প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  লকডাউনের পরবর্তী সময়ে ভার্চুয়াল সভার উপর সবথেকে বেশি জোর দিয়েছিল বিজেপি। মানুষের কাছে তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল যে, তারা কোনোমতেই সামাজিক দূরত্বকে ভঙ্গ করছে না। সমস্ত নিয়ম মেনে ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরছেন। তবে শুরুটা তো সবাই করে, শেষ পর্যন্ত তাকে নিয়ে যেতে পারে কয়জন! হয়ত বিজেপি সামাজিক দূরত্বকে মান্যতা দিয়ে যে পদ্ধতি নিয়েছিল, তা অত্যন্ত সাধুবাদযোগ্য হয়ে উঠেছিল সকলের কাছে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কর্মসূচিতে রীতিমত ভিড় উপচে পড়ল দুর্গাপুরে। সূত্রের খবর, এদিন দুর্গাপুরের মেইন গেট এলাকায় সকাল বেলা চায়ে পে চর্চার অংশ নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর সেখানেই সকলকে করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে সামাজিক দূরত্ব পালনের কথা বলেন তিনি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে প্রথমদিকে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সেই সামাজিক দূরত্ব পালনের বিষয়টি দেখা গেলেও, যত বেলা বাড়তে থাকে, ততই ভীড় উপচে পড়তে থাকে। যার ফলে বিন্দুমাত্র নিয়ম পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তবে শুধু দুর্গাপুর নয়, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরেও দিলীপ ঘোষের গাড়ি পৌঁছতেই কর্মী-সমর্থকদের ভিড় লেগে যায়।

স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি কর্মসূচিতে করোনা ভাইরাসের সময় এই জনসমাগম কেন, এখন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাল্টা ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বারবার বলা সত্ত্বেও কেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হল না? একাংশের মতে, যে বিজেপি তৃণমূলের রাস্তায় নামা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলছে, সেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি কর্মসূচিতে গিয়ে দলের কর্মী-সমর্থকদের সতর্কবাণী দেওয়া সত্ত্বেও, যেভাবে তারা বিন্দুমাত্র নিয়ম মানলেন না, তাতে এবার বিজেপির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে সরব হবে তৃণমূল কংগ্রেস, এটাই স্বাভাবিক।

এদিন এই প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে ক্রমাগত আমাদের দিকে অভিযোগ করছেন দিলীপবাবু। অথচ তার কর্মসূচিতে যা হয়েছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন।” তবে বিজেপির অবশ্য দাবি, কর্মী-সমর্থকরা যদি আসে, তাহলে তাদের কিভাবে ফেরানো যাবে! তিনটি জায়গাতেই সচেতনতা পালন করে সকলের মুখে মাস্ক পরা ছিল।

আর এই গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন তীব্র শোরগোল তৈরি হয়েছে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর এবং দুর্গাপুর এলাকায়। এতদিন দিলীপবাবু এবং তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি লকডাউন ঠিকমত পালন করা হচ্ছে না বলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু এবার যেভাবে দিলীপবাবুর কর্মসূচিতে বিজেপি নেতা কর্মীদের বিন্দুমাত্র সামাজিক দূরত্ব পালন করতে দেখা গেল না, তাতে ব্যাপক চাপে পড়ল ভারতীয় জনতা পার্টি বলেই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।