এবার অমিত শাহর বাংলা শেখা নিয়ে কটাক্ষ মমতার, দিলেন ফের ‘বহিরাগত’ আখ্যান কলকাতা জাতীয় রাজ্য January 5, 2020 মাত্র একটা বছর, তারপরেই বাংলার মসনদ দখলের হাইভোল্টেজ লড়াই শুরু হয়ে যাবে 2021 সালে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের রণদামামা ইতিমধ্যে বেজে উঠেছে। একদিকে যেমন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই করতে ভোট ময়দানে নামতে চলেছে, ঠিক একইভাবে বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকেও সেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর এবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ নির্বাচনী রণনীতি তৈরি করতে কোথাও যাতে কোনো খামতি না থাকে এবং যেখানে সেখানে ভাষা যাতে কোন অন্তরায় না হয়, সেই কারণে বাংলা ভাষা শিখছেন রীতিমতো শিক্ষক রেখে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, 2021 সালের বাংলা দখলের লড়াইতে নামতে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কারোর ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না। তিনি বাংলা দখলের লক্ষ্যে ঝাঁপাতে মাঝের দেড় বছরের ব্যবধানে এবার বাংলা শেখা শুরু করলেন। 2019 সালের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাফল্য দৃশ্যমান কিন্তু এই মুহূর্তে একথা স্পষ্ট যে, 2021 সালের বাংলা দখলের যুদ্ধ খুব সহজে হবে না। তাই বিজেপি সভাপতি নিজেই সেই যুদ্ধের কান্ডারী হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। নির্বাচনী কৌশল ব্যবহার করতে ভাষা যাতে কোন অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায়, তাই জন্য তিনি বাংলা শেখার ব্যবস্থা করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি বাংলা শেখার জন্য শিক্ষক নিযুক্ত করেছেন। বাংলা শিখে বাংলার বুকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রীতিমত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চাইছেন তিনি। তাঁর একটাই লক্ষ্য, এ রাজ্য থেকে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনের অবসান ঘটানো। সামনেই এরাজ্যে পুরসভা ভোট। অর্থাৎ অর্ধেক বাংলায় ভোট হয়ে যাবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই পুরভোট মিনি বিধানসভা ভোট হতে চলেছে। তাই এই ভোটকেই প্রিটেস্ট হিসেবে ধরা হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলির তরফ থেকে। গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিটির শীর্ষে ছিলেন মুকুল রায়। মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বাংলায় পদ্ম ফুলের সাফল্য দেখেছিল বিজেপি। আর তাই এবার কোন ঝুঁকি না নিয়ে 2021 এর বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। ও সেই সাথে অমিত শাহ কোন ঝুঁকি না নিয়ে এ রাজ্যে নির্বাচনী কৌশল প্রয়োগ করতে বাংলা শেখা শুরু করেছেন। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে আশাতীত সাফল্য পেলেও গত বছর হয়ে যাওয়া উপনির্বাচনে কিন্তু রীতিমতো ধাক্কা খেতে হয় রাজ্য বিজেপিকে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - শুধু তাই নয়, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড নির্বাচনেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সফলতা পায়নি। তাই এবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনকে বিজেপি টার্গেট করেছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক চাণক্য অমিত শাহ দলীয় কর্মীদের সাথে আরো ভালো যোগাযোগ করার জন্য এ রাজ্যের ভাষা অর্থাৎ বাংলা শেখা শুরু করেছেন। যদিও বঙ্গ বিজেপির এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহ শুধু বাংলা নয়- বাংলা ও তামিল সহ চারটি ভিন্ন ভাষা শিখছেন। উল্লেখ্য, অমিত শাহ গুজরাটি হলেও তিনি হিন্দি ভাষায় সবথেকে বেশি সাবলীল। কারণ, কারাগারে থাকাকালীন তিনি হিন্দি শিখেছিলেন এবং দু’বছর সেসময় গুজরাটে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল তাঁর। সুতরাং হিন্দিতে কথা বলতে হতো সবসময়। এছাড়া খুব কম লোক জানেন, অমিত শাহ একজন শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী। তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত শিখেছেন এবং অবসর সময় এখনও শাস্ত্রীয় সংগীত অনুশীলন করেন। কেন্দ্রীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বাংলা শেখার ব্যাপারে পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র কটাক্ষ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসমক্ষে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন বাংলার গর্ব। বলা যায়, এখন শুরু হয়েছে অমিতের বাংলা শেখার মোকাবিলায় মমতার অস্ত্র বাংলার গর্ব। তাই ইদানিং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য উঠে আসছে বাংলার গর্বের কথা। সম্প্রতি তিনি অমিত শাহকে কটাক্ষ করে বলেছেন, অমিত শাহ যতই বাংলা শিখুন বাংলায় তিনি বহিরাগত থাকবেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে ভারতীয় রাজনীতির চাণক্য অমিত শাহ একটু চাপে রয়েছেন ইদানীং। একের পর এক রাজ্যে বিজেপির পতনের জেরে এই চাপ বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই চাপ কাটাতে এবার গেরুয়া শিবিরের লক্ষ্য 2021 সালের বাংলা জয়। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন রাজনীতির গেরুয়াধারীরা। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব বহিরাগত আখ্যান ঘোচাতে এবং বাঙালির ভাবাবেগকে কিছুটা আপন করে নিতেই বাংলা ভাষাকে সঙ্গী করে তৃণমূল শাসনের অবসান ঘটাতে চাইছে। আপাতত সমগ্র পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকগণ। আপনার মতামত জানান -