এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > একেই ৫ মাস ধরে ভাতা বন্ধ, অবশেষে প্রকল্পই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আঁধার দেখছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এই কর্মীরা

একেই ৫ মাস ধরে ভাতা বন্ধ, অবশেষে প্রকল্পই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আঁধার দেখছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এই কর্মীরা

দীর্ঘ ৫ মাস ধরে ভাতা বন্ধের জেরে একেই নাকানিচোবানি অবস্থা,তারপর এদিন প্রকল্প বন্ধের ঘোষণায় চোখে সরষে ফুল দেখছে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কর্মীরা। বহুদিন ধরে ভাতা না পাওয়ায় আর্থিক অনটনে দিন কাটছে জলবিভাজিকা প্রকল্পে কর্মরতদের। সম্প্রতি বকেয়া ভাতা মেটানো সহ একগুচ্ছ দাবীতে রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে সরবও হয়েছেন এই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্মীরা।

সেই দাবী মেটানো তো দূরের কথা,প্রকল্পটাই বন্ধ হয়ে যাবে,এমনটাই ফতোয়া জারি করে দিল প্রশাসন। এই খবর শোনার পর চূড়ান্ত হতাশ প্রকল্পের কর্মরতরা। তবে জানা গিয়েছে প্রকল্পের সিইও-র বাঁকুড়ায় সভা করতে আসার কথা রয়েছে। বৈঠক চলাকালীন তাঁদের প্রস্তাবিত দাবীদাওয়াগুলো অবিলম্বে মেটানোর জন্যে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে ওই ভুক্তোভোগী কর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ম্যানেজার তথা বাঁকুড়ার উপ কৃষি অধিকর্তা (মৃত্তিকা ও জলসংরক্ষণ) দেবদাস মুখোপাধ্যায় জানান,২০১৯ এর মার্চ মাসে এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই বিষয়টি প্রকল্পের রাজ্য মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক (সিইও) চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। প্রকল্পের কর্মীদের ৫ মাসের ভাতা বাকির ব্যাপারটিও স্বীকার করে নেন তিনি। তবে টাকার অভাবেই কর্মীদের ভাতা দেওয়া সম্ভব হয়নি এমনটাই জানান তিনি।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৩ সালের মার্চে সুসংহত জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপন প্রকল্পের চালু করে রাজ্য জুড়ে প্রায় ৪০০ জন কর্মীকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। এঁদের মধ্যে থেকেই বাঁকুড়ায় কাজ পান ৫৩ জন। এছাড়া কৃষি,বন,উদ্যানপালন,মৎস্য প্রভৃতি দপ্তরের আওতায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, বাণিজ্য শাখায় স্নাতক, সমাজকর্ম বিভাগের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা অস্থায়ীভাবে ওই প্রকল্পের আওতায় নিযুক্ত হন।

প্রকল্পের আওতায় বাঁকুড়ায় প্রায় ১৮কোটি ৮২লক্ষ টাকায় সাড়ে ৬০০পুকুর খনন ও সংস্কার হয়। ২কোটি ১০লক্ষ টাকায় ২০হাজার চাষিকে সার, বীজ সহ অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করা হয়। চাষের জন্য ৬হাজার ৭০০জন চাষিকে ১কোটি ৩৫লক্ষ ৫৫হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। বিগত পাঁচ বছর ধরে ওইসব কাজ করে গিয়েছেন কর্মীরা।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আওতাভুক্ত ওয়াটারশেড ডেভেলপমেন্ট এমপ্লয়ি অ্যাসোসিয়েশনের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক ঝন্টু হাজরা এ প্রসঙ্গে বলেন,প্রকল্পের আওতাধীন কাজের শুরুতে ভাতা সহ মাসে মোট ১১ হাজার ২০০ টাকা পেতেন তাঁরা। এই টাকাই বছরখানেক আগে বেড়ে হল প্রায় ১৫ হাজার ৯০০ টাকা। সরকারি কর্মীদের মতোই পুজোর বোনাস সহ একাধিক সুবিধা পেতেন তাঁরা। কিন্তু হঠাৎ করেই কোনো নোটিশ ছাড়াই ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আর্থিক ভোগান্তির শিকার তাঁরা বিগত পাঁচ মাস ধরে। তার উপর চিন্তা বাড়িয়ে রাজ্যসরকার প্রকল্প বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল। এতে চরম সমস্যায় পড়লেন কর্মীরা। এই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অনেকেরই চাকরি পাওয়ার বয়সসীমা পেরিয়ে গিয়েছে। প্রকল্পের কাজ করার ফলে অন্যান্য রোজগারের উৎসও তৈরি হয়নি। ফলত প্রকল্প উঠে গেলে তাঁদের কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সমস্যা থেকে বেরোতে প্রকল্পের সিইও-র বৈঠক চলাকালীন কৃষিভবনে অবস্থান বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত তাঁদের।

সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অভিজিৎ সিংহেরও বক্তব্য একই। জানালেন,বাঁকুড়ার পাশাপাশি রাজ্যের বাকি জেলাতেও ৫ মাস ধরে ভাতা বকেয়া পড়ে রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্মীদের। ফলত সংসার চালাতেই নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে তাঁদের। সমস্যাটি নিয়ে জেলায় জেলায় বারবার ডেপুটেশান দেওয়া হলেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। তার উপর এই প্রকল্পের বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

এই প্রেক্ষিতে কর্মীদের কর্মসংস্থানের উপায় কী হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছে কর্মীরা। বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্যসরকারের যৌথ উদ্যোগে কৃষি ও সেচ সম্পর্কিত একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। সেইসব প্রকল্পে ভুক্তোভোগী কর্মীদের নিয়োগ করার আর্জি জানানো হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই নিয়োগের দাবী তুলে রাজ্যস্তরের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জলবিভাজিকা প্রকল্পের কর্মীদের পক্ষ থেকে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

উল্লেখ্য,লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে এই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্মীদের বিক্ষোভ জেরদার হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ভোটব্যাঙ্কের খাতিরে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের দাবী মেনে নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ নির্বাচনের মাসকয়েক আগে রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলার কোনো সুযোগ তৈরি করতে চাননা নেত্রী,এমনটাই মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!