এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > অভিষেক-পিকের নির্দেশ কার্যত ব্যুমেরাং? বিজেপি ফেরত হেভিওয়েট নেতাকে ঘিরে অস্বস্তি শাসকদলে?

অভিষেক-পিকের নির্দেশ কার্যত ব্যুমেরাং? বিজেপি ফেরত হেভিওয়েট নেতাকে ঘিরে অস্বস্তি শাসকদলে?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ফিরে আসার পর তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছিল। পরবর্তীতে শিলিগুড়ির বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিপ্লব মিত্রকে সাথে নিয়ে এই সমস্ত কাজ করতে হবে। আর এরপরই শনিবার তৃনমূলের কোর কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সেই বিপ্লব মিত্রকে। আর সেই বৈঠকে উপস্থিত হয়েই জেলা কমিটি নিয়ে নিজের আপত্তির কথা জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। যার ফলে দলের ঐক্য তো দূর অস্ত, বরঞ্চ বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও বেশি সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন একাংশ।

বস্তুত, তৃণমূলের প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সভাপতি ছিলেন বিপ্লব মিত্র। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই তার সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। অর্পিতা ঘোষকে প্রার্থী না মেনে প্রকাশ্যে বেশ কিছু মন্তব্য করেন সেই বিপ্লববাবু। পরবর্তীতে সেই অর্পিতা ঘোষকে জেতানোর দায়িত্ব বিপ্লব মিত্রের উপর থাকলেও, শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করতে পারেননি বিপ্লববাবু। যার পরে তাকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় অর্পিতা ঘোষকে। এর পরবর্তী সময়ে বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দিয়েও সেভাবে কোনো লাভ করতে পারেননি তিনি।

দীর্ঘদিন ঘরে বসে থাকতে দেখা যায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এই হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে। অবশেষে কিছুদিন আগেই অর্পিতা ঘোষকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর সেই বিপ্লব মিত্র যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। কিন্তু বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে ফিরে এলেও তার মত নেতাকে কাজে লাগানো হচ্ছে না বলে তার অনুগামীরা অভিযোগ তুলতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে সম্প্রতি প্রশান্ত কিশোর এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে এসে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নেতাদের বার্তা দেন, এবার জেলার যে কোনো কর্মসূচিতে বিপ্লব মিত্রকে ডাকতে হবে।

ফলস্বরূপ শনিবারের কোর কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয় সেই বিপ্লব মিত্রকে। আর বৈঠকে যোগ দিয়েই বেশ কিছু বিষয়ে মন্তব্য করেছেন বিপ্লববাবু বলে খবর। যা নিঃসন্দেহে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের অস্বস্তিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, এদিন সকাল 11 টা থেকে দুপুর 3 টে পর্যন্ত পতিরামের পথসাথীতে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শংকর চক্রবর্তী, সভাপতি গৌতম দাস, বিপ্লব মিত্র, কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকী, ললিতা টিগ্গা, বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা, তোরাফ হোসেন মন্ডল সহ অন্যান্যরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর সেখানেই বিপ্লব মিত্রের কি সমস্যা রয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়। বিশেষ সূত্র মারফত খবর, বিপ্লব মিত্র সেই বৈঠকে জানিয়ে দেন, নতুন যে জেলা কমিটি রয়েছে, সেই জেলা কমিটি নিয়ে কোনোভাবেই বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করা সম্ভব নয়।এক্ষেত্রে গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর এবং বংশীহারীর বেশকিছু নেতাকে সেই কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলেন বিপ্লববাবু। আর এর পরেই বিপ্লব মিত্রের সেই বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হন জেলা কমিটির বেশ কিছু সদস্য। স্বভাবতই কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েই যেভাবে দলের জেলা কমিটির নিয়ে আপত্তি তুলে দিলেন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি, তাতে শাসকদলের অন্দরমহলের অস্বস্তি আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যদি বিপ্লব মিত্রের এই দাবিকে মান্যতা দেওয়া না হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠতে পারে। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “আমাকে কোর কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়েছে। যা বলার তারা বলবে। আমি দীর্ঘদিন এই দলে রয়েছি। দলের ভালো খারাপ বুঝি। যা সমস্যা দলে রয়েছে, তা এদিন বৈঠকে বলেছি। দল যা ভালো বুঝবে, তাই সিদ্ধান্ত নেবে।” কিন্তু বিপ্লব মিত্রের যে সমস্ত প্রস্তাব রয়েছে, তাকে কি মান্যতা দেওয়া হবে?

এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম দাস বলেন, “বিপ্লবদা আমার কাছে রাজনীতিতে গুরুদেব। আমি সমস্ত কর্মসূচিতেই তাকে বলে থাকি। তিনি কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। তাই বৈঠক করা সম্ভব হয়নি। আগামীতে আমরা একসঙ্গে চলব। একাধিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বিপ্লবদা যে সমস্যার কথা বলেছেন, তা আমরা আলোচনা করব। নতুন কমিটি নিয়ে যা যা সমস্যা, তার দ্রুত সমাধান করা হবে।” সব মিলিয়ে কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই যেভাবে একাধিক বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন বিপ্লব মিত্র, তাতে তাকে নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!