এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বাংলায় হলে গায়ে লাগে না! দিল্লিতে তৃনমূল যেতেই টনক নড়লো শাহ-নাড্ডার! আসল খেলা শুরু!

বাংলায় হলে গায়ে লাগে না! দিল্লিতে তৃনমূল যেতেই টনক নড়লো শাহ-নাড্ডার! আসল খেলা শুরু!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এতদিন বিজেপি কর্মীদের মধ্যে থেকেও একটা অভিযোগ উঠছিল যে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলা নিয়ে খুব একটা সিরিয়াস নয়‌‌। শুভেন্দু অধিকারী যখন একা লড়াই দিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে রাজ্য বিজেপির যারা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী, তারা সেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলন সংঘটিত করতে পারছেন না। বাংলায় বিজেপি কর্মীরা মার খাচ্ছেন, তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। কিন্তু সেই দিকে কোনো মনোযোগ নেই কেন্দ্রীয় বিজেপির। তা না হলে তারা কবেই বাংলার বিরুদ্ধে বড় কোনো পদক্ষেপ নিয়ে নিতেন। কিন্তু এবার অবশেষে টনক নড়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপির। কারণ, দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্ণা কর্মসূচি রয়েছে। তাই সেই কর্মসূচিকে কি করে রাজনৈতিকভাবে জব্দ করতে হয়, তার জন্য রাজ্য বিজেপির সভাপতি সহ প্রত্যেকটি সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের তলব করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।

প্রসঙ্গত, বাংলার প্রতি বঞ্চনা হচ্ছে, এই অভিযোগে দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচির আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলা থেকে তারা কর্মীদের নিয়ে গিয়েছে। এমনকি নেতা, মন্ত্রীরাও সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন। আর এতেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। রাজ্য সভাপতি সহ বাংলার যারা বিজেপি সাংসদ রয়েছেন এবং যারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রয়েছেন, তাদের সকলকে তলব করা হয়েছে। যতদূর খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, তৃণমূলের এই কর্মসূচির পাল্টা বিজেপির পক্ষ থেকে কর্মসূচি বেঁধে দেওয়া হবে। অর্থাৎ বিজেপি তৃণমূলের এই বঞ্চনার অভিযোগে পাল্টা হিসেবে রাজ্যে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেই তথ্য তুলে ধরে আন্দোলনে নামবেন।কিন্তু এখানেই প্রশ্ন, দিল্লির বুকে তৃণমূল আন্দোলন করছে, আর তা নিয়েই চিন্তিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। কিন্তু রাজ্যে যখন বিজেপি কর্মীরা প্রতিমুহূর্তে তৃণমূলের প্রশাসনের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন, চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের, তখন কেন চুপ থাকে কেন্দ্রীয় বিজেপি? যদি দিল্লিতে তৃণমূলের এই কর্মসূচীর মত বাংলা নিয়েও সিরিয়াস হতেন কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতৃত্ব তাহলে বাংলার বিজেপি কর্মীদের এতটা দুরাবস্থা হত না বলেই মত একাংশের।

অনেকে আবার এটাও বলছেন যে, তৃণমূলের এই কর্মসূচি কতটা সফল হবে, কতটা ব্যর্থ হবে, সেটা অনেক পরের বিষয়। কিন্তু দিল্লির বুকে এই ধরনের একটা পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।কেননা নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের নজরে আনা উচিত ছিল যে, তৃণমূল কতটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন দল। দিল্লীর মাটিতেই তারা এই ধরনের আন্দোলন করছে। তাহলে বাংলায় তারা কিভাবে বিজেপি কর্মীদের মারধর করে, তাদের ওপর অত্যাচার করে, এই বিষয়টি হয়ত এতদিন উপলব্ধি করতে পারছিলেন না নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের মত নেতারা। তবে এবার যখন দিল্লিতে তৃণমূল কর্মসূচি করতে চাইছে, তখন তাদের হাঁসফাস উঠে গিয়েছে। নিজের গড় বাঁচানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। যার ফলে এবার অন্তত আসল খেলাটা শুরু হবে বলেই আশা প্রকাশ করছেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দিল্লিতে তৃণমূলের এই সক্রিয়তা দেখে এবার বাংলা নিয়ে ভাবতে শুরু করবে কেন্দ্রীয় বিজেপি। আর যদি তারা বাংলা নিয়ে একবার সিরিয়াস হয়ে যায়, তাহলে আগামী দিন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের কাছে তা অত্যন্ত চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ যে যাই বলুন না কেন, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা কেন্দ্রীয় বিজেপির ভূমিকা নিয়ে ভীষণ হতাশ। কর্মীদের পাশে ওপরতলার নেতারা কেন থাকছেন না, সেই অভাব, অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেকে আবার বলছেন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বিজেপির ওপর তলার একটা সেটিং রয়েছে। ফলে এইসব অভিযোগ নস্যাৎ করে দিতে এবার কেন্দ্রীয় বিজেপিকে ময়দানে নামতেই হবে। তা না হলে দিল্লিতে তৃণমূলের এই কর্মসূচির পরেও যদি বাংলা নিয়ে সিরিয়াস না হয় কেন্দ্রীয় বিজেপি, তাহলে তাদের আর কিছু বলার নেই। এভাবেই চলতে থাকলে আগামী দিনে লোকসভায় বাংলা থেকে বিজেপির শুন্য পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে নিজের শক্তি দেখাতে কেই না চায়! আগামী দিনে লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই সমস্ত রাজ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাই দিল্লিতে তৃণমূলের এই কর্মসূচির পর বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি যে তৃণমূলকে চাপে রাখার আসল খেলা শুরু করবে, তাতে এক প্রকার নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!