মানবাধিকার কমিশনের পাল্টা হিংসার তথ্য নিতে মমতার প্রতিনিধি দল গঠন, অভিযোগের তীরে বিদ্ধ বিজেপি! তৃণমূল বিজেপি মেদিনীপুর রাজনীতি রাজ্য July 5, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ভোটের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, রাজ্যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে বিজেপি কর্মীরা ঘরছাড়া থেকে শুরু করে তাদের উপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। যা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে রাজ্যের শাসক শিবিরকে। পরিস্থিতি এতটাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে যে, হাইকোর্টের পক্ষ থেকেও এই ব্যাপারে কড়া কথা শুনতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে ক্যাম্প গঠন করে হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অভাব-অভিযোগ শোনা হয়েছে। যার ফলে যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। তবে ভোটের ফলাফল পরবর্তী সময়ে হিংসার ঘটনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেও, এবার কার্যত ভিন্ন চিত্র দেখা গেল বাংলায়। যেখানে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ওপর এই হামলার অভিযোগ উঠল ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের রাজনৈতিক সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রতিনিধি দল গঠন করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তৃণমূলের এই প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে এলাকা পরিদর্শন করে এতদিন বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হিংসা ঘটনার অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সেই একই অভিযোগ তুলতে দেখা গেল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উলটপুরানের ছবি যেমন সামনে এসেছে, ঠিক তেমনই ভারতীয় জনতা পার্টি যথেষ্ট চাপের মুখে পড়ে গেল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ভগবানপুর 2 নম্বর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের খবর সামনে এসেছিল। সেই মতো করে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সেই এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিজেপির পক্ষ থেকে যেমন হিংসার ঘটনার অভিযোগ করার পর মানবাধিকার কমিশন সেই আক্রান্তদের কথা শুনেছে, ঠিক তেমনই পাল্টা তার দলের কর্মী, সমর্থকরা আক্রান্ত হতেই বিজেপির ওপর চাপ বাড়িয়ে প্রতিনিধি দল গঠন করে আক্রান্তদের কথা শোনার চেষ্টার কৌশল গ্রহণ করল তৃণমূল কংগ্রেস। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এলাকা পরিদর্শন করে বেশ কিছু অভিযোগ উঠে আসে তৃণমূলের সেই প্রতিনিধি দলের কাছে। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল নেতা তরুণ জানা বলেন, “বিধানসভা ভোটে গোটা এলাকায় বিজেপি একতরফা ছাপ্পা ভোট করিয়েছে। তৃণমূল সমর্থকদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তারপরেও নিয়মিত দোকানির কাছ থেকে জরিমানা আদায়, বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা।” এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মত আক্রান্তদের কাছ থেকে সব তথ্য নেওয়ার পর তা নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য তৃণমূলের শশাঙ্ক জানা। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ করা হলেও, তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের পক্ষ থেকেই ভোটের পরে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। এদিন এই প্রসঙ্গে ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, “বিধানসভার অধিবেশন শুরু হওয়ায় আমি এলাকার বাইরে রয়েছি। সেই সুযোগে তৃণমূল বহিরাগতদের নিয়ে এলাকার দখল করতে চাইছে। আমাদের কর্মীরা ঘরছাড়া। পুলিশকে জানিয়েও লাভের লাভ কিছু হয়নি। আমরা আদালতে যাচ্ছি।” পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী দল, রাজ্যপাল, হাইকোর্ট এবং মানবাধিকার কমিশনের একের পর এক মন্তব্যে রাজ্যের নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে শাসক দল। বাংলার ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর হিংসার ঘটনা এখন সারাদেশে বিজেপির কাছে অন্যতম ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রতিনিধি দলের তৈরি করা রিপোর্ট আদতে বিজেপির ওপরেই চাপের কৌশল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের তৈরি করা এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে শাসক দলের পক্ষ থেকে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -