এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > খোদ কলকাতার বুকে হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়ক- কাউন্সিলরের দ্বন্দ্বে ঘুম উড়েছে পুলিশের!

খোদ কলকাতার বুকে হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়ক- কাউন্সিলরের দ্বন্দ্বে ঘুম উড়েছে পুলিশের!

লোকসভা ভোটে পর্যদুস্ত হওয়ার পর তৃণমূল নেতৃত্ব প্রশান্ত কিশোরকে এনে দলের ভাবমূর্তি ফেরাতে সচেষ্ট হয়েছিল। যেখানে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের রণনীতিকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই “দিদিকে বলো” কর্মসূচি চালু করে সাধারণ মানুষের কাছে তৃণমূল নেতৃত্বকে পাঠিয়ে দিতে সক্ষম হন। বর্তমানে “দিদিকে বলো” কর্মসূচির ওপর ভিত্তি করে সারা রাজ্যজুড়ে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ সাধনে ব্রতী হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের নেতৃত্বরা।

তবে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল যে “দিদিকে বলো” কর্মসূচিকেও বিপাকে ফেলবে, তা আঁচ করতে পারেননি স্বয়ং প্রশান্ত কিশোরের টিম। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে এবার দলের হেভিওয়েট বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পান্ডের অনুগামীরা দিদিকে বলোর পোশাক পড়ে থানার সামনে স্থানীয় কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেন। যাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে মানিকতলা এলাকায়।

বস্তুত, তৃণমূলের সাধন পান্ডের সঙ্গে কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর বিবাদ নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুই নেতার গোষ্ঠীরা একে অপরের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আসছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে, বিধায়ক বনাম কাউন্সিলরের দ্বন্দ্বে তৃণমূলের কার্যালয় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল। আর এবার কাউন্সিলেরর অমলবাবুর বিরুদ্ধে “দিদিকে বলো” কর্মসূচিতে তারা অনেক অভিযোগ পেয়েছেন দাবি সাধন পান্ডের অনুগামীদের।

এমনকি সেই দাবিতে মানিকতলা থানায় এবার কাউন্সিলরেরই বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেল তাঁদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “দিদিকে বলো” কর্মসূচি এমন একটা কর্মসূচি, যার মাধ্যমে প্রশান্ত কিশোর চেষ্টা করেছিলেন, তৃণমূলের যদি কোনো কেউ দায়ী থাকে, তাহলে সাধারন মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকেও দল সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু যেভাবে এই ঘটনাটিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রূপ দিলেন তৃণমূল কর্মীরা, তাতে বিধায়ক বনাম কাউন্সিলারের কোন্দল আরও বেড়ে উঠল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুধু তাই নয়, দিদিকে বলোর মতো কর্মসূচিও তৃণমূল কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ডুবে গেল। যার ফলে জনসংযোগ সাধন করা তো দূর অস্ত, উল্টে তৃণমূল নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এনে বিরোধীদের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল বলে মনে করছে একাংশ। কিন্তু কেন এভাবে দলের কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভ করলেন! এদিন এই প্রসঙ্গে বিক্ষোভকারীরা বলেন, “আমরা এতদিন পর বাধ্য হয়েছে থানার সামনে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে।”

তাঁদের আরও বক্তব্য, “মানুষ আমাদের কাছে প্রশ্ন তুলেছে, কেন কাউন্সিলের বেআইনি কাজ করছেন! কেন পুলিশের সাহায্য নিয়ে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে! এর উত্তর তো আমাদেরই দিতে হবে। তাই শুধু কাউন্সিলর নয়, পুলিশের বিরুদ্ধেও আমাদের বিক্ষোভ।” তবে এই ঘটনার পেছনে বিধায়ক সাধন পান্ডে দায়ী বলে দাবি করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী। এদিন তিনি বলেন, “এই বক্তব্য এলাকার মানুষের নয়। বিধায়ক সাধন পান্ডে পুরভোটের আগে আমার বদনাম করতে উঠে পড়ে লেগেছেন।”

তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “বেআইনি নির্মাণ এলাকার বিধায়কই করে চলেছেন। কোনো কাউন্সিলর ওই বিধায়কের সঙ্গে নেই।” তবে অমলবাবু এই ব্যাপারে সাধন পান্ডেকে দায়ী করলেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন সাধনবাবু। এদিন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি এই ব্যাপারে কি বলব! এই বিক্ষোভ মানুষ দেখিয়েছেন। তৃণমূলের কর্মীরা দেখিয়েছেন। এরমধ্যে আমি কোথায়! কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বিক্ষোভ তো হবেই।”

আর দিদিকে বলোর পোশাক পড়ে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিধায়ক তথা মন্ত্রীর অনুগামীরা থানায় সামনে এইভাবে বিক্ষোভ দেখানোকে খুব একটা ভালো চোখে নিচ্ছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। পৌরসভা নির্বাচনের আগে এইভাবে কলকাতা শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলতে থাকলে, ধীরে ধীরে দল যে আরও বিপাকে পড়বে, সেই ব্যাপারে আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে।

এখন গোটা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তৃণমূল কাউন্সিলর বনাম বিধায়কের এই দ্বন্দ্ব মেটানোর জন্য দল কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে! সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনেই রাজ্যজুড়ে নিজেদের উত্থান প্রমান করার পর – এবার গেরুয়া শিবিরের লক্ষ্য কলকাতা পুরসভার দখল নেওয়া। সেই আবহে তৃণমূলের এই ধরনের গোষ্ঠীকোন্দল যে দলকে আরও বিড়ম্বনায় ফেলবে – কার্যত সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!