এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বিজেপি জন্যেই এত কড়াকড়ি ! স্পিকারের মন্তব্যে নয়া বিতর্ক, সোচ্চার বিরোধীরা !

বিজেপি জন্যেই এত কড়াকড়ি ! স্পিকারের মন্তব্যে নয়া বিতর্ক, সোচ্চার বিরোধীরা !


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রতিনিয়ত গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছেন, রাজ্যকে রসাতলে পাঠাচ্ছেন, ঠিক একই অবস্থা রাজ্য বিধানসভার। বকলমে মুখ্যমন্ত্রী যা বলে দিচ্ছেন, সেটাই করছেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ। এটা আজকে নতুন করে বলার মত অবকাশ নেই যে, রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কাজ করছেন শাসকদলের কথা মতই। কারণ তার একের পর এক বক্তব্য এবং একের পর এক পদক্ষেপ ক্রমাগত প্রশ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিরোধীদের কাছে। তবে বিরোধীদের ন্যায় সঙ্গত দাবিতে এই রাজ্যে বিধানসভার অধ্যক্ষ কান না পাতলেও আজ তিনি সেই অধিবেশন করতে কিছু কথা বলেছেন। আর তার সেই বক্তব্য নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিরোধীদের মধ্যে।

অনেকে বলছেন, শাসকদলের বেশিরভাগ বিধায়ক যখন দিনের পর দিন বিধানসভায় উপস্থিত থাকেন না, যখন তাদের প্রশ্নপত্র জমা থাকে, কোথায়! তখন তো এইরকম কড়া বক্তব্য, এইরকম নীতি কথা শোনা যায় না রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষের গলায়! শুধুমাত্র বিজেপি বিধায়কদের সংখ্যা সেখানে একটু বেশি রয়েছে বলে, বিজেপি বিধায়করা অন্য একটা বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছেন বলেই, তাদের খুঁত ধরার জন্যই কি রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষের এই ধরনের পদক্ষেপ? কিন্তু কি এমন হয়েছে! কি বলেছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়?

প্রসঙ্গত, আজ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে বেশ কিছু বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন। আর সেখানেই তাদের প্রশ্ন জমা দেওয়া সত্ত্বেও, তারা অনুপস্থিত দেখে কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে যান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যার মধ্যে ছিলেন তিন জন বিজেপি বিধায়ক এবং একজন তৃণমূল বিধায়ক। আর তখনই অধ্যক্ষ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন যে, এরপর থেকে যদি কোনো বিধায়ক প্রশ্নপত্র জমা দিয়েও অধিবেশনে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে তারপর দুই থেকে তিন দিন তার কোনো প্রশ্ন জমা নেওয়া হবে না। অনেকে বলছেন, আজকে বিরোধী দল নারী নির্যাতন নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল। কিন্তু বিধানসভার অধ্যক্ষ তাতে সায় দেয়নি। ফলে তারা বিরোধিতা করেছে, তারা বাইরে বেরিয়েছে, প্রতিবাদ করেছে। আর সেই কারণেই কি বেছে বেছে এই সময়টাকে নিয়ে তাদের প্রশ্নগুলোকে এখন করার সুযোগ বেছে নিয়ে যাতে বিজেপি বিধায়কদের অনুপস্থিতিকে হাতিয়ার করে কিছু কড়া বার্তা দেওয়া যায়, সেটাই করতে চাইলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়?

বিজেপির বেলাতেই কি যত কড়া আইন খুঁজে পায় এই রাজ্যের শাসক দল? যদি এই আইন লিখিতভাবে লাগু করে রাজ্য বিধানসভা বা বিধানসভার অধ্যক্ষ, তাহলে তৃণমূল হোক বা বিজেপি, সকল বিধায়কদের জন্যই এই ধরনের আইন এনে সকলের বিধানসভায় উপস্থিতি এবং অধিবেশনে অংশ নেওয়ার বাধ্যতামূলক পরিবেশ তৈরি করা উচিত বিধানসভার অধ্যক্ষের। তিনি একটি পক্ষকে শুধুমাত্র দায়ী করে যাবেন, আর শাসক দলের বিধায়ক হয়ে তিনি স্পিকার হয়েছেন জন্য তাদের প্রতি দয়া দক্ষিণ দেখাবেন, দুটো নিরপেক্ষতার দৃষ্টি রাখে না বলেই দাবি একাংশের।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে সোচ্চার হতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, বিধানসভার অধ্যক্ষ দলদাসের মত আচরন করেন। তা না হলে বিরোধীদের সম্মানটুকু দেওয়া হত। সব জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি রেখে তৃনমূলের সুবিধা করেই নিজের মতামত দেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নিয়ম যদি লাগু হয়, তাহলে তা সকলের জন্যই হওয়া উচিত। বিধানসভায় সকলের অংশগ্রহণ কাম্য। কিন্তু তৃনমূলের বিধায়কদের ছাড় দেওয়া হলে সমবেত প্রতিবাদ হবে বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি মুহূর্তে নিজের দলদাস ভাবমূর্তির পরিচয় দিয়েছেন। বিরোধী শিবিরকে কি করে চাপে রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করে গিয়েছেন তিনি। যার ফলে তার চেয়ারের মর্যাদাও প্রতি মুহূর্তে নষ্ট হয়েছে।‌ সেক্ষেত্রে প্রশ্ন যারা করবেন, সেই সমস্ত বিধায়কদের অনুপস্থিতি না থাকাটাই অস্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু বিজেপি বিক্ষোভ করছে বলেই কি সেই সুযোগে বিজেপি বিধায়কদের জব্দই করতেই এত বড় বড় কথা বলছেন অধ্যক্ষ! তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, বিধানসভার ভেতরে বিরোধীদের কথা বলতে দিচ্ছেন না কেন স্পিকার? যদি বিজেপি বিধায়করা ভেতরে কথা বলতে পারতেন, তাহলে তো তাদের বাইরে বেড়িয়ে প্রতিবাদ যেমন করতে হত না, ঠিক তেমনই তারা এই প্রশ্নোত্তর পর্বেও অংশ নিতে পারতেন। ফলে নিজের ভূমিকাকে ঠিক করে এবং কড়া নিয়ম যদি হয়, তাহলে তা সকলের জন্যেই সমান ভাবে লাগু করা উচিত বিধানসভার অধ্যক্ষের। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!