এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রশাসক বসিয়ে পুর-পরিষেবা লাটে উঠেছে মেনে নিচ্ছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই

প্রশাসক বসিয়ে পুর-পরিষেবা লাটে উঠেছে মেনে নিচ্ছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই


রাজ্যের অনেক পৌরসভাগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। আর স্বাভাবিকভাবেই পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেখানে সমস্ত কাজকর্ম দেখভাল করেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। ইতিমধ্যেই সেই মেয়াদউত্তীর্ণ পৌরসভাগুলোতে ভোটের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে সেই পৌরসভাগুলিতে ভোটের ব্যাপারে কোনো সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি।

বিরোধীদের দাবি, পৌরসভায় কোনো বোর্ডে থাকায় প্রকৃত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে এতদিন এই ব্যাপারে বিরোধীদের সমস্ত অভাব-অভিযোগকে শাসকদল নস্যাৎ করে দিলেও এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই উঠে এল যে, মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলিতে প্রশাসকের গাফিলতির জন্য কাজে যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটছে।

সূত্রের খবর, এদিনের ডেবরার প্রশাসনিক বৈঠকের একদম শেষ পর্বে রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে তার কথা বলতে সুযোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর নিজের কথা বলতে গিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম পৌরসভার কাজকর্ম নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন শুভেন্দুবাবু।

আর এরপরই রীতিমতো পুর পরিষেবা লাটে ওঠা নিয়ে প্রকাশকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে তিনি বলেন, “হাওড়া-মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ রাজ্যের অনেক জায়গা থেকে অনেক অভিযোগ পাচ্ছি। রাস্তাঘাট মেরামত, জঞ্জাল সাফাই আর আলো জ্বালানোর কাজ ঠিকমত হচ্ছে না। ঝাড়গ্রাম পৌরসভার প্রশাসক কে?” আর এরপরই ঝাড়গ্রামের মহকুমা শাসক উঠে দাঁড়ান। সাথে সাথেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনি প্রশাসক, আপনি কি সব কাজকর্ম দেখেন না!”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

উত্তরে মহকুমাশাসক বলেন, “হ্যাঁ ম্যাডাম দেখি। মাসে একবার করে মিটিং করি কোর কমিটির সঙ্গে।” আর পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর এই কথা শুনেই রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহাকুমা শাসকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনি কি 30 দিনের খাবার একদিনে খান! তাহলে তা যখন করেন না, 30 দিনে কি কাজ হবে তা এক দিনের বৈঠকে ঠিক করা যায় কি! প্রতিদিন বসুন, মিটিং করুন পৌরসভার কাজকর্ম নিয়ে। আপনার জন্য আমি কেন গালমন্দ শুনব! মানুষের প্রয়োজনীয় ট্রেড লাইসেন্স, বিল্ডিং প্ল্যান দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়ার ব্যবস্থা করুন। জঞ্জাল পরিষ্কার করুন।”

পাশাপাশি গোটা ব্যাপারটি নিয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব সুব্রত গুপ্তকেও গোটা ব্যাপারটি ঠিকঠাক মনিটরিং হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তোমার সামনেই তো এসডিও বললেন মাসে একবার করে বসেন। তাহলে নিয়মিত বসার রিপোর্ট যায় কি করে!”

এদিকে পৌরসভার পাশাপাশি খড়গপুরের রেল প্রশাসনের বিরুদ্ধেও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন শুভেন্দু অধিকারী। অনুযোগের সুরে তিনি বলেন, “রেল পৌরসভাকে কাজ করতে দিচ্ছে না। কোনো কথা শুনছে না।” এদিকে শুভেন্দু অধিকারী এই মন্তব্য করার সাথে সাথেই তা কেড়ে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কে সহযোগিতা করবে বলো! দেখছো না এত গুরুত্বপূর্ণ মাজেরহাট ব্রিজ নতুন করে তৈরি হচ্ছে! পূর্ত দপ্তরের তরফ থেকে অনুরোধ করা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় অনুমতিটুকুও দিচ্ছে না।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রেল প্রশাসনের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করলেও তার রাজ্য প্রশাসনের অনেকেই যে কাজে খামতি রেখেছেন, তা ডেবরার প্রশাসনিক বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রমাণ হয়ে গেছে। আর তাইতো নিজের কাছে আসা তথ্য দিয়ে একের পর এক প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের কাছ থেকে কেন কাজে খামতি রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। পাশাপাশি এই ব্যাপারে সকলকে সতর্ক করে দিয়ে মানুষের কাজে কোনরকম ঢিলেমি যে তিনি বরদাস্ত করবেন না, তাও নিজের বক্তব্যে তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!