বেআইনি বালিপাচার রুখতে অতিশয় তৎপর প্রশাসন – ভেঙেই দেওয়া হল ১১ টি মেশিন, নেতৃত্ত্বে খোদ ডিএম মেদিনীপুর রাজ্য December 15, 2018 মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর বেআইনিভাবে বালি তোলা বন্ধ করতে আরও তৎপর হল প্রশাসন। এবার মেদিনীপুর সদর ব্লকের বেআইনিভাবে মেশিন বসিয়ে বালি তোলা বন্ধ করতে অভিযানে নামলেন স্বয়ং জেলাশাসক। কিছুদিন আগে খালি পায়ে নদী পার ঘুরে ঘুরে জেলাশাসক নিজে এই বেআইনী কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন।জেলাশাসকের নেতৃত্বে সেদিন বিকেল পর্যন্ত মোট ১১ টি মেশিন বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং পরে সেগুলি জেসিবি এনে ভেঙ্গে দেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলাশাসক যে ঘাটগুলি পরিদর্শন করেছেন সবগুলিই বৈধ। তবে ওই মেশিন ব্যবহার করে বালি তোলার কোন নির্দেশ ছিল না। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে, যারা এই ঘাট গলি থেকে বালি তোলার টেন্ডার পেয়েছিল তাদের শোকজ করা হয়েছে। নিয়ম না মেনে কেন এভাবে বালি তোলা হচ্ছিল তার সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বেআইনি ভাবে এই বালি তোলার প্রসঙ্গে জেলা শাসক পি মোহন গান্ধী সংবাদামধ্যকে জানান, এভাবে বালি তোলা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা যাবে না। ইতিমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। প্রয়োজনে বরাত পাওয়া সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিন বালি তোলার কাজে ব্যবহৃত সমস্ত মেশিন ভাঙ্গা হয়েছে।” উল্লেখ্য, মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী অবৈধভাবে বালি পাচার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই এ বিষয়ে আরো তৎপর হয়ে ওঠে জেলা প্রশাসন। এদিন আচমকাই জেলাশাসক ভূমি দপ্তর এর কর্তা ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় জামসল এবং লোহাটিকরি এলাকায় কংসাবতী নদী পাড়ে পরিদর্শনে যান। সেখানে বালি তোলার পদ্ধতি দেখে তিনি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং সমস্ত মেশিন বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। এর আগেই মেদিনীপুর সদর ব্লকের কংসাবতী নদীর পাড়ে বেআইনিভাবে সার্কিং এবং নেটিং মেশিন দিয়ে বালি তোলার সময় প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে কিন্তু তারপরেও শিক্ষা হয়নি বালি ব্যবসায়ীদের – ক্রমাগত চলে যাচ্ছে অবৈধভাবে বালি তোলা। উল্লেখ্য, বালি খাদানের বরাত নেওয়ার সময় সংস্থাকে কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা থাকে এই ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করার কথা। স্থানীয় এলাকাবাসীদের অভিযোগ প্রশাসনের একাংশের মদতেই, এতদিন এই সব চলত। যদিও বালি খাদান থেকে বালি পাচার রোধ করার কাজ এই প্রথম নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর) সুরেন্দ্র মিনা গোটা সদর ব্লক জুড়ে অবৈধভাবে বালি পাচার রুখতে অভিযানে নামেন। সে অভিযানে এক রাতে ২২ টিরও বেশি মেশিন ভাঙ্গা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও অবস্থার কোন বদল হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক কর্তার মত অনুযায়ী, এ কাজ ম্যানুয়েলি হওয়ার কথা। কিন্তু এই মেশিন ভূগর্ভে অনেক নিচ থেকে বালি তোলে। যার ফলে যে কোন মুহূর্তে ধ্বস নামতে পারে বা নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হতে পারে। গ্রীন ট্রাইবুনাল এই মেশিন বসানোর উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অন্য এক কর্তার মতে, প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেওয়ার পর সকলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, এ জেলায় মূলত কংসাবতী ও শিলাবতী নদীর তীর থেকে বালি তোলা হয়। বিশেষত মেদিনীপুর সদর ব্লক, গরবেতা, চন্দ্রকোনা, খড়গপুর ১ নম্বর – এইসব ব্লকের নদী ঘাট থেকেই বালি তোলা হয়। বেশিরভাগ বালি খাদানেরই আইনসিদ্ধ দরপত্র থাকলেও যে যন্ত্রগুলি বসিয়ে বালি তোলা হয় সেগুলি আইনসিদ্ধ নয়। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের মতামত, প্রশাসনের অনেক আগেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত ছিল। তাঁদের মতে, এভাবে বছরের পর বছর ধরে বালি তোলায় এলাকায় ভাঙ্গনে সমস্যা প্রকট হয়েছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার পর সকলের টনক নড়েছে। দাঁতন ১ নম্বর ব্লকেও এদিন একটি সার্কিং মেশিন ভাঙ্গা হয়। যদিও বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী বলে যাওয়ার পরে কিছুদিন এরকম সক্রিয়তা দেখা যাবে তারপর আবার যে কে সেই। এখন দেখার প্রশাসনের এই সক্রিয়তা কত দিন বজায় থাকে। আপনার মতামত জানান -