এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বুলবুলে বিধ্বস্ত এলাকা, এখনও দেখা নেই তৃণমূলের সেলিব্রিটি সাংসদের! অস্বস্তি প্রকট শাসকদলের

বুলবুলে বিধ্বস্ত এলাকা, এখনও দেখা নেই তৃণমূলের সেলিব্রিটি সাংসদের! অস্বস্তি প্রকট শাসকদলের

 

ভোটের সময় প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরাই নানা প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হলে তারা সাধারণ মানুষের পাশে সব সময় থাকবেন বলে বড়াইও করেন। কিন্তু নির্বাচনের পর অনেক ক্ষেত্রে জয়লাভ করে সেই নেতা, মন্ত্রী, সাংসদদের আর নিজের এলাকায় দেখা যায় না বলে অভিযোগ জনসাধারণের।

কিন্তু সদ্য সমাপ্ত 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে যখন সারা রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক কার্যত বিজেপির দিকে যেতে শুরু করেছিল, ঠিক তখনই বসিরহাটের মানুষ সমর্থন করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী নুসরাত জাহানকে। বাসিন্দাদের অনেকেই বলেছিলেন, প্রার্থী একেই বিশিষ্ট অভিনেত্রী। তার ওপর তিনি শাসক দলের প্রার্থী। তাই তিনি যদি এলাকা থেকে যেতেন, তাহলে সাধারণ মানুষের অনেকটা দুঃখ-দুর্দশা ঘুচতে পারে। কিন্তু না।

সম্প্রতি উত্তর 24 পরগনার বসিরহাট, সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জের ওপর দিয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল তান্ডবলীলা চালালেও দেখতে পাওয়া গেল না বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরাত জাহানকে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই এলাকায় তীব্র গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। বস্তুত, গত শনিবার রাতে হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ, মিনাখা, বসিরহাট এবং সন্দেশখালির 1 এবং 2 নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। বিদ্যুতের খুঁটি এবং গাছ পড়ে গিয়ে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন।পাশাপাশি অনেক কাঁচাবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে প্রায় পাঁচজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ইতিমধ্যেই সাধারন মানুষের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে তৃণমূলের বিভিন্ন নেতা, মন্ত্রী থেকে সরকারি আধিকারিকরা এলাকায় পৌঁছেছেন। বুধবার এলাকায় এসে প্রশাসনিক বৈঠক করে দুর্গতদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর আশ্চর্যজনক ভাবে এই বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র যার সংসদীয় এলাকা, সেই তৃণমূল সাংসদ তথা বিশিষ্ট অভিনেত্রী নুসরাত জাহান কার্যত উধাও। যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে বিরোধীদের তরফে তৃণমূলকে সাংসদকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে। এদিন এই প্রসঙ্গে বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, “অনেক অভিনেত্রী রাজনীতিতে আসার পর মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছেন। তাদের সুখ-দুঃখে থেকেছেন। কিন্তু বসিরহাটের সাংসদ এখনও নিজের অবস্থান ঠিক করতে পারেননি। তাই ভয়ঙ্কর বুলবুলের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত মানুষ হাহাকার করলেও তাদের পাশে দাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তিনি অনুভব করেননি। মানুষ অভিজ্ঞতা থেকে আগামী দিনে নিশ্চয়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।”

একইভাবে এই ব্যাপারে নুসরাত জাহানকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস। এদিন তিনি বলেন, “বুলবুলে হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, বসিরহাট সহ বিভিন্ন ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে। মানুষের কাছে ত্রাণ নেই, মাথার উপর ছাদ নেই, পানীয় জল নেই। অথচ তৃণমূলের নেতাও জনপ্রতিনিধিরা হয় কাটমানি নিয়ে ব্যস্ত, না হয় অভিনয় জগৎ নিয়ে ব্যাস্ত। সাংসদকে মানুষ বিপদের দিন থেকে এখনও পায়নি। মানুষকে যারা বোকা ভাবেন, তারা নিশ্চয়ই এর যোগ্য জবাব পাবেন।”

সত্যিই তো তাই, যেখানে সাধারন মানুষ ভোট উৎসবে নুসরাত জাহানকে কাছের লোক ভেবে সমর্থন করে জিতিয়ে এনে সাংসদ করেছিলেন, সেখানে সেই মানুষের বিপদে কেন নেই নুসরাত জাহান! কোথায় রয়েছেন তিনি! সূত্রের খবর, বর্তমানে কোনো একটি ছবির শুটিং করতেই ব্যস্ত রয়েছেন এই তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভোটে জিতে সাংসদ হয়ে তার কাছে কি মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানো অপেক্ষা শুটিংটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

এই নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে হেলিকপ্টারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গতদের ত্রাণ সামগ্রী এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে সমস্ত নির্দেশ দিয়েছেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এলাকা পুনর্গঠনের কাজ চলছে। সাংসদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি।”

কিন্তু জ্যোতিপ্রিয়বাবু যে কথাই বলুন না কেন, বিপদের দিনে বিধ্বস্ত এলাকায় সাংসদ নুসরাত জাহানের অনুপস্থিতি যে তৃণমূলকে ভবিষ্যতে অনেকটাই ব্যাকফুটে ফেলে দেবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!