এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অনুব্রত-গড়ে বিজেপি চাপ বাড়াতেই কি গ্রেপ্তার একের পর এক হেভিওয়েট গেরুয়া নেতা? বাড়ছে জল্পনা

অনুব্রত-গড়ে বিজেপি চাপ বাড়াতেই কি গ্রেপ্তার একের পর এক হেভিওয়েট গেরুয়া নেতা? বাড়ছে জল্পনা


বীরভূম জেলায় বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি ধ্রুব সাহা গ্রেফতার হওয়ার পর এবার দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করাকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে ওঠে বীরভূমের জেলা রাজনীতি। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলায় বিভিন্ন জেলায় ঘাসফুল শিবির ধাক্কা খেলেও বীরভূমের দুটি আসন রক্ষা করতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বীরভূম জেলার শহর লাগোয়া এলাকায় ভোটের মার্জিন অনেক কমে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের।

বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজেপির কাছে পিছিয়ে পড়ার সম্মুখীন হতে হয়েছে তৃণমূল শিবিরকে। তাই কেষ্টগরে আগামী দিনে রাজনৈতিকভাবে যে বিজেপির উত্থান হতে চলেছে, সেই বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন একাধিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেই কারণেই কি একের পর এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করছে পুলিশ! এখন তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা।

সূত্রের খবর, সোমবার রাত্রি দুটো নাগাদ মল্লারপুকুর আড়াল গ্রামে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয় অতনু চট্টোপাধ্যায়কে। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার জেলা জুড়ে প্রতিবাদ মিছিল করে গেরুয়া শিবির। বিক্ষোভ মিছিলে শামিল হন বহু বিজেপি কার্যকর্তারা। আর এরপর মঙ্গলবার দিন গ্রেপ্তার হওয়া ওই বিজেপি নেতাকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি পুলিশের পক্ষ থেকে 10 দিনের হেফাজত চান আদালতের কাছে। এসিজেএম ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী অবশ্য সাত দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্রের খবর, গত 29 জুন রাতে মল্লারপুর বাজারে তিনতলা ক্লাবে বিস্ফোরণ ঘটে। যার কারণে ওই ক্লাবের সদস্য মিঠু শেখকে গ্রেফতার করা হয় পুলিশের তরফ থেকে। পরবর্তীতে 14 জুলাই ওই ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ বিপ্লব দত্তকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে অবশ্য তারা জামিনে রয়েছে। এরপর ওই বিস্ফোরণ মামলায় সোমবার রাতে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ মামলায় জড়িয়ে থাকার অভিযোগ করা হয়। এর পাশাপাশি দেড় মাস আগে ময়ূরেশ্বরের ষাটপলসা তৃণমূল কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, বোমাবাজি ইত্যাদি ঘটনার অভিযোগে গত শনিবার রাত্রিবেলা বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি ধ্রুব সাহাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর এই পার্টি অফিসে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, মল্লারপুর বিস্ফোরণ কান্ড মামলায় সাক্ষ্যদের বয়ান থেকে অতনু চট্টোপাধ্যায়ের নাম উঠে আসে।

অন্যদিকে পুলিশি হেফাজতে থাকা বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি ধ্রুব সাহার বক্তব্য অনুযায়ী, অতনুবাবু ষাটপলসা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ। এছাড়াও মহরমের দিন বোলপুর হাসপাতালের সামনে ও অন্যান্য জায়গায় সড়ক অবরোধের ব্যাপারেও তাদের নাম উঠে আসছে বলে জানায় বীরভূম জেলা পুলিশ।

এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন থানায় ধৃত ব্যক্তির নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি অনেকদিন থেকে ওয়ান্টেড ছিলেন। মল্লারপুর ক্লাবের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ধৃত ব্যক্তি জড়িত। এছাড়াও ময়ূরেশ্বর, শান্তিনিকেতন সহ জেলাজুড়ে অশান্তি পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। সেই সমস্ত কেসেই ওই বিজেপি নেতা ওয়ান্টেড ছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে জেলা বিজেপির ওই নেতার বিরুদ্ধে। যদিও এই বিষয়ে বীরভূম জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অতনু চট্টোপাধ্যায় জানান, তাকে পরিকল্পনামাফিক মিথ্যে মামলায় ফাসাচ্ছে পুলিশ। তিনি দাবি করেন, 2021 সালে বিজেপি ক্ষমতায় এলে পুলিশ তার কর্মের সাজা পাবে।

এদিন বিজেপি নেতার গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রামপুরহাটে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বার করে ভারতীয় জনতা পার্টি এসডিপিও সৌমজিৎ বড়ুয়ার কাছে ডেপুটেশন দেন। পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে মল্লারপুর থানা ঘেরাও করা হয়। আর সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে মল্লারপুর ব্লকের সম্পাদক মানস বাবু বলেন, “সিউড়ির ধরনা মঞ্চ থেকে এসডিপিওকে হুঁশিয়ারি দেওয়া আমাদের দুই কার্যকর্তাকে গ্রেপ্তার করে পুরনো মামলায় ট্যাগ করে দেওয়া হল।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল তারাপীঠের শ্মশানে নিয়ে যাব। আর এই এসপি যেখানে থাকুক, তাকে তুলে নিয়ে সেই কুশপুতুলের মুখাগ্নি করাব। তারপর এসপির মাথা ন্যাড়া করে এখানে ভোজ করাব। এই বিস্ফোরণের মূল পান্ডা কেষ্ট মোড়ল।”

অন্যদিকে এদিন সিউড়িতে প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেন দলের জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল। তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূল যেটা মাঠে নেমে করতে পারছে না, সেটা পুলিশকে দিয়ে করাচ্ছে। এখানকার পুলিশ প্রশাসন প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছে। অতনু চট্টোপাধ্যায়কে কূখ্যাত আসামীর মত গ্রেপ্তার করা হল। পাশাপাশি বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, “স্বরুপ গড়াই খুনে অভিযুক্তদের এখনও ধরতে পারল না পুলিশ। অথচ কয়েক মাস আগে হয়ে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে বিজেপি কার্যকরতাদের জুড়িয়ে জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করছি এবং সেটাই করব। তাতে যদি সকলকে জ্বলে পুড়ে দেওয়া হয়, তার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।”

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বীরভূম জেলার রাজনীতি এমনিতেই উত্তপ্ত। এখানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে বিজেপি সভাপতি পর্যন্ত কেউই কম নন। তাই শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক তরজা উত্তেজনার কোন মাপকাঠিতে গিয়ে পৌঁছয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!