চাকরি পেয়েও গরহাজির, ফের তলব রাজ্যের প্রাক্তন মাওবাদীদের পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া রাজ্য October 1, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2011 সালের আগে বিগত বাম আমলে জঙ্গলমহলের মাওবাদী উপদ্রব এলাকাগুলোতে মানুষের ঘুম ভাঙত মৃতদেহ দেখে। কিন্তু 2011 সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পরই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অঙ্গ হিসেবে সেই জঙ্গলমহলকে শান্ত করতে উদ্যোগী হয়। যেখানে গিয়ে বারবার জঙ্গলমহলের মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরার আবেদন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার ফলে অনেকেই মূলস্রোতে ফিরতে শুরু করেছিলেন। বর্তমানে অনেকটাই স্বাভাবিক ছন্দ রয়েছে সেই জঙ্গলমহলের। কিন্তু মূল স্রোতে ফেরা মাওবাদীদের সরকারের পক্ষ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হলেও, স্পেশাল হোম গার্ডের একাংশ এখন সেই কাজে যোগ দিচ্ছে না। তাই নতুন করে আবার তাদের তলব করার প্রক্রিয়া শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। একাংশ বলছেন, সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ীতে মাওবাদীদের নাম করে একটি পোস্টার উদ্ধার হয়েছিল। যার পরে আবার নতুন করে মাওবাদীরা জঙ্গলমহলে ঘাঁটি গাড়তে শুরু করেছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। তাই এই পরিস্থিতিতে স্পেশাল হোমগার্ড নিয়ে বৈঠক হলেও অনেকেই সেখানে উপস্থিত হয়নি। ফলে যে সমস্ত স্পেশাল হোমগার্ড সেখানে গরহাজির ছিলেন, তাদের এবার ডেকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের তৃণমূল সরকারের পক্ষ থেকে মাওবাদী উপদ্রব জঙ্গলমহলকে শান্ত করতে প্রাক্তন মাওবাদীদের স্পেশাল হোমগার্ড পদে নিয়োগ করা হয়। যেখানে এক সময় যারা মাওবাদী কার্যকলাপ করতেন, তাদের স্পেশাল হোমগার্ডের দায়িত্ব দিয়ে পুলিশ প্রশাসন মাওবাদীদের গোপন গতিবিধির ওপর নজর রাখত। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সেই সমস্ত স্পেশাল হোমগার্ডের দায়িত্ব পাওয়া অনেকেই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন না। তাই এবার নতুন করে তাদের উপস্থিত থাকার কথা বলা হচ্ছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দা পেশায় 30 জন হোমগার্ডকে মেদিনীপুরে ডেকে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন দশজন স্পেশাল হোমগার্ড। কিন্তু কেন তারা সেখানে যাচ্ছেন না? কেন তারা গরহাজির? এদিন এই প্রসঙ্গে শালবনির মাজুরকাটার শুকচাদ মোল্লা বলেন, “আমার শরীর ভালো নেই। তাই কয়েকদিন কাজে যেতে পারিনি। আমি শুনেছি, আমাকে কাল ডেকে পাঠানো হয়েছে। কাল না যেতে পারলেও পরশু যাব।” এদিকে তিনি এখন আর পুলিশের চাকরি করছেন না। তা ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানিয়ে দেন রাজু হাঁসদা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে যেভাবে এখন স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি পাওয়া এককালে মাওবাদীদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা তাদের কাজে গরহাজির হচ্ছে, তাতে নিঃসন্দেহে চাঞ্চল্য বাড়তে শুরু করেছে। যেভাবে আবার নতুন করে মাওবাদীদের পোস্টার পড়ছে এলাকায়, তাতে কি মূলস্রোতে ফেরা সেই সমস্ত ব্যক্তিরা আবার অন্য দিকে মোড় নিতে শুরু করেছেন! এখন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের স্পেশাল হোম গার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। ওরা সমাজের মূল স্রোতে রয়েছেন। সকলে ভালো করে চাকরি করে জীবনযাপন করুন, এটাই চাই।” এদিকে এই ব্যাপারে জঙ্গলমহলের এক অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি বলেন, “আমার এলাকার একজনকে মেদিনীপুরে ডাকা হয়েছে বলে শুনেছি। আগে ও জনসাধারণের কমিটি করত। আত্মসমর্পণের পর পুলিশের চাকরি পায়। এখন শুনছি, ও বিজেপির সঙ্গে মেলামেশা করছে।” তবে যে যাই বলুন না কেন, এককালে মাওবাদীদের ঘর ভেঙে যেভাবে সেই মাওবাদী উপদ্রবের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল এবং চাকরি দেওয়া হয়েছিল, তাতে তারা আবার তাদের পেশা থেকে দূরত্ব অবলম্বন করায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে জঙ্গলমহলে। এখন নতুন করে সেই সমস্ত ব্যক্তিরা কতটা সক্রিয়ভাবে তাদের পেশার প্রতি মনোনিবেশ স্থাপন করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -