প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল ও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল বারবার মুখ্যমন্ত্রীর নানা উন্নয়নমূলক মূলক কাজের প্রচার ও বিজেপির বিরূদ্ধে প্রচার করছে। গতকাল মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন যে, পরিযায়ী পাখির মত বিজেপির পরিযায়ী নেতারা বাংলায় আসছেন। তাঁর দাবি, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি যেভাবে সরকার গঠন করতে পেরেছে। তা বাংলায় কখনোই পারবে না।

এদিকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূল দলের সংগঠনগত শক্তি বৃদ্ধির কাজ যেমন চলছে, সেই সঙ্গে চলছে দলের প্রচার কাজ। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তৃণমূলের রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজকে তুলে ধরছেন তৃণমূল নেতারা। সেইসঙ্গে প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির বিরুদ্ধে চলছে তীব্র প্রচার। গতকাল মঙ্গলবার আবার বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।

চলতি মাসের প্রথম দিকে বঙ্গ সফর করে গেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিছুদিনের মধ্যে তিনি আবার বঙ্গ সফর করতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় প্রশ্ন করেছেন যে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এখনো পর্যন্ত বাংলার ম্যাপটি ভালো করে চেনেন নি, তাহলে ২০০ টি আসন পাবার কথা কি করে বলছেন তিনি? সৌগত রায় জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থাকেন গুজরাতে। তাই, বাংলায় বিজেপি কটা আসন পাবে? এটা কি করে আগে থেকে তিনি বলছেন।

তিনি অভিযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদের মর্যাদা রাখেন নি অমিত শাহ। তিনি জানালেন যে, তিনি আশা করে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে এসে বিএসএফ কেমন কাজ করছে, গরু পাচার চক্র বন্ধ হয়েছে কিনা, নেপাল,ভুটানে ভারত বিরোধী প্রচার চলছে কিনা, এই সব বিষয়ে খোঁজ নেবেন। কিন্তু তিনি বাঁকুড়াতে গিয়ে ভুল মূর্তিতে মালা দিয়েছেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের একজনের বাড়িতে গিয়ে খেয়েছেন। যা কখনোই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজ হতে পারে না।

সম্প্রতি বঙ্গ সফর করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকেও আক্রমণ করলেন সৌগত রায়। তিনি জানালেন যে, পশ্চিমবঙ্গে তিনি বেড়াতে আসতে পারেন। তিনি সেখানকার উন্নয়ন দেখে যান। বাংলা সম্পর্কে তাঁকে জানার পরামর্শ দিলেন তিনি। তিনি জানালেন, হিমাচলে প্রচুর ঠান্ডা, তাই ওখান থেকে বেশ কিছু লোক মাঝে মাঝে পশ্চিমবঙ্গে আসেন।

কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কেও কটাক্ষ করলেন তিনি। তিনি জানালেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ছেলের হাতে কিভাবে মার খেয়ে ছিলেন সরকারি আধিকারিকেরা। এদিকে গত সোমবার রাতে শুভেন্দু অধিকারী সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল তাঁর। এ বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, আবার আলোচনা হবে। তবে বৈঠকে কাজ হয়নি, এটা মনে করা ঠিক নয়। সকলের সঙ্গে সদ্ভাব রাখার চেষ্টা করবেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে অর্জুন সিং তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের বিজেপিতে যোগদানের দাবি জানিয়েছিলেন। এরপর গতকাল সৌগত রায় যেভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিকে নিয়ে সমালোচনা করলেন, তা নিয়ে যথেষ্ট জল্পনা ছড়ালো।