এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অনেক নেতাকর্মীই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন! বিধানসভার আগে শীর্ষনেতার বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে ঝড়

অনেক নেতাকর্মীই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন! বিধানসভার আগে শীর্ষনেতার বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে ঝড়


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একাদিক্রমে ৩৪ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে উড্ডীন ছিল লাল পতাকা। সাড়ে তিন দশক ধরে বাংলা শাসনের যে নজির বামপন্থীরা গড়েছেন, বাংলার রাজনীতিতে তাকে রেকর্ড বললে কোন অত্যুক্তি হবে না। কিন্তু গত ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যে জোর ধাক্কা খায় রাজ্যের বাম শাসন। তারপর গত ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একেবারে দুরমুশ হয়ে যায় বামেরা। তারপর থেকে যতই সময় এগিয়েছে, ততই ধ্বস নেমেছে বাম শিবিরে। শাসক দল তৃণমূল, বিরোধী দল বিজেপি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠায় সমস্যা বাড়ছে বামেদের।

গতকাল বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানালেন, গত ১০০ বছরের মধ্যে এমন খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি সিপিআইএমকে। প্রসঙ্গত গতকাল শনিবার সিপিআইএমের ১০০ বছর পূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠান ছিল। এই অনুষ্ঠান মঞ্চে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু জানালেন, “গত ১০০ বছরে সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মানুষ। মানুষের জীবনে দুই সরকার নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তাতে সাধারণ মানুষের বিপদ কমার বদলে বাড়ছে। মানুষের এহেন সমস্যায় বামপন্থীরা কখনই নিজেদের গুটিয়ে রাখেনি। কিন্তু এখন পার্টির মধ্যে এক অদ্ভুত সমস্যা তৈরি হয়েছে।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “কোভিডকে অজুহাত হিসেবে খাড়া করে পার্টির অনেক নেতা-কর্মীই নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন। ঘরবন্দি করেছেন। এখন ঘরে বসে থাকার সময় নয়। রাস্তায় নেমে মানুষের সেবা করতে হবে। নিষ্ক্রিয় কর্মী থাকার থেকে না থাকা ভাল। অনেকেই মাসের পর মাস বাড়িতে বসে রয়েছেন।” বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর এই বক্তব্যের পর শোরগোল পড়ে গেল বাম শিবিরে। বস্তুত, দলের অবস্থা এতটাই খারাপ যে অর্থ উপার্জনের জন্য দলের নেতারাও অনেক সময় দলের কার্যালয় ভাড়া দিচ্ছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আবার করোনার কারণে, দলের বহু কর্মী-সদস্য দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন না। এর ফলে কার্যত অস্তিত্বের সংকটে চলে এসেছে সিপিআইএম। দলের এই দুঃসহ পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তবে, বামফ্রন্টের অবস্থা সঙ্গিন হলেও নেতাদের তর্জন-গর্জন কিন্তু এখনো কমেনি। আশ্চর্যের বিষয়, যারা এভাবে অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে, তারাই আবার রাজ্য থেকে তৃণমূল শাসন অপসারণের ডাক দিচ্ছে। যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। অনেকের প্রশ্ন এই দল কবে বাস্তববাদী হবে? কবে বাস্তববাদী হবেন রাজ্যের বামপন্থীরা?

প্রসঙ্গত বামেরা বলে থাকেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়েছে বামেদের রাজ্যের তৃণমূল শাসনকে অপসারণ করতে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে বিজেপি লাভবান হতে পারে। তবে বামেরা বিজেপির থেকেও বড় শত্রু মনে করে তৃণমূলকে। এটাও সত্যি যে, সম্প্রতি রাজ্যে তেমন জনপ্রিয়তা নেই বামেদের। রাজ্যের মানুষকে জোর বামমুখী করাটাও সহজ নয়। কারণ, দিনে দিনে জনসমর্থন ও ভোট হারাচ্ছে বামেরা। তাই মূলত অস্তিত্বকে ধরে রাখতেই কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোর করতে হয়েছে। বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন দলের বাস্তব অবস্থাটা দেখেও যেন দেখতে পাচ্ছেন না শীর্ষস্থানীয় বাম নেতারা।

দলের নিচুতলার কর্মী-সদস্যদের ঘাড়ে অভিযোগ চাপিয়ে দিয়ে শীর্ষস্থানীয়েরা মহান হবার চেষ্টা করছেন। এর ফলেই দলের থেকে আরও বেশি পরিমাণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন দলের বিভিন্ন কর্মী-সমর্থকরা। দলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তারা দলবদল করছে, নয়তো দলে নিষ্ক্রিয় হয়ে থেকে যাচ্ছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তবে দলের অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে পড়বে, এমন টাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। একসময় এই দলের অবস্থা এমন জায়গায় চলে যাবে যে, অফিস খোলা, আলো জ্বালাবার মতো লোক খুঁজে পাওয়া ভার হবে। কিন্তু অনেকেই অভিযোগ করছেন যে, বাস্তব অবস্থা যেন কিছুতেই বুঝতে চাইছেন না বামের শীর্ষ নেতৃত্ব।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!