সিএবি নয়! ভাটপাড়া ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে তৃণমূল- বিজেপির দখলদারি নিয়ে! বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা কলকাতা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য December 16, 2019 কিছুদিন আগে পর্যন্ত রাজ্যের যে কোনো প্রান্তে কোনো অশান্তি ঘটনার খবর পেলে তাকে শাসক-বিরোধী গন্ডগোল বলেই আখ্যা দিতে রাজনৈতিক মহল। এমনকি খোঁজখবর নিয়ে রাজনৈতিক মহলের সেই আখ্যাতেই সীলমোহর পড়ত। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শাসক-বিরোধী গন্ডগোল তো দূর অস্ত, উল্টে সেই গন্ডগোল বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভে এখন জ্বলতে শুরু করেছে গোটা বাংলা। তবে সারা বাংলার চেহারাটা এক হলেও, এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রমী উত্তর 24 পরগনার ভাটপাড়া এলাকা। এখানে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে হিংসার ঘটনা অপেক্ষা, ভাটপাড়ার ক্ষমতা কার দখলে থাকবে! তা নিয়েই শাসক-বিরোধী তরজা চরমে উঠেছে। বস্তুত, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়ে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েছিলেন অর্জুন সিংহ। আর তারপর জয়লাভ করে এখানে বিজেপির আধিপত্য বাড়াতে শুরু করেন তিনি। তবে সাংসদ হয়ে অর্জুন সিংহ তৃণমূলের দখলে থাকা একাধিক পৌরসভা বিজেপির দখলে নিয়ে আসলেও, যতদিন এগিয়েছে, ততই সেই কাউন্সিলররা তৃণমূলে ফিরে আসতে শুরু করেছেন। বর্তমানে ভাটপাড়া পৌরসভা দখলের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই পরিস্থিতিতে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল সেই ভাটপাড়া এলাকা। জানা গেছে, গত শনিবার রাতে ভাটপাড়ার জগদ্দলের আর্য সমাজ মোড় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ বাড়ি ফেরার সময় তৃণমূল কর্মীরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। বোমাও ফাটানো হয়। আর সেই সময় দৌড়াতে গিয়ে তৃণমূল কর্মী গণেশ সিং রাস্তায় পড়ে গেলে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ তার চোখেমুখে জল দেন। নিজের গাড়ি করে নিয়ে গিয়ে সেই তৃনমূল কর্মীকে তিনি হাসপাতালেও ভর্তি করেন। এদিকে দলীয় কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে রাতেই সেই হাসপাতালে জমায়েত হতে দেখা যায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের। এদিন এই ব্যাপারে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “গণেশ কেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, তার কৈফিয়ত চেয়ে অর্জুন তাকে মেরেছে। বন্দুকের বাট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তিনি এখন আরজিকর হাসপাতালে জীবন যুদ্ধে লড়ছেন।” একইভাবে এই ব্যাপারে তৃণমূল নেতা সোমনাথ শ্যাম বলেন, “আমাদের কাউন্সিলরদের মধ্যে অর্জুন সিংহ আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছেন। তাই গণেশের মত আমাদের দলের কর্মীর ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে।” তবে তৃণমূলের তরফে এই অভিযোগকে অবশ্য সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন সেই অর্জুন সিংহ। এদিন তিনি বলেন, “আমার গাড়ির ওপর হামলা চালানো তৃণমূলের পরিকল্পিত ঘটনা। গণেশ মদ্যপ অবস্থায় ছিল। সে দৌড়াতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। ওকে আমিই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করি।” অন্যদিকে শনিবার রাতে নৈহাটি পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের 8 নম্বর বিজয়নগরে বিজেপি পার্টি অফিস ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই ব্যাপারে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ব্যারাকপুর জেলা বিজেপির সহ সভাপতি বিপ্লব সরকার। তবে এই গোটা ঘটনাকে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফসল হিসেবেই আখ্যা দিয়েছেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে যখন সারা রাজ্য উত্তপ্ত, ঠিক তখনই ভাটপাড়া উত্তপ্ত সেই ভাটপাড়া দখলকে ঘিরে। যেখানে শাসক-বিরোধী সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ফলে সেদিক থেকে এখন এই রাজনৈতিক সংঘর্ষ কবে থামে এবং কার দখলে যায় ভাটপাড়া পৌরসভা! সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের। আপনার মতামত জানান -