এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তীব্র গতিতে বাড়ছে বিজেপি! মান-অভিমান ভুলে প্রভাবশালী নেতাকে বড়সড় পদে ফেরালো তৃণমূল

তীব্র গতিতে বাড়ছে বিজেপি! মান-অভিমান ভুলে প্রভাবশালী নেতাকে বড়সড় পদে ফেরালো তৃণমূল


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছিল, বাংলায় কোথাও নাকি বিজেপির অস্তিত্ব নেই! বাম-কংগ্রেসও শক্তিহীন, তাই বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালোবেসে ৪২ টি লোকসভা আসনের সবকটিতেই জয়ী করবে। কিন্তু, ফলাফল বেরোলে দেখা গিয়েছিল, বাংলায় তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে তীব্রভাবে! বিজেপির সেই অর্থে কোনো সংগঠন না থাকলেও, তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে ১৮ টি ছিনিয়ে নেয় তারা।

কিন্তু, গোটা রাজ্যেই বিজেপি ভালো ফল করলেও, তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মন্ডল নিজের গড় ধরে রেখেছিলেন। তাঁর দায়িত্বে থাকা দুটি লোকসভা আসনেই জয়ী হয় ঘাসফুল শিবির। কিন্তু, হলে কি হবে? বহু জায়গাতেই বিজেপির উত্থান স্পষ্ট দেখা গেছে অনুব্রত-গড়েও! যার মধ্যে অন্যতম ছিল – খয়রাশোল ব্লক। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এখন থেকে তৃণমূল ১৯ হাজার ভোটের লিড পেয়েছিল।

কিন্তু, গত বছর লোকসভা নির্বাচনে ১০ টির মধ্যে ৯ টি পঞ্চায়েতেই বিজেপির থেকে পিছিয়ে পড়েছিল শাসকদল – ১৯ হাজারের খামতি মিটিয়ে গেরুয়া শিবির এখানে আরও প্রায় ১৬ হাজার ভোটের লিড পায়। অর্থাৎ, এখানে গেরুয়া উত্থানে বিজেপির ভোট বেড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। আর এই ঘটনার জেরে খয়রাশোলের ব্লক সভাপতির দায়িত্বে থাকা বিকাশ রায়চৌধুরীকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় শাসকদলের অন্দরেই।

এই ঘটনার পর, গত বছর সেপ্টেম্বরে বিকাশবাবুকে এক প্রকার কোনও নোটিশ বা আভাস ছাড়াই করে খয়রাশোলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হয় সহ-পর্যবেক্ষক পদে থাকা অরুণ চক্রবর্তীকে। ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ খুন হওয়ার পর থেকেই খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক ছিলেন বিকাশবাবু। তাঁকে কেন সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সে ব্যাপারে মেলেনি সদুত্তর। ফলত তাঁর অনুগামী এবং দলের অন্দরেই সাময়িক গরম হয়েছিল পরিবেশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

দলের তরফে জানানো হয়েছিল, বিকাশবাবু জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদ নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু, জল্পনা আরও বাড়ল, ঘটনার কিছুদিন পরেই শারীরিক অসুস্থতার জন্য বিকাশবাবু দীর্ঘদিনের ছুটিতে চলে যাওয়ায় পর। তাঁর ছুটিতে যাওয়া নিয়ে তখন জেলার রাজনীতিতে বিস্তর জল্পনা হয়েছিল। বস্তুত এখনও তিনি সেই ছুটিতেই। কিন্তু,আপাতত মান-অভিমান ভুলে, দীর্ঘদিন ব্লক সভাপতিহীন, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক পদে আবার ফিরিয়ে আনা হল বিকাশবাবুকে।

তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, বিকাশবাবুকে সরানোর পরেও খয়রাশোলে দলের অবস্থা শোধরানো যায়নি। বরং ক্রমশ সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হয়েছে আরও। তৃণমূল নেতৃত্বের মাথাব্যথা বাড়িয়ে সেখানে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বিজেপি-র অস্তিত্ব। সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে নয় বুঝে, বিধানসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি ফের অভিজ্ঞ বিকাশবাবুকে ফিরিয়ে আনল দল। কিন্তু দলের একটা অংশের প্রশ্ন, যে অসুস্থতার জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদেই পারছেন না, সেই অসুস্থতা নিয়ে বিকাশবাবু কীভাবে সামলাবেন খয়রাশোল।

কতটা দৌড়ঝাঁপ করতে পারবেন এই কঠিন সময়ে? এই প্রসঙ্গে, তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ জানান, পুরোপুরি না হলেও বিকাশবাবু এখন কিছুটা সুস্থ। তিনি দলের অভিজ্ঞ নেতা এবং জেলা কমিটির সদস্য। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত ওঁকে খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক হিসেবে দল দায়িত্ব দিয়েছে। অন্যদিকে বিকাশবাবু নিজে জানিয়েছেন, আমি অসুস্থ হলেও অন্য কোনও দায়িত্ব সামলাচ্ছি না। তা ছাড়া, খয়রাশোল দীর্ঘদিন ধরে সামলেছি।

বিকাশবাবু আরও জানিয়েছেন, সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে খয়রাশোলের বুথ স্তরের সাংগনিক শক্তি পুনরুদ্ধারে নজর দিয়েছি। কর্মীদের কাছে ইতিবাচক সাড়া মিলছে। আশা করি ভাল ফল পাব। তৃণমূল সূত্রের খবর, দায়িত্ব পাওয়ার পরই বিকাশবাবু এলাকায় গিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন ইতিমধ্যে। পঞ্চায়েত সমিতির হলে সোমবারও একটি সাংগঠনিক বৈঠক হয়েছে বিকাশবাবুর উপস্থিতিতে। এখন, কয়লা করবারের দখল নিয়ে দলের গোষ্ঠীকোন্দল লেগেই থাকা খয়রাশোলকে আবার কতটা ঘাসফুলময় করে তুলতে পারেন বিকাশবাবু সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!