করোনা অবহেও রমরমিয়ে দুর্গাপূজো! সংক্ৰমণ ভয় তীব্র! মুখ্যমন্ত্রী মমতা মুখ খুলে চমকে দিলেন কলকাতা তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য October 16, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি রাজ্যে করোনার ভ্রুকুটির মধ্যেই শোনা যাচ্ছে পুজোর ঢাক। তবে করোনা সংক্রমনের কালে এবছর দুর্গোৎসব রাজ্যে পালিত হবে কিনা? তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেকের মনেই। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপূজার অনুমতি দিলেন। সেইসঙ্গে পুজো আয়োজক ক্লাবগুলোকে ৫০ হাজার টাকার অনুদানের ঘোষণাও করলেন। চিকিৎসকদের অনুরোধ, হাইকোর্টের ভর্ৎসনা উপেক্ষা করেও গতকাল বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে ১১০ টি পুজোর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বছর পুজোর অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে আর্জি জানানো হলেও এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, “দুর্গাপুজো ঘরে বসে হয় না।” এদিকে রাজ্যজুড়ে ভয়াবহভাবে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। করোনা সংক্রমণকালে দুর্গা পূজার আয়োজন করলে করোনার সংক্রমণ যে আরও তীব্রতা ধারণ করবে সেই আশঙ্কা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের বেশ কিছু বিশিষ্ট চিকিৎসক। মুখ্যমন্ত্রীকে তারা আবেদন করেছিলেন যে, এবছরে পুজোর আয়োজনে লাগাম পরাতে। কিন্তু লাগাম পরাবার কোনো লক্ষণ দেখা গেলোন মুখ্যমন্ত্রীর। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে জানালেন, “মা দুর্গার পুজো আমরা বন্ধ করিনি। এই পুজো বন্ধ করা ঠিক নয়। তাছাড়া কোনও কিছুই তো বন্ধ হয়নি। রমজান-ইদ-গণেশপুজো, এগুলো ঘরে বসে করা যায়। কিন্তু দুর্গাপুজো মানে মায়ের বিরাট সংসার। সে পুজো বারোয়ারী। পুজো করে সব ক্লাব, কমিটি। বাড়ির পুজো খুব কম হয়।” প্রশ্ন উঠেছে ঈদ, গণেশ পুজো যদি বাড়িতে বসে পালন করা যায় তবে দুর্গাপুজো কেন বন্ধ রাখেনি রাজ্য সরকার। যেখানে মহারাষ্ট্র সরকার এ বছরের জন্য গণেশ চতুর্থী স্থগিত রেখেছে, স্থগিত রেখেছে মহরম, কেরালাতে ওনাম উৎসব পালনের পর থেকে যেখানে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার সংক্রমণ। সেখানে এবার রাজ্যে দুর্গৎসব পালনের যুক্তিকতা কি? এ বিষয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এর মধ্যে করোনা সংক্রমণ কালে দুর্গাপূজার আয়োজন নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল করোনা কালে পূজার আয়োজন করায় রাজ্য সরকারকে তীব্রভাবে ভৎসনা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন তোলে, “দুর্গাপুজোয় ৫০,০০০ সরকারি অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় তো?” এ বিষয়ে বিচারপতি আরোও প্রশ্ন করেছেন যে, “যেখানে সংক্রমণের আশঙ্কায় স্কুল, কলেজ পর্যন্ত খোলা হল না, সেখানে কীভাবে দুর্গাপুজোর আয়োজন হচ্ছে? ” তবে, গতকাল আদালতের কোন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি অ্যাডভোকেট জেনারেল। তাঁকে আজ শুক্রবারের মধ্যে আদালতের সমস্ত প্রশ্নের লিখিত জবাব পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। অন্যদিকে প্রতিবছর বিজয় দশমীর দিনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার টাকিতে ইছামতি নদীতে দুর্গা প্রতিমার বিসর্জনের এক অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়। সেদিন দুই বাংলার একযোগে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে নদীর তীরে সমবেত হন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এ বছরে তেমন ভাসান হবে কিনা? তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেকের মনে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই বিষয়ের সমাধানও করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানালেন যে, শান্তিপূর্ণভাবে দুই বাংলার মানুষেরা প্রতিমা বিসর্জন দিতে পারবেন। স্থানীয় পূজা কমিটির সদস্য ও রাজ্যের পুলিশ সমস্ত কিছুর দেখভাল করবে। বস্তুত দুর্গা পুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। তাই বাঙালি আনন্দ, আবেগ, উচ্ছাসে ভেসে যাবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্বাস্থও তো উপেক্ষা করার মতো বিষয় নয়। করোনার সংক্রমণ কালে এবার পুজোয় কতটা আনন্দ করা সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকেরই। আপনার মতামত জানান -