আর দুদিন বাদেই কি বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? জেনে নিন বিস্তারিত কলকাতা জাতীয় পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া বিশেষ খবর রাজ্য August 22, 2018 তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ফের আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেল। এদিন দুপুরে বিষ্ণুপুরের রাধানগর স্কুল মাঠে এক বিশাল জনসভা করেন তিনি। সেখানেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে কড়া ভাষায় তোপ দাগলেন তিনি। নাম না করেই অমিত শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জুটিকে হিন্দি সিনেমার ‘গব্বর-সাম্বা’ যুগলবন্দি বলে কটাক্ষ করলেন এদিন। নিজের বক্তব্যে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘যুবরাজ’ জানালেন, অমিত শাহ এ রাজ্যের ২২ টি লোকসভা আসনের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলেন। কিন্তু বাংলার বুকে দুটো আসনেও জিততে পারবে না তাঁরা এমনটাই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তিনি। ২০১৯ সালের বিজেপি সরকার উৎখাত হবেই। ইডি, সিবিআই-এর ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে রোখা যাবে না বলেই জানালেন তিনি। এছাড়াও অমিত শাহের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দেগে বললেন, ১১ আগস্ট কলকাতার বুকে সভা করে তিনি রাজ্যের শাসকদলের নামেই মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, সভার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল তৃণমূলের তরফ থেকে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর মৃত্যুতে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় শোক চলসয় বিজেপির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না কিন্তু কিছুদিন পরেই মামলা দায়ের করে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে তৃণমূলের তরফ থেকে এমনটাই জানালেন তিনি। ফলে রাজনৈতিক মহলের মতে আর দিন-দুয়েকের মধ্যে রাষ্ট্রীয় শোক মিটলেই বড়সড় আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তিনি। অভিষেকবাবু আরো জানান, ইমাম ভাতার মাধ্যমেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুসলিম ঘনিষ্ট হওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে। আসলে সরকার ওয়াকফ বোর্ডের টাকা থেকে ইমাম ও মোয়াজ্জেমদের ভাতা দিচ্ছে। বিজেপি নিজেদেরই হিন্দুত্ববাদী বলে প্রচারে নেমেছে। অথচ বাংলার মানুষ দেখছে – গঙ্গাসাগর, তারকেশ্বর, দক্ষিণেশ্বরের মতো হিন্দুদের তীর্থস্থানগুলিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই সংস্কার হচ্ছে। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র আক্রমনের মুখে ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। ডায়মন্ড-হারবারের সাংসদ অভিযোগ করেন, গত সাড়ে চার বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে শুধু মাত্র বিদেশভ্রমণের জন্য। অথচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পায়ে হেঁটেই জেলা ও ব্লকস্তরে উন্নয়নকল্পের জন্য ঘুরছেন। পাশােপাশি অভিযোগ তুলে এটাও বলেন, গঙ্গা পরিস্কার করার নাম করে বিজেপি চার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। বিজেপি – ‘ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি’-তে পরিনত হয়েছে। তৃণমূলের ফেলে দেওয়া জঞ্জালকে বিজেপি ঘরে তুলেছে – এমনটাই দাবী তৃণমূলের যুব কংগ্রেস সভাপতির। ললিত মোদী, বিজয় মালিয়াদের দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে বিজেপি। বঙ্গ-বিজেপির নেতারা সবসময় রাজ্যে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করে রেখেছে। বদলা নয়, বদলের রাজনীতিতে বিশ্বাসী তৃণমূল – এমনটাও দাবীতে জানালেন তিনি। একই সঙ্গে জানাতে ভুললেন না – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেই বিজেপিকে তাঁদের অবস্থান বুঝিয়ে দিতে সময় লাগবে না তৃণমূলের। এরপর অসমের এনআরসি প্রসঙ্গেও বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন তৃণমূলের যুবনেতা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপি অসমের ৪০ লক্ষ মানুষকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। ওই সব মানুষের ভোটে অসমে বিজেপি সরকার গড়েছে। মানুষ অবৈধ হলে ওই বিজেপি সরকারও অবৈধ। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবও অবৈধ। তাঁর বাড়ি কোথায় তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। পাশাপাশি আরো জানান, অমিত শাহ বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে হিন্দিতে রাজ্যের শাসকদলকে উৎখাত করার ডাক দিয়ে গিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তীব্র শ্লেষ হেনে তাঁর বক্তব্য – আসলে ওরা মঞ্চে লেখা বাংলা স্লোগানও পড়তে পারে না। টুকলি করে পাশ করা যায়, কিন্তু টুকলির জোরে প্রথম হওয়া যায় না। ভাড়াটে নেতা এনে দু-চারটে জনসভা করা যায়। কিন্তু বাংলার মানুষের মন পাওয়া যাবে না – সভার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এইভাবেই কটাক্ষের সুরে বিজেপিকে আক্রমন করলেন তিনি। এদিনের জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, সাংসদ – মানস ভুঁইয়া, সৌমিত্র খাঁ, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী, জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ খাঁ প্রমুখ শীর্ষ নেতারা। আপনার মতামত জানান -