এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বঙ্গভঙ্গের পেছনে বিজেপি ভাঙ্গনের গুঞ্জন, সূক্ষ্ম পরিকল্পনা মুকুলের? জেনে নিন

বঙ্গভঙ্গের পেছনে বিজেপি ভাঙ্গনের গুঞ্জন, সূক্ষ্ম পরিকল্পনা মুকুলের? জেনে নিন


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজনীতিতে তিনি ভাঙ্গা- গড়ার কারিগর হিসেবেই পরিচিত। যখন যে দলে গিয়েছেন, তখন প্রতিপক্ষ শিবিরের টিম ভাঙ্গার দিক থেকে যে তিনি নিজে ওস্তাদ, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন মুকুল রায়। 2017 সালে বিজেপিতে গিয়ে চার বছর গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে ঘর করলেও 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর আবার নিজের পুরাতন দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন তিনি। আর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মুকুল রায় বলেছেন, অপেক্ষা করুন। অনেকে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা ঘাসফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। আর তারপরেই মুকুল রায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ দিয়ে বিজেপির শেষের শুরু হবে।

স্বাভাবিক ভাবেই মুকুলবাবু যখন এই কথা বলেছেন, ঠিক তখনই উত্তরবঙ্গ ভাগ করার দাবিতে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি তুলেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা। একইভাবে এর কিছুদিন পরেই সম্প্রতি আবার জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যদিও বা বিজেপি নেতৃত্ব এই বাংলা ভাগের দাবিকে সমর্থন করছেন না।

তবে একের পর এক বিজেপি সাংসদ যেভাবে কখনও উত্তরবঙ্গ, আবার কখনও জঙ্গলমহলের জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি জানাচ্ছেন, তাতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর বিজেপির পক্ষ থেকে তারা বাংলা ভাগকে সমর্থন করে না বলার পরেও, জন বারলার পর সৌমিত্র খাঁয়ের দাবিকে কেন্দ্র করে এর পেছনে মুকুল রায়ের পরিকল্পনা রয়েছে বলেই মনে করছেন একাংশ। এক্ষেত্রে মুকুলবাবু তার ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের অর্থাৎ যারা বর্তমানে বিজেপি সাংসদ এবং জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, তাদের মুখ দিয়ে বাংলা ভাগের কথা বলাতে চাইছেন। যার ফলে গেরুয়া শিবির আরও অস্বস্তিতে পড়ে যেতে পারে। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যেতে পারে বিজেপি। তাই বঙ্গভঙ্গের দাবি তুলিয়ে আদতে মুকুল রায়ের বিজেপি ভাঙার কৌশল রয়েছে বলেই দাবি একাংশের।

 

আপনাদের সুবিধার্থে খবরের শেষে বিধানসভা ২০২১ উপলক্ষে আমাদের করা সর্বশেষ সমীক্ষার প্রতিটির লিঙ্ক দেওয়া আছে।

আপনার মতামত জানান -

একাংশের দাবি, জন বারলা এবং সৌমিত্র খাঁ মুকুল রায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সে ষদিক থেকে বিজেপি নেতৃত্ব এই বাংলা ভাগের দাবিতে সহমত পোষণ না করলেও, একের পর এক সাংসদ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি তুলে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যা তৃণমূলের হাতে বাড়তি হাতিয়ার হিসেবে পৌঁছে যাচ্ছে‌। যার ফলে সমালোচক মহলের একাংশ বলছেন, আদতে মুকুলবাবু এই কাজ করাচ্ছেন। পেছন থেকে কলকাঠি নাড়িয়ে তিনি নিজের ঘনিষ্ঠদের দিয়ে রাজ্য ভাগের কথা বলিয়ে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে চাইছেন।

কেননা এর ফলে বিজেপিতে যথেষ্ট চাপ বাড়বে। যারা রাজ্য ভাগের দাবি তুলছেন, তাদের পক্ষে অনেক বিজেপি নেতা এবং জনপ্রতিনিধি চলে যেতে পারেন‌। যার ফলে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যেতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর শেষ পর্যন্ত যদি বিজেপি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়, তাহলে গেরুয়া শিবিরকে চাপে ফেলা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের পর এখন বঙ্গভঙ্গের কৌশল ঠেলে দিয়ে বিজেপি ভাঙার পরিকল্পনা শুরু করেছেন বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য মুকুল রায় বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

 

যদিও বা বিজেপির একাংশের দাবি, এই সমস্ত করে কিছুই করতে পারবেন না মুকুল রায়। কারণ বিজেপি সাংগঠনিক এবং শৃঙ্খলা পরায়ন দল হিসেবে পরিচিত। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে তৈরি পশ্চিমবঙ্গকে কোনোভাবেই ভাঙ্গার পক্ষে নয় ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে বিজেপির অনেকে এই ব্যাপারে যে যুক্তিই দিন না কেন, দলের পক্ষ থেকে অবস্থান স্পষ্ট করার পরেও, কেন হেভিওয়েট সাংসদরা বেলাগাম মন্তব্য করছেন, এটাই অনেকের কাছে প্রশ্নের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর তাই অনেকে বলছেন, এর পেছনে রয়েছে মুকুল রায়ের মস্তিষ্ক। তার পরিকল্পনা মোতাবেক বিজেপির অনেক সাংসদ এখন নিজেদের জেলাগুলোকে নিয়ে পৃথক পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি জানাচ্ছেন।

যা আদতে বিজেপিকেই চাপে ফেলে দেবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। যদিও বা এর পেছনে যদি সত্যিই মুকুল রায়ের পরিকল্পনা থাকে, তাহলে তিনি তার সূক্ষ্ম পরিকল্পনায় কতটা চাপে ফেলতে পারবেন ভারতীয় জনতা পার্টিকে, বঙ্গভঙ্গের দাবি তুলিয়ে দিয়ে বিজেপি ভাঙাতে কতটা সক্ষম হবেন মুকুল রায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!