদের পরিবার। যারা বন্দুক বাগিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করল তাদের রাজ্যসরকার চাকরি দিল স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে।

অথচ বঞ্চিত হল মাওবাদী হানায় আক্রান্তদের পরিবার। এই যুক্তিকে সামনে রেখে মাওবাদী হানায় মৃত এবং নিহতদের পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি এবং নিখোঁজ ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণার দাবী জানাল তাঁরা। এদিন প্ল্যাকার্ড,ফ্লেক্স এবং ফেস্টুন সহ খালি থালা হাতে নিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরে মিছিল করেন তাঁরা। তারপর প্রায় ২০ মিনিট ধরে পথ অবরোধ করেন পাঁচমাথা মোড়ে। খালি থালা হাতে মহিলারা সেখানে বসে পড়ে বিক্ষোভ জানান।

মৃত এবং নিখোঁজদের সম্মানে একটি স্মরণসভাও হয় ওখানে। তারপর তাঁরা সোজা রওনা হন জেলাশাসকের অফিসের দিকে। ভেঙে দেন পুলিশের ব্যারিকেডও। দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার সময় বিক্ষুব্ধ মহিলাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হল পুলিশের। সব বাধা উপেক্ষা করে জড়ো হন জেলাশাসকের অফিসের সামনে। মিছিলে নিহত এবং নিখোঁজ পরিবারের কয়েকশো সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা। তাঁরা সবাই সাদা শাড়ি পড়ে মিছিলে হাঁটেন। শহরের গুরুত্বপূর্ন এলাকা অবরোধের জেরে কর্মব্যস্ত দিনটিতে যানজটের সম্মুখীন হন নিত্যযাত্রীর।

প্রসঙ্গত,এই ইস্যুতে আগেও বহুবার একইভাবে আন্দোলনে পথে নেমেছে মাওবাদী হানায় মৃত এবং নিহতদের পরিবার। শহিদ এবং নিখোঁজ পরিবারের যৌথমঞ্চও তৈরি হয়েছে তাঁদের উদ্যোগে। পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে,৪১৫ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন মাওবাদী হানায়। আহত প্রায় ১০০ জন এবং নিখোঁজদের সংখ্যা ৭৮। জঙ্গলমহলকে মাওবাদমুক্ত করার লক্ষ্যে প্রচুর মাওবাদীদের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে চাকরি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের শাস্তির মেয়াদও কমিয়েছেন এই অভিপ্রায়ে। তারা অনেকেই এখন সমাজে মাথা উঁচু করে জীবনযাপন করছেন।

পাশাপাশি মাওবাদী আক্রান্ত পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর। কিন্তু এতোদিন মাত্র কয়েকটা পরিবারেই চাকরি দিয়েছে রাজ্যসরকার আর বাকি সব বঞ্চিত। এই বঞ্চিতরাই বারবার নিজেদের দাবীদাওয়া গুলো মেটাতে রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়। গত জুন মাসেই মিছিল করে মঞ্চ থেকে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সে ব্যাপারে এখনো কোনো সাড়া না মেলায় ফের আন্দোলনে পথে নামলেন মাওবাদী হানায় মৃত এবং নিহতদের কয়েকশো পরিবার।

মাওবাদী হানায় মৃতদের পরিবারকে চাকরি দেওয়া হবে,এমন প্রতিশ্রুতি ২০১২ সালে বেলপাহাড়িতে একটা সভায় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে প্রতিশ্রুতি আজও পূরণ হল না। এমনটাই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অভিযোগে জানালেন মাওবাদী হানায় মৃত এবং নিহতদের পরিবারের যৌথমঞ্চের সম্পাদক শুভঙ্কর মন্ডল। চাকরি না পেলে হিংসার পথে নেমে দাবী আদায় করার হুঁসিয়ারী দিলেন তিনি। এবং মাসখানেকের মধ্যে এ ব্যাপারে সুরাহা না পেলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামার চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিলেন রাজ্যসরকারের উদ্দেশ্য।

তবে এবার ইস্যুটি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার বার্তা দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রাণী। তাঁদের কাছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য না থাকায় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। নিখোঁজদের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

উল্লেখ্য,জঙ্গলমহল তৃণমূলের শক্তিকেন্দ্র। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই এলাকা থেকে তৃণমূলের ফল অপেক্ষাকৃত খারাপ হলেও লোকসভা ভোটে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে মরিয়া শাসকদল। এরকম পরিস্থিতিতে মাওবাদী হানায় মৃত এবং নিহতদের পরিবারের দাবীদাওয়া মেনে নিতে ইতিবাচক ভূমিকা নিতে হয়তো দেখা যাবে শাসকদলকে। নয়তো পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো লোকসভাতেও শাসকদলের শক্তিশিবিরে পদ্ম ফোটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!