এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > যতক্ষন না মাথা ভাঙছে, দিলীপ ঘোষ রাস্তায় থাকবে – উপনির্বাচন হারের পর বড় বার্তা রাজ্য সভাপতির

যতক্ষন না মাথা ভাঙছে, দিলীপ ঘোষ রাস্তায় থাকবে – উপনির্বাচন হারের পর বড় বার্তা রাজ্য সভাপতির

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল। আর ফলাফলে যে চিত্র সামনে উঠে এসেছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই দুর্যোগের ঘনঘটা দেখছে ভারতীয় জনতা পার্টি। কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর, খড়গপুর এই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দিন যখন নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়, তখন দেখা যায়, তিনটি আসনেই জিতে হ্যাটট্রিক করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

আর নিজেদের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত খড়গপুর এবং লোকসভা ভোটে 57 হাজার ভোটে এগিয়ে থাকা কালিয়াগঞ্জ – এই দুই কেন্দ্রে অপ্রত্যাশিতভাবে পরাজয় ঘটেছে বিজেপির। করিমপুরের ক্ষেত্রে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের কাছে ভোটের নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল পদ্মফুল শিবির। তাই করিমপুরে পরাজয়টা বড় ফ্যাক্টর না হলেও কালিয়াগঞ্জ আর খড়গপুরে যে বিজেপির রাতের ঘুম উড়েছে, তা বলাই বাহুল্য। তবে ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি সাংসদ দিলীপ ঘোষের গলায় কিন্তু হতাশার সুর পাওয়া যাচ্ছে না।

বরং তৃণমূলের সঙ্গে রাজনৈতিক সংগ্রামের ক্ষেত্রে তাকে আরও অনেক বেশি রনংদেহী বলেই মনে হচ্ছে। সূত্রের খবর, গতকাল উত্তর 24 পরগনার খড়দহ এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে আক্রান্ত দলীয় কর্মীকে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল দিলীপ ঘোষের। কিন্তু রাস্তাতেই তার গাড়ি আটকে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় জনতা পার্টির তরফ থেকে এই ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর এর পরেই সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বেঁধে যায় ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী সমর্থকদের।

আর তৃণমূল-বিজেপির দ্বন্দ্ব মেটাতে নামানো হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পরবর্তীতে পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, একরকম বাধ্য হয়েই নিজের কর্মসূচি বাতিল করেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি সভাপতি বলেন, “আমাকে আটকে বিজেপিকে আটকানো যাবে না। গাড়ি ভাঙ্গা হয়েছে। 50 বার কালোপতাকা দেখানো হয়েছে। আরও 50 বার দেখাবে। কিন্তু যতক্ষণ না মাথা ভাঙছে, দিলীপ ঘোষ রাস্তায় থাকবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সাংবাদিকদের তরফ থেকে যখন দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়, উপনির্বাচনের অপ্রত্যাশিত ফল সম্পর্কে, তখন দিলীপবাবু বলেন, “কর্মীরা উপনির্বাচন বলে মরিয়া হয়ে খাটেনি। লোকসভা ভোটের ফলাফল দেখে ভেবেছিল, এমনিতেই জিতে যাব।” এদিন নির্বাচনে সন্ত্রাস এবং ছাপ্পা ভোট নিয়েও সরব হন দীলিপ ঘোষ। তিনি বলেন, “ভোটের দিন এজেন্টরা ভয়ে কর্মীরা জানাতে পারেনি। তবে বিকেল পাঁচটার পরে রীতিমতো ছাপ্পা ভোট হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।” হারের পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে ছাপ্পা ভোট এবং সন্ত্রাস দায়ী বলে এদিন সাংবাদিকদেরকে জানান দিলীপবাবু। উপনির্বাচনের ফলাফলে বিশেষজ্ঞরা লক্ষ করেছে, যে কেন্দ্রে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ 45 হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল, সেই কেন্দ্রে 2019 সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী থেকে 20 হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছেন।

এক্ষেত্রে অবশ্য নিজেদের ত্রুটির মূল্যায়ন করতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “জেতার পরে কি করে জয় ধরে রাখতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল না।” পাশাপাশি খড়্গপুরের 27 নম্বর বুথে রিগিং হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন দিলীপবাবু। আবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তরফ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “অসমে এনআরসি হয়েছে। কিন্তু সেখানে ভোটের ফল খারাপ হয়নি। এখানে মানুষকে ভয় দেখানো হয়েছে। মমতা নিজে রাস্তায় নেমেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “এনআরসি হলে লোকের কাছে যাব, জানতে চাইব। সমস্ত উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।” তবে শত কথার মধ্যেও নির্বাচনে ফলাফল যা হয়েছে, তা মেনে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তবে, অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে না গিয়ে নিজেদের হারের পেছনে আসল ভুল ত্রুটিগুলো কি ছিল, তা মূল্যায়ন করে যদি ভারতীয় জনতা পার্টি আগামী দিনে নিজেদের কর্মসূচি ঠিক করে – তাহলে 2021 সালে তা তাদের পক্ষে বেশি সুবিধা হতে পারে বলেই মত বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!