এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপির পাশাপাশি মিমও তৃণমূলের ঘুম ওড়াতে চলেছে! স্পষ্ট শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যেই

বিজেপির পাশাপাশি মিমও তৃণমূলের ঘুম ওড়াতে চলেছে! স্পষ্ট শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যেই


 

বিগত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তৃণমূল কংগ্রেসের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু বিগত দিনে বামফ্রন্ট কংগ্রেস থাকলেও, বর্তমানে নীচুতলার তৃণমূল কর্মী থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যন্ত কারোর মুখে আক্রমণের জায়গায় বাম বা কংগ্রেসের নাম থাকে না। এক্ষেত্রে ছোটো মেজো, বড় সকল নেতাদের আক্রমণের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

কিন্তু আগামী দিনে ভারতীয় জনতা পার্টির পাশাপাশি এআইএমআইএম যে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ হতে যাচ্ছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। যার প্রকাশ পাওয়া গেল শনিবার মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য থেকে।

সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে এদিন সংশোধিত নাগরিক আইন এবং এনআরসি বিরোধিতা করে জনসভার আয়োজন করে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তৃণমূলের অন্যতম হেভিওয়েট নেতা তথা রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

এদিনের সভায় জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি চোখে পড়ে দলের সদস্যদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণ এবং মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের এদিনের সভায় দীর্ঘক্ষন বক্তব্য রাখতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে। আর এদিন নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুর্শিদাবাদে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী জাতীয় কংগ্রেসকে প্রথমে আক্রমণ করতে দেখা যায় শুভেন্দুবাবুকে। তবে কংগ্রেসকে আক্রমণ করার পাশাপাশি এদিনের সভা থেকে নাম না করে এআইএমআইএমকে জোরালো আক্রমণ শানান পরিবহনমন্ত্রী। নবগ্রামের ভোলাডাঙ্গা মাঠে এদিন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে জনসভার আয়োজন করা হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সভার শুরুতেই শুভেন্দুবাবু বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীকে আক্রমন করে বলেন, “যারা লোকসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে হেরেছে, তারা ঘোলাজলে মাছ ধরতে চাইছে। রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কাগান্ধীর এসপিজি সুরক্ষা তুলে নেওয়া হচ্ছে। অথচ অধীর চৌধুরীর নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

পাশাপাশি সভা থেকে ষষ্ঠদশ লোকসভা কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের উদাহরণ তুলে শুভেন্দুবাবু বলেন, “মল্লিকার্জুন খাড়গেও লোকসভার দলনেতা ছিলেন। কিন্তু তিনি এতও নিরাপত্তাবাহিনী পেতেন না। বহরমপুরের সংসদ সদস্য চারদিকে ঘুরে ঘুরে উস্কানি দিচ্ছেন। আমাদের দলের ব্লক সভাপতির বাড়িতে ভাঙচুর করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে হামলা করা হয়েছে। বিজেপির সঙ্গে ওর সেটিং আছে। আমরা সব জানি। তিনি যেন কাঁচের ঘরে বসে ঢিল না মারেন।” এদিনের সভা থেকে এই পরামর্শই অধীরবাবুকে দেন শুভেন্দু অধিকারী।

কিন্তু উল্লেখযোগ্যভাবে সভা থেকে কংগ্রেস এবং বিজেপি পাশাপাশি অন্য রাজ্য থেকে আসা একটি রাজনৈতিক দলকে নাম না করে আক্রমণ করেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, “একটি পার্টি সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভাজন করতে চাইছে। ঝাড়খন্ডে ওরা হেলিকপ্টারে চড়ে সভা করেছিল। ওখানকার মানুষ ওদের ফিরিয়ে দিয়েছে। আপনারাও ওদের থেকে দূরে থাকবেন। যারা বাস-ট্রেন জ্বালিয়েছে, তাদের থেকে দূরে থাকুন। বাংলার উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। আর কাউকে দরকার নেই।”

জানা যায়, শুভেন্দুবাবুর পাশাপাশি এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ এনায়েতুল্লা, স্থানীয় বিধায়ক কানাই মন্ডল, মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আবু তাহের সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে আক্রমণ করার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সুনাম করে এদিনের সভা থেকে পরিবহন মন্ত্রী বলেন, “বাংলার মানুষকে গ্যারান্টি দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি থাকতে বাংলায় এনআরসি হবে না। গণতান্ত্রিকভাবে আমরা আন্দোলন করছি। কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলা আমাদের দেশের পরম্পরা। সেটা বজায় রাখতে হবে। বিজেপি হাজার চেষ্টা করলেও বিভাজন করতে পারবে না। সারাদেশের মানুষ ওদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে।”

বস্তুত এদিন সভার আগেই সুতিতে গিয়েছিলেন পরিবহনমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কিছু পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণও তুলে দেন পরিবহনমন্ত্রী। বক্তব্যের শেষে শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেন, সংশোধিত নাগরিকায়ন ইস্যুতে জেলায় লাগাতার কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। আগামী 24 ডিসেম্বর ডোমকল এলাকায় তিনি সভা করবেন বলে জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বাংলার রাজনীতিতে ভারতীয় জনতা পার্টি যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষ, তেমনই ভিন রাজ্যের রাজনৈতিক দল এআইএমআইএমও তৃণমূলের পক্ষে সমান বিপজ্জনক। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাংকের অন্যতম ভিত্তি রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক। এক্ষেত্রে এআইএমআইএম যদি সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকে থাবা বসাতে সক্ষম হয়, তাহলে আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষেত্রে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ শক্তিশালী করা যথেষ্ট প্রশ্নের মুখে পড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!