এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিপ্লবকে বিজেপিতে নিয়ে কতটা লাভ হচ্ছে! তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে

বিপ্লবকে বিজেপিতে নিয়ে কতটা লাভ হচ্ছে! তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে


তৃণমূলে থাকার সময় বিপ্লব মিত্রর অনুগামীরা দাবি করতেন যে, দক্ষিণ দিনাজপুরে বিএম অর্থাৎ বিপ্লব মিত্রই শেষ কথা। তবে যে যাই বলুন না কেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় আর যে বিএম নয়, এখন সিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে শেষ কথা, তা জেলার রাজনীতিতে একের পর এক সমীকরণে স্পষ্ট হয়ে যেতে শুরু করল।

বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে জেতানোর জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্রকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিপ্লববাবু সেই দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।

উল্টে অর্পিতাদেবী প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক মন্তব্য করতে শোনা গেছে সেই বিপ্লব মিত্রকে। যার ফলস্বরুপ দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে শেষ পর্যন্ত হারতে হয়েছে অর্পিতা ঘোষকে। তবে ফলাফল পর্যালোচনা বৈঠকে সেই বিপ্লব মিত্রের কাছ থেকে সভাপতি পদ কেড়ে নিয়ে অর্পিতা ঘোষকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের নতুন সভানেত্রী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এরপরই গত 24 জুন দিল্লিতে গিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের 10 জন সদস্যকে নিয়ে গেরুয়া শিবিরের উত্তরীয় নিজের গলায় পড়ে নেন বিপ্লব মিত্র।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এর পরেই দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তর থেকে তিনি হুঙ্কার ছাড়েন যে তিনি জেলায় ফেরার সাথে সাথেই তার হাত ধরে সমস্ত পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং পৌরসভাগুলো বিজেপির দখলে আসবে। কিন্তু হুঁশিয়ারি দেওয়াই সার। জেলায় ফিরে তৃণমূল থেকে কোনো জনপ্রতিনিধিকে বিজেপিতে যোগদান করানো তো দূর অস্ত, উল্টে বিপ্লব মিত্রের সাথে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের যে 10 জন সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে প্রায় চার জনের মতো সদস্য অর্পিতা ঘোষের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে আসেন। যাতে সেই বিপ্লব মিত্রের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

এমনকি গঙ্গারামপুর পৌরসভা তাদের দখলে থাকবে বলে বিপ্লব মিত্র আত্মপ্রত্যয়ী হলেও সম্প্রতি সেখানকার অনাস্থা ভোটে হেরে যান তৃণমূল থেকে বহিস্কৃত নেতা তথা গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্ত মিত্র। 11 জন কাউন্সিলার তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ায় প্রবল চাপে পড়েন তারা।

আর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এতোকাল শেষ কথা বলা বিপ্লব মিত্রকে বিজেপি নিজেদের সংগঠন বাড়ানোর জন্য নিজেদের দিকে টানলেও, শেষ পর্যন্ত বিপ্লববাবু যে তার কোনোরুপ ক্যারিশমা দেখাতে পারছেন না, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন একাংশ।

একাংশ বলছেন, দলের পুরোনো কর্মীরা এই বিপ্লব মিত্রর দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। কিন্তু তা সত্বেও বিপ্লব বাবুকে দলে নেওয়া হয়েছে। যাতে কোনো লাভ তো হয়ইনি উল্টে ক্ষতির মুখেই ধাবিত হয়েছে গেরুয়া শিবির। আর বিজেপির অন্দরে বিপ্লব মিত্রকে নিয়ে এই ধরনের প্রশ্ন উঠতে শুরু করলে এখন প্রবল চাপে পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, “বিপ্লব মিত্রকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলে নিয়েছে। আমাদের কাজ নেতৃত্বের নির্দেশ মানা। উনিও চেষ্টা করছেন। তবে বিজেপিতে কোনো ব্যক্তির থাকা না থাকা দলের উপরে কোনোরুপ প্রভাব ফেলে না।”

এদিকে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিজেপিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করলে দিনে প্রসঙ্গে তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র বলেন, “আমি রাজ্য সরকারের থাবা থেকে 10 জন জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এসে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। তাদের ধরে রাখার দায়িত্ব আমার একার নয়। তাদেরকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে সাময়িকভাবে তৃণমূল নিতে পেরেছে, কিন্তু সঠিক সময়ে তারা আবার বিজেপিতে ফিরে আসবেন। জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে থাকবে। আর যেভাবে পুলিশ দিয়ে ভোট করা হল, তারপরে এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না। তবে এইসব করে আমায় কেউ দমাতে পারবে না।”

কিন্তু মুখে যতই তর্জন গর্জন দিন না কেন বিপ্লব বাবু, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনি যে বড় মাপের সাফল্য এখনও পর্যন্ত পাননি, তা আড়ালে-আবডালে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হচ্ছেন সেই বিপ্লব মিত্রের অনুগামীরাও। তবে ভবিষ্যতের কথা নির্দিষ্টভাবে বর্তমানে বলতে পারেন না কেউই। আর তাইতো দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা তথা বর্তমান বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র তার রাজনৈতিক রণকৌশলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে কিভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির অবস্থার উন্নতি করেন! এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!