এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > জোট রাজনীতি জোরদার করতে একমঞ্চে অধীর- সেলিম! তাতেও কি “চাকা ঘুরবে”! উঠছে প্রশ্ন

জোট রাজনীতি জোরদার করতে একমঞ্চে অধীর- সেলিম! তাতেও কি “চাকা ঘুরবে”! উঠছে প্রশ্ন

 

প্রথম 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে একসাথে জোটবদ্ধ হয়ে লড়েছিল বাম এবং কংগ্রেস। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে হাতে হাত রাখতে দেখা গিয়েছিল রাহুল গান্ধী এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। যে ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল বলেই মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল।

কিন্তু রাজনীতিতে চিরশত্রু, চিরমিত্র বলে কোনো কথা হয় না। তাই 2016 র পর সদ্য সমাপ্ত 2019 এ জোট বদ্ধ হয়ে লড়তে চেয়েছিল বাম এবং কংগ্রেস। কিন্তু নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য জেরে তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে নিজেদের সেই জোট পাকাপাকি করে নিয়েছে তারা।

আর এবার সেই নিজেদের জোট রাজনীতিকে আরও জোরদার করতে এবং নিচুতলার দুই দলের কর্মীদের মধ্যে ভাব বিনিময় ঘটাতে এক মঞ্চে দেখা গেল অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং মহম্মদ সেলিমকে। সূত্রের খবর, বুধবার করিমপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী গোলাম রাব্বির হয়ে একটি জনসভা করেন অধীরবাবু এবং সেলিমসাহেব।

থানারপাড়া থানা সংলগ্ন বাজারে আয়োজিত জনসভায় দুই দলের নেতাকর্মীরাই উপস্থিত ছিলেন। আর সেই সভা থেকে বাম এবং কংগ্রেসের প্রধান দুই নেতা তৃণমূল এবং বিজেপির সমঝোতার অভিযোগে সরব হন। এদিন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “দিদিভাই এবং মোদিভাইয়ের গোপন আঁতাত আছে। তাই সারদা, নারদা সহ অন্যান্য চিটফান্ড কাণ্ডের নায়করা এখনও জেলের বাইরে রয়েছেন। মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য সিবিআইকে দিয়ে মাঝেমধ্যে ভয় দেখানো হচ্ছে। কোনো সরকার মানুষের কথা ভাবছে না। তারা শুধু নিজেদের আত্মীয়-স্বজন এবং দলের লোকেদের কথা ভাবছে। কৃষকরা দুর্দশার মধ্যে বাস করছেন। অথচ রাজ্যে বা কেন্দ্রে কোনো সরকারের এই বিষয়ে হেলদোল নেই। গ্রামের খেটে খাওয়া প্রান্তিক কৃষকদের কথা একমাত্র কংগ্রেস এবং সিপিএমই ভাবে।”

একইভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুলিশ দিয়ে ভোট করানো হলেও এবার সকলকে নির্ভয় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী। অন্যদিকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায় সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকেও।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তিনি বলেন, “আমরা বাংলায় এনআরসি হতে দেব না‌। আমরা চাই বাংলায় যারা আছে, তারা সকলেই থাকবে। কিন্তু এনআরসি নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দল আপনাদের ভুল বোঝাচ্ছে। এনআরসির দাবিতে সংসদে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী স্পিকারকে কাগজ ছুড়ে মেরেছিলেন। তখন তারা এনআরসির পক্ষে ছিলেন। এখন রাজনীতির জন্য তারা বিপক্ষে গিয়েছেন। কিন্তু বাম এবং কংগ্রেস প্রথম থেকেই এনআরসির বিরোধিতা করে আসছে। আপনাদের কোনো ভয় নেই। আমরা বাংলায় এনআরসি চালু করতে দেব না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীয়া জেলায় একেই সীমান্তবর্তী জেলা। এখানে এনআরসি ইস্যু এবার কিছুটা হলেও কাজ করবে। ফলে সেদিক থেকে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দল এনআরসি ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে এই তৃণমূল আর বিজেপি দুই দলকেই বিপাকে ফেলতে এবং দুই দলের সমঝোতার অভিযোগ তুলে ধরলেন বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু সিপিএমের মহম্মদ সেলিম এবং কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী তৃণমূল এবং বিজেপির সমঝোতার অভিযোগ তুলে ধরলেও তা কতটা এই নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

অনেকে বলছেন বর্তমানে বাম এবং কংগ্রেস যতই জোট করে লড়াই করুক না কেন তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যেই মূল টক্কর হবে। তাই সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে সিপিএম এবং কংগ্রেসের যে ভোট বিজেপির দিকে চলে গেছে, তা আর ফিরে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই সেদিক থেকে বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। আবার শাসক দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসের কিছুটা হলেও অ্যাডভান্টেজ রয়েছে। তাই ঘটা করে জোট করে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে লড়ার কথা বললেও অধীরবাবু এবং সেলিম সাহেবের সেই কথা আদৌ বাস্তব রূপ নেয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!