এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > বিজেপির মন্ডল সভাপতি নির্বাচন ঘিরে চূড়ান্ত অনিয়ম? বৃহত্তর আন্দোলনের পথে বিজেপি কর্মীরা?

বিজেপির মন্ডল সভাপতি নির্বাচন ঘিরে চূড়ান্ত অনিয়ম? বৃহত্তর আন্দোলনের পথে বিজেপি কর্মীরা?


ভারতীয় জনতা পার্টির মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া শিবিরের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। বারাসাত থেকে শুরু করে মেদিনীপুর, মেদিনীপুর থেকে শুরু করে বাঁকুড়া কোথাও বাকি নেই কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ। এমতাবস্থায় যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে রয়েছে পদ্মফুল শিবির নেতৃত্ব, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাঁকুড়া জেলায় মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ প্রদর্শন, তা শান্ত হওয়ার নাম নিচ্ছে না।

ইতিমধ্যেই বাঁকুড়ার রানিবাঁধ বিধানসভা এলাকায় হীড়বাঁধ মন্ডল সভাপতি বদলের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার সকাল বেলা থেকেই ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। পরবর্তীতে আধঘন্টা বিক্ষোভ চলার পরে স্থানীয় বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সুভাষ সরকার গোটা ব্যাপারটা নিয়ে বিজেপির দলীয় নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলে কর্মী-সমর্থকদের তরফ থেকে সাময়িকভাবে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

তবে তাদের দাবি-দাওয়া না মিটলে অচিরেই যে আবার তারা বিক্ষোভ শুরু করবে, সেই হুঁশিয়ারিও প্রদান করা হয়েছে বিক্ষিপ্ত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের তরফ থেকে। এক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের দাবি অবিলম্বে হীড়বাঁধ মন্ডলের সভাপতির পরিবর্তন করতে হবে। এই বিষয়ে বাঁকুড়ার ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, “হীড়বাঁধে কিছু কর্মী এদিন আমার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কিন্তু সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে আমার কিছুই করার নেই।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমি বিষয়টি দলের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানাচ্ছি। পরবর্তী পর্যায়ে তারা যে নির্দেশ দেবেন, আমরা সেই মত কাজ করব।” ভারতীয় জনতা পার্টি সূত্রের খবর, মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রত্যেকটি মন্ডল নির্বাচনেই প্রায় একাধিক নেতৃত্ব মনোনয়নপত্র পেশ করেছিল। বাঁকুড়া জেলার ক্ষেত্রে মোট 25 টি মন্ডলের মধ্যে কুড়িটি মন্ডল সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে একটি পদের জন্য অনেক নেতৃত্বরাই মনোনয়ন পেশ করেছে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য, এই মন্ডলগুলির মধ্যে 12 টি এমন মন্ডল রয়েছে, যেখানে মন্ডল সভাপতি জন্য 10 থেকে 12 জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে নির্বাচনের পরেই কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সাময়িক মনকষাকষি যে চলবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবু আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় জনতা পার্টির সংবিধান অনুযায়ী সর্বসম্মতিক্রমে বা ভোটাভুটি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। বস্তুত, কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই মন্ডল সভাপতি হিসেবে নতুন নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যে কারণে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু অসন্তোষ নয়, ইতিমধ্যেই সভাপতি পরিবর্তনের দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীদেরকে। বাঁকুড়া জেলায় মোট 12 টি মন্ডল সভাপতি পরিবর্তন করা হয়েছে বলে খবর রয়েছে। আর এই 12 টিতছ নতুন নাম আসার সাথে সাথেই অসন্তোষ আরও জোড়ালো আকারে প্রকট হতে থাকে। ইতিমধ্যেই দলীয় কর্মী সমর্থকদের জেলা সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।

আর শুধু হীড়বাঁধ এলাকায় নয়, মন্ডল সভাপতি নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নয় সিমলাপাল, তালডাংরা ইত্যাদি এলাকার বিজেপি কর্মীরা। ইতিমধ্যে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে বিশেষ সূত্রের খবর। এই বিষয়ে হীড়বাঁধ এলাকার মন্ডল সভাপতি নির্বাচনের প্রার্থী তথা প্রাক্তন মন্ডল সাধারণ সম্পাদক চন্ডী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মোট 12 জন এই মন্ডলের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিল। আমাদের মণ্ডলের 70 টি বুথ, 14 টি শক্তি কেন্দ্র রয়েছে।”

তিনি জানিয়েছেন, “এর মধ্যে 60 জন বুথ সভাপতি এবং 10 জন শক্তি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদায়ী তথা দল থেকে ঘোষণা করা মন্ডল সভাপতি গোপাল হেমব্রমকে চান না। তার অভিযোগ, কারও সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা না করেই মন্ডল সভাপতি বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে দলের অভ্যন্তরে তারা অভিযোগ জানিয়েছি।” কিন্তু জেলা নেতৃত্ব থেকে তাদের কথা না শোনার ফলে সংসদ সদস্যের অফিসের সামনে ধর্নায় বসতে বাধ্য হয়েছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বলে জানা গেছে।

পরে অবশ্য সাংসদ সুভাষবাবু ব্যাপারটা নিয়ে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে চালাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এই বিষয়ে তাদের দাবি না মানা হলে আগামীতে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন মন্ডল সাধারণ সম্পাদক চন্ডী চট্টোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দলীয় সংবিধান মেনে যদি নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করা হয়, তবে স্বাভাবিকভাবেই দলের কর্মীদের মধ্যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে।

সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত যে কোনো সংগঠনকে চালানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ তারা যদি নিজেদের মধ্যেই রেষারেষিতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে আগামীদিনে গোষ্ঠী কোন্দলের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এখন রাজ্যজুড়ে মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভারতীয় জনতা পার্টির অন্দরে যে চাপা বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে, রাজ্য নেতৃত্বরা কি করে তা সামাল দেন, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!