প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান হওয়ার পর থেকেই নানা বিষয় তুলে ধরে সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন জাগদীপ ধনকার। আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান বিভিন্ন ক্ষেত্রে টুইট করে তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। যার ফলে সরকারের সঙ্গে তার দূরত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃনমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সাংবিধানিক প্রধান নন, তিনি একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন।

এমনকি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের মত বিভিন্ন জেলা সফর করে কার্যত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। যার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে ধেয়ে আসে আক্রমণ। তবে এই সমস্ত কিছুকে যে তিনি বিন্দুমাত্র কেয়ার করেন না, তা বুঝিয়ে দিলেন জাগদীপ ধনকার। দিল্লি সফর থেকে ফিরেই এবার উত্তরবঙ্গ সফর শুরু করার উদ্যোগ নিলেন তিনি।

সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে ফেরার পরই একটি টুইট করে উত্তরবঙ্গ সফরের কথা জানিয়ে দেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। জানা গেছে, আজ সোমবার দুপুরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে একটি সাংবাদিক বৈঠক করবেন পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। আর তারপরেই দার্জিলিং চলে যাবেন তিনি। আর দার্জিলিং থেকে তার গন্তব্যস্থল হবে কার্শিয়াং। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপালের এই উত্তরবঙ্গ সফরে এখন তৃণমূলের কাছে কিছুটা হলেও চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একাংশ বলছেন, সম্প্রতি দিল্লি সফর করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব হতে দেখা গেছে রাজ্যপালকে। এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে মহামহিম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। যে বৈঠকের নির্যাস কি হতে চলেছে, তা নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে শাসকদলের অন্দরমহলে। আর এই পরিস্থিতিতে দিল্লি থেকে ফিরে এসেই তড়িঘড়ি রাজ্যপালের এই উত্তরবঙ্গ সফর, তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতাদের কাছেও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উত্তরবঙ্গে এখন টালমাটাল পরিস্থিতি। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি জানিয়েছেন‌। যা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মানুষ আশা করছেন, তাদেরকে আলাদা স্বীকৃতি দেওয়া হোক। আর এর মাঝেই রাজ্যপালের আজ উত্তরবঙ্গ সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকে আবার বলছেন, দিল্লি থেকে ফিরে আসার পরেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

যেখানে গোটা রাজ্যজুড়ে যে হিংসা চলছে, সেই কথা তুলে ধরেছেন তিনি। সেদিক থেকে উত্তরবঙ্গে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পারেন বাংলা সাংবিধানিক প্রধান। তবে রাজ্যপালের এই উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে তৃণমূল যে এখন থেকেই সোচ্চার, তা বলাই যায়। কেননা অতীতে নন্দীগ্রাম থেকে শুরু করে কোচবিহার, বিভিন্ন জেলা সফর করার কারণে রাজ্যপালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল শাসক দল। এক্ষেত্রে এবার রাজ্যপালের এই উত্তরবঙ্গ সফর শাসকদলের কাছে আরও বিড়ম্বনার কারণ। সব মিলিয়ে উত্তরবঙ্গে গিয়ে জগদীপ ধনকারের পদক্ষেপ কি হয়, কি কি কর্মসূচি নেন তিনি, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।