সিআইডির পর এবার স্বাস্থ্য দপ্তরের নোটিশ! লকডাউনে “হেনস্থার” অভিযোগ বিজেপি সাংসদকে নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য June 1, 2020 করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যাতে কেউ কোনো রাজনীতি না করেন, তার জন্য সকলকে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাড়েবাড়েই বাংলায় রাজনৈতিক ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরোধী নেতা-নেত্রীদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগেই সিআইডির পক্ষ থেকে তৃণমূল বিধায়ক খুনের অভিযোগে হাজিরা দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ পেয়েছিলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। আর এবার স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ফের আরও একটি নোটিশ পাঠানো হল তাকে। যেখানে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার জন্য বিজেপির এই সাংসদকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে খবর। যা নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, গত 25 মে নবদ্বীপের একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। সেখান থেকে ফেরার পরই পরদিন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা তার বাড়িতে গিয়ে তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনের নোটিশ ধরিয়ে দেন। আর এই ঘটনার তীব্র আপত্তি জানান সেই বিজেপি সাংসদ। যেখানে তার প্রশ্ন যে, শুধু তিনি নন। সেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে গিয়েছিলেন নবদ্বীপ পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পৌর প্রশাসক বিমান কৃষ্ণ সাহা। ফলে শুধু তাকে কেন কোয়ারেন্টাইন থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হবে! কেন বিমানবাবু কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন না! তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। এক্ষেত্রে শাসকদলের রাজনীতির অভিযোগেই সরব হচ্ছেন তিনি। বস্তুত, এই প্রথম নয়, এর আগে তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে খুনের ঘটনায় সিআইডির পক্ষ থেকে নোটিশ দিয়ে বিজেপি সাংসদকে ভবানী ভবনে আগামী দশই জুন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাওয়ার জন্য তাকে নোটিশ ধরানোয় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ভাবে সরব হলেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, “নবদ্বীপের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নবদ্বীপের পৌর প্রশাসক বিমান কৃষ্ণ সাহাও গিয়েছিলেন। তার সাথে বহু কর্মী গিয়েছিল। কিন্তু তাকে নোটিশ ধরানো হচ্ছে না। রাজনৈতিক কারণে আমাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে গিয়ে দীর্ঘক্ষন আমি অপেক্ষা করেও, তার দেখা পাইনি। তিনি কেন এই নোটিশ দিলেন, তা জানতে চেয়ে একটি চিঠি জমা করেছি। আর তিনি বারবার ফোন করার পরেও আমার ফোন ধরছেন না।” একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই তো তাই! এক্ষেত্রে শুধুমাত্র বিজেপি সাংসদকেই কেন নোটিশ ধরানো হল? তৃণমূলের বিমান কৃষ্ণ সাহাও যদি সেই কোয়ারেন্টাইনে যান, তাহলে তিনি কেন কোয়ারেন্টাইন থাকার নির্দেশ পেলেন না? এদিন এই প্রসঙ্গে নবদ্বীপের পৌর প্রশাসক বিমান কৃষ্ণ সাহা বলেন, “আমি দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করছি। অন্যদিকে বিজেপি সাংসদের এই অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি শংকর সিংহ। তিনি বলেন, “প্রশাসন সকলকে নিরাপত্তার কথা ভেবেই সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। একজন সাংসদ হিসেবে তা আগে এগিয়ে আসা উচিত। তা না করে বরং জগন্নাথ সরকার রাজনীতি করছেন।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোটা ব্যাপারটি নিয়ে বিতর্ক তৈরিই হত না যদি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাওয়া বিমান কৃষ্ণ সাহাও কোয়ারেন্টাইনে থাকার নোটিশ পেতেন। কিন্তু বেছে বেছে বিজেপি সাংসদ শুধুমাত্র নোটিশ পাওয়ায় এক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -