এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > ভাঙড় আন্দোলনের সুষ্ঠু সমাধানের জন্য এবার অন্যরকম ভাবনা-চিন্তা প্রশাসনের

ভাঙড় আন্দোলনের সুষ্ঠু সমাধানের জন্য এবার অন্যরকম ভাবনা-চিন্তা প্রশাসনের


ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রীড বিরোধী আন্দোলনে বরাবরই উওাল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। দফায় দফায় গ্রেফতার হয়েছে প্রশাসন বিরোধী আন্দোলনের নেতারা। তবুও এলাকার গনমুখী আন্দোলনকে কিছুতে দমাতে পারছে না প্রশাসন। এবার তাই সম্পূর্ণ ভিন্ন পথ বেছে নিচ্ছে রাজ্যসরকার প্রশাসন বিরোধী মানুষগুলোকে বাগে আনতে। সরাসরি সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে চাইছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎের সাব স্টেশান তৈরি হলেও সেখানের মানুষের জমি,জিবীকা,বাস্তুতন্ত্র যে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি বরং তাদের সামগ্রিক উন্নয়নই হয়েছে এটাই সোজাসাপ্টা ভাষা বোঝাতে ময়দানে নেমে পড়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে দুবার বৈঠকও হয়ে গেছে। এবং তাঁদের কথার প্রমাণ স্বরূপ ‘আলোর ভূবন’ নামক একটি আট পাতার রঙিন পুস্তিকা তৈরি করেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জেলা প্রশাসন। এটাই তুলে দেওয়া হবে পাওয়ার গ্রিড এলাকার মাছিভাঙা,খামারআইট,টোনা প্রমুখ এলাকার  বাসিন্দাদের।

উল্লেখ্য,পুস্তিকাটির প্রচ্ছদে আছে খামার আইট এবং মাছিভাঙা গ্রামের সবুজ ধানক্ষেতের ছবি। গ্রামের একজন মা বিশ্বজয়ী হাসি নিয়ে সেই খেতের আলপথের উপর বসে আছে। তাঁর কোলে ও পাশে বসে এক শিশু ও শিশুকন্যা। তারাও খুশির জোয়ারে ভাসছে। আর পিছন থেকেই জমি দিয়ে হেঁটে আসছেন এক কৃষকভাই। অনেকটা পিছনে রয়েছে পাওয়ার গ্রিডের তৈরি সাব স্টেশন। প্রচ্ছদের মাঝখান বরাবর লেখা রয়েছে বিদ্যুৎ নিয়ে প্রয়োজনীয় কথাগুলো।

এ প্রসঙ্গে,জেলাশাসক ওয়াই রত্নকার রাও-এর সূত্র থেকে জানা যায়, ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আট থেকে আশি সকলের মধ্যেই বিভিন্ন কারণে ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। এর জন্য তিনি বিভ্রান্তিমূলক প্রচারকেই দায়ী করছেন । এই ভুল ধারণা দূর করতেই প্রশাসনের তরফ থেকে পুস্তিকাই তৈরি করা হয়েছে। এর প্রতিটি পাতায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলা—যেমন হুগলির আরামবাগের সুশান্ত খান, পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলাশোলের সন্তোষ কর্মকার, পশ্চিম বর্ধমানের বাসুদেবপুরের অপর্ণা হালদার, পূর্ব বর্ধমানের রায়নার আতাউর রহমান, মুর্শিদাবাদের পঞ্চাননপুরের গোপী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের এলাকায় বিদ্যুতের সাব স্টেশন হওয়ার জন্য জীবন ও জীবিকার কীভাবে উন্নয়ন হয়েছে সে বিষয়ই তুলে ধরা হয়েছে।পুস্তিকাটিতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে কেন শহর থেকে দূরে কেন সাব স্টেশন করা হয়। এবং সে ব্যাপারে রয়েছে তথ্যসহ উদাহরণও। যেমন আরামবাগ ৪০০ কেভি সাব স্টেশন নাম হলেও তা তৈরি হয়েছে সেখান থেকে ২০ কিলোমিটারের বেশি দূরে গ্রামীণ এলাকায়। দুর্গাপুর শহর নামে হলেও সেখানকার ১০০ কেভি সাব স্টেশন তৈরি হয়েছে দশ কিলোমিটার দূরে। এছাড়া খড়্গপুর, জামশেদপুর, বহরমপুর তিনটি শহর থেকে অনেক দূরে গ্রামীণ এলাকায় তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেখানের মানুষ এর জন্যে কোনো বিরোধ করেননি। আর পৃথিবীর সব জায়গাতে আইন মেনে এবং মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই সাব স্টেশন ও মাথার উপর দিয়ে তার টানা হয়। ভাঙড়ের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের সেই আইন মেনে বিদ্যুতের লাইন টানা, টাওয়ার তৈরি ও অন্যান্য কাজ করা হবে।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

——————————————————————————————-

 এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

কীভাবে তার রূপায়ণ হবে সে ব্যাপারেও জেলা প্রশাসনের সূত্র থেকে জানা গেল। সাধারণত,৪০০ কেভি লাইনের জন্য আইন অনুসারে উপর দিকে ২৪ ফুট আর পাশাপাশি ১৮ ফুট ছাড় দেওয়া হয়। সেইখানে ভাঙড়ের মানুষ,বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই উপরদিকে ৩০ ফুট ও পাশাপাশি ২০ ফুট ফাঁকা রেখে লাইন টানা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। এর পাশাপাশি এটাও জানানো হয় যে আগে চারটি লাইন টানার কথা বলা হলেও এখন শুধু দুটো লাইনই টানা হবে। এছাড়া পুস্তিকাটিতে আরো উল্লেখ আছে, এ পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবেই এলাকাবাসীর নিরাপত্তার দিকটি চিন্তা করেই করা হয়েছে। বর্তমানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যে মানুষের কোনো ক্ষতি করবে না সেটাও যুক্তি সহকারে বোঝানো আছে পুস্তিকাটিতে। এবার শুধু মানুষকে সঠিকটি বুঝে প্রশাসনের হাত ধরতে হবে উন্নয়নের কথা চিন্তা করে। জানা গেছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পুস্তিকাটি ছড়িয়ে দেওয়া হবে এলাকাবাসীর মধ্যে। প্রশাসনের তরফ থেকে আশা করা হচ্ছে,তাঁদের এই উদ্যোগ এবার সফল হবেই। এলাকাবাসী প্রশাসনের ডাকে সাড়া দেবে। এমনটাই জানা যাচ্ছে রাজনৈতিক সূত্রের খবর থেকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!