বিধানসভার আগে ক্ষোভের ক্ষতে মলম দিতেই কি দিদির ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকে ছিটকে গেলেন ‘দাদা-ভাই’? কলকাতা রাজ্য July 24, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –এককালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। যখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে যেতেন, তখনই সাথে দেখা যেত অরূপ বিশ্বাসকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা এতটাই বেশি ছিল যে, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার দায়িত্ব রাজ্যের এই হেভিওয়েট মন্ত্রীর কাঁধে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। বলা বাহুল্য, তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা হওয়ার কারণে তৃণমূল নেত্রীর সাথে এবং পাশে যাদের দেখা যায় তাদের কাছেই কর্মীরা বেশি অভাব অভিযোগ তুলে ধরেন। কারণ কর্মীদের বিশ্বাস যে, সেই নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে, তাদের কথা নেত্রীর কাছে পৌঁছে দেবেন। স্বভাবতই অরূপ বিশ্বাসের একটি শক্তিশালী ভিত তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে অরূপ বিশ্বাসের ডানা ছেটে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, দলের সাত সদস্যের যে কোর কমিটি হয়েছে, সেখানে কোনো জায়গা হয়নি অরূপ বিশ্বাসের। শুধু তাই নয়, অরূপবাবুর ভাই স্বরুপবাবুকেও দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দাদা এবং ভাই দুজনেই এদিনের বৈঠকে গুরুত্ব অনেকটা কমিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন এমনটা হল? হঠাৎ করে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষেপে গেলেন অরুপ বিশ্বাসের উপর? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জানা গেছে, গত লোকসভা ভোটে অরূপ বিশ্বাস যে সমস্ত এলাকার দায়িত্বে ছিলেন, সেই সব জায়গাতেই পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে হুগলি, এবং দুই বর্ধমানে ভালো ফল করতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। আর এরপরেই অরূপ বিশ্বাসের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এতগুলো জেলার দায়িত্ব দিলাম। বলেছিলাম ভালো করে কাজ কর। যখনই জিজ্ঞেস করেছি, বলেছিস সব ঠিক আছে। কিন্তু একেবারে ফেল করলি।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ যাওয়ার অভ্যাস সে এলাকার সংগঠন সম্পর্কে তার কাছে সঠিক তথ্য পেশ করেন নি আর যার কারণেই এই এলাকাগুলোতে তৃণমূলের পরাজয় হয়েছে তখন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হচ্ছিল অরূপ বাবু তার গুরুত্ব অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আর এবার সরাসরি তার ডানা ছেঁটে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে কলকাতা দক্ষিণের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পদে থাকা স্বরূপ বিশ্বাসকেও এদিন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে বলছেন, টালিগঞ্জের সমস্যা নিয়ে ক’দিন আগেই নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আর্টিস্ট ফোরাম এবং টেকনিশিয়ানদের বিবাদ শুরু হয়। আর সেই সময় নিজের ক্ষোভ উগরে দেন স্বরুপ বিশ্বাস। আর তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরুপ বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “মাথা ঠান্ডা করে কথা বলো স্বরুপ।” এছাড়াও অরূপবাবু এবং স্বরূপবাবুর জন্য টালিগঞ্জ থেকে প্রচুর অভিনেতা-অভিনেত্রী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে বলেও নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠছিলো। স্বাভাবিক কারণেই এই সমস্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করেই এবার দুই ভাইয়ের ক্ষমতা লোপ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝিয়ে দিলেন যে, কাজটাই আগে, দল আগে-তার কাছে ঘনিষ্ঠ বলে কেউ নেই। সব মিলিয়ে এখন দলে অনেকটাই গুরুত্ব কমে যাওয়ার পর “বিশ্বাস ব্রাদার্স” কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -