এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > বিজেপি বিধায়কদের ইস্তফা ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা? উপনির্বাচনে ভরাডুবির শঙ্কা গেরুয়া শিবিরের?

বিজেপি বিধায়কদের ইস্তফা ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা? উপনির্বাচনে ভরাডুবির শঙ্কা গেরুয়া শিবিরের?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার ক্ষমতা দখলের ব্যাপারে কার্যত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের পর তাদের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। উল্টে দুই অঙ্কের সংখ্যা পার হতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। 77 টি আসন দখল করে কোনোরকমে বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে তারা। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষ থেকে সঠিক প্রার্থী না পাওয়ার কারণে তারা অনেক সাংসদদের বিধানসভার প্রার্থী করেছে বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে আক্রমণ করা হয়েছিল।

এমনকি যারা সাংসদ হিসেবে বিধানসভার প্রার্থী হয়েছেন, তারা যদি জয়লাভ করেন, তাহলে তারা আবার সাংসদ হয়ে সেই এলাকার মানুষকে প্রতারিত করবেন বলেও অভিযোগ করেছিল ঘাসফুল শিবির। তবে তৃণমূলের সেই কথাই কি সত্যি হতে চলেছে? ইতিমধ্যেই দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দিনহাটার নিশীথ প্রামানিক এবং শান্তিপুরের জগন্নাথ সরকার। তারা দুজনেই সাংসদ থাকবেন বলে খবর। আর বুধবার শান্তিপুরের বিজেপি বিধায়ক জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন শান্তিপুরের মানুষ।

একাংশের প্রশ্ন, তারা অনেক কষ্ট করে ভোট দিয়ে জগন্নাথ সরকারকে বিধায়ক করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও সাংসদ থাকতে চাওয়ার কারণে তিনি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিধায়ক পদ ছেড়ে সাংসদ পদে থাকা জগন্নাথ সরকারের এই উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়ায় রীতিমতো বাড়তি হাতিয়ার এবং অক্সিজেন পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন রীতিমত সরগরম এলাকা।

বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, শুধুমাত্র পদ এবং লোভের কারণে শান্তিপুরের মানুষকে অপমান করেছেন জগন্নাথ সরকার। বিধায়ক হিসেবে তিনি ইস্তফা দিয়ে এলাকায় আবার নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। করোনা ভাইরাস যখন বাড়ছে, তখন বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে না পেরে জগন্নাথ সরকারের এইভাবে ইস্তফা দিয়ে সাংসদ পদ থেকে যাওয়াকে কার্যত ভালো চোখে নিতে পারছে না সাধারণ মানুষ।

এদিন এই প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দা দিব্যেন্দু দাস এবং সুশান্ত ঘোষ বলেন, “জগন্নাথ সরকার এমপি পদ ছেড়ে দিতে রাজি নন। তাহলে তিনি কেন বিধায়ক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন, বুঝতে পারছি না। আমরা চাই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বিজেপি যেন কোনোভাবেই প্রার্থী না দেয়। মানুষের রায় নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা না করলেই ভালো করত ভারতীয় জনতা পার্টি।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে ভারতীয় জনতা পার্টি শান্তিপুরে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেল।

মানুষের রায় মাথায় নিয়ে বিজেপি প্রার্থী এখানে জয়লাভ করার পরেও, যেভাবে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিলেন, তাতে মানুষ এটাকে খুব একটা ভালো চোখে গ্রহণ করেননি। এমনকি বিজেপির জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার কারনে এই শান্তিপুরে আবার বিধানসভা উপনির্বাচন হবে। ফলে সেই উপনির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করার চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষ বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতারণা করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে উপনির্বাচনে আদৌ ভারতীয় জনতা পার্টিকে সমর্থন করবেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে। তাই সেই পরিস্থিতিতে এখন বিজেপি যে এই শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায়, তা বলাই যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে শান্তিপুর শহর তৃণমূল সভাপতি অরবিন্দ মৈত্র বলেন, “শান্তিপুরের বিধানসভার প্রতিটি ভোটারের সঙ্গে বিজেপির প্রতারণা করেছে। মানুষকে মিথ্যে বুঝিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী হয়ে শান্তিপুরের জন্য কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ না হওয়ার কারণে এমপি পদের মোহ ছাড়তে পারলে না নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। মানুষের বিশ্বাসের সঙ্গে তিনি কেন প্রতারণা করেছেন? এর জবাবদিহি তাকে করতে হবে।”

পর্যবেক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই তো তাই। যদি তিনি বিধায়ক হিসেবে থাকবেন না বলেই মনস্থির করে থাকেন, তাহলে কেন তিনি নির্বাচনী লড়াই করলেন? এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বহু কষ্ট করে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে ভোট দিয়েছিলেন বলেই তো জগন্নাথ সরকার বিধায়ক হয়েছিলেন।

কিন্তু তার পরেও মানুষের রায়কে অপমান করে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে সাংসদ পদে তার থেকে যাওয়া যে সাধারণ মানুষের মনে কিছুটা হলেও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, তা এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে শান্তিপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির ভালো ফল করা খুব একটা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!