প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজনৈতিকভাবে তাদের দুজনের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। একজন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর একজন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে বাংলার ক্ষমতায় থাকা সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতাচ্যুত করতে এখন মাঝেমধ্যেই বাংলায় আসতে দেখা যাচ্ছে সেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। আর বাংলায় এসে রাজ্যের নানা অনুন্নয়নের কথা তুলে ধরতে দেখা যাচ্ছে তাকে। সাম্প্রতিককালের রাজ্যে এসে কোনো কাজ হয়নি বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আর মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে অমিত শাহের সেই বক্তব্যের জবাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে পরিসংখ্যান দিয়ে গোটা বক্তব্য পেশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে ধোকলা খেতে চাইলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হওয়ার আশা দেখছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

অনেকে বলছেন, নেহাত মজা করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অমিত শাহের এই পরিসংখ্যানের জবাব দিয়ে তাকে ধোকলা খাওয়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন। অর্থাৎ এর সঙ্গে বাস্তব রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এটা সম্পূর্ণ রূপে রাজনৈতিক দ্বৈরথের মাঝেও কিছুটা ঠাট্টার বহিঃপ্রকাশ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রবিবার বোলপুরে রাজ্য সরকারের নানা বিষয়ের কথা তুলে ধরে সরব হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যেখানে তিনি বলেন, “জিডিপি বৃদ্ধির হারে 32 টি রাজ্যের মধ্যে বাংলা 16 নম্বরে। শিল্প, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বাংলা দেশের অন্যান্য রাজ্যের থেকে নীচে নেমে গিয়েছে।”

আর মঙ্গলবার অমিত শাহের এই বক্তব্যের জবাব দিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখানে তিনি বলেন, “গত অর্থবছরে এই মাপকাঠিতে দুই নম্বরে রয়েছে বাংলা। শিল্পের বিকাশে 32 টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে 20 নম্বরে। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে 4 নম্বরে রয়েছে বাংলা।” এদিকে সরকারি হাসপাতালে সংখ্যায় 32 টি রাজ্যের মধ্যে বাংলা 23 নম্বরে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পাল্টা জবাব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি জানিয়ে দেন, তার সরকারের আমলে প্রায় 27 হাজার বেড বেড়েছে। পাশাপাশি গত 10 বছরে সাড়ে 10 হাজার ডাক্তার নিয়োগ করা হয়েছে বলেও জানান বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। আর এরপরই বিজেপিকে কটাক্ষ করে অমিত শাহর কাছে ধোকলা খেতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জেনে নিয়ে কথা বলা উচিত। বাংলাকে দুঃস্বপ্নের নগরী হিসেবে দেখিয়ে গিয়েছেন। বাংলা মানেই কাজ নেই! কোথায় ছিলেন সিপিএমের 34 বছর? এখন বাংলা ঝকঝক চকচক করছে। ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়ছেন। আমি আপনার সব বক্তব্যের জবাব দিয়েছি। এবার আমাকে ধোকলা খাওয়াতে হবে।”

একাংশ বলছেন, ছেলেবেলায় বিভিন্ন বিষয়ে খেলাধুলোর সময় একে অপরের মধ্যে চ্যালেঞ্জ হত। আর যেখানে প্রধান বিষয় হয়ে উঠত খাওয়ানো। যে সেই চ্যালেঞ্জে জয়লাভ করবে, তাকে খাওয়াতে হবে বলে জানিয়ে দিত অপরপক্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই গ্রামবাংলায় ছেলেমেয়েদের খেলাধুলোর এই মোক্ষম বিষয়টিকে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে আসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

যেখানে অমিত শাহের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রতিটি পরিসংখ্যান ধরে নিজের সরকারের তথ্য তুলে ধরলেন তিনি। আর তারপরেই তিনি সব জবাব দিয়েছেন, তাই তাকে ধোকলা খাওয়াতে হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বভাবতই ধোকলা খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে এখন জমজমাট বঙ্গ রাজনীতি।