বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। কেন্দ্রের কোনো সিদ্ধান্ত অপছন্দ হলেই তার চরম বিরোধিতা করতে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। আর এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার বলে গণ্য হলেও, যদি বিজেপি পরিচালিত কোনো রাজ্য সরকারের কোনো জনপ্রতিনিধি সেই বিজেপিরই কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন, তাহলে তা নিঃসন্দেহে হজম করতে অসুবিধা হয় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আর এবার সেরকমই ঘটনার সাক্ষী থাকল দেশ। সম্প্রতি পোশাকে জিএসটি বাড়ানোর প্রস্তাব বৃদ্ধির প্রবল বিরোধিতা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। আর এবার তার সুরেই সুর মিলিয়ে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে দেখা গেছে বিজেপির দুই উপ মুখ্যমন্ত্রী গুজরাটের নিতিন পটেল এবং বিহারের সুশীল মোদিকে। যার ফলে এখন তীব্র গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে পোশাকের কর 5 শতাংশ থেকে বাড়িয়ে 12 শতাংশ করার প্রস্তাব নিয়ে তীব্র আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু এই ঘটনার পরেই তার চরম বিরোধিতা করেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। যেখানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে তিনি বলেন, “ধুতি-পাঞ্জাবি বা শাড়ি কিনতে গিয়ে দেখবেন, জিএসটি বেড়েছে। একেই লকডাউনের ধাক্কায় ছোট মাঝারি শিল্পের তিনভাগের একভাগ বন্ধ হওয়ার মুখে। তার উপরে কর বাড়লে ভুল বার্তা যাবে।” আর পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের অর্থমন্ত্রী একথা বললে তাকে স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নিয়েছিল রাজনৈতিক মহল।

তবে যেভাবে বাংলার অর্থমন্ত্রীর সেই বক্তব্যকে সমর্থন করলেন বিহারএবং গুজরাটের বিজেপির দুই উপমুখ্যমন্ত্রী তাতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের সঙ্গে সহমত জানিয়ে বিজেপির দুই রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তার বিরোধিতা করলেন, তাতে কেন্দ্র এবং দল হিসেবে ভারতীয় জনতা পার্টি চরম অস্বস্তিতে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেন তারা এই ধরনের বিরোধিতা করলেন? তাহলে কি বিজেপি তাদের জনপ্রতিনিধিদের ঠিকমত সামলাতে পারছেন না? আর তার কারণেই এবার অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে বিরোধী রাজ্যগুলোর সঙ্গে সুরে সুর মিলিয়ে বিজেপির দুই হেভিওয়েট নেতা কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেন! এখন তা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।