দুর্গাপুরে বিজেপি ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী দিতেই বামভোট ‘দোদুল্যমান’, চিন্তা বাড়ছে তৃণমূলের বর্ধমান রাজ্য April 28, 2019 বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে আগামীকাল – তার আগে এলাকা ঘুরে যে চিত্র উঠে আসছে, তাতে স্পষ্ট – তৃণমূল নেতারা শুধু নিজেদের ভোট ধরে রাখতেই বদ্ধপরিকর নন, তার সঙ্গে মনে মনে চাইছেন বামেরাও যেন নিজেদের ভোট ধরে রাখতে পারে! মুখে অবশ্য একথা স্বীকার করতে রাজি নন কেউই – সকলেই বলছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এখানে লক্ষাধিক ভোটে আমাদের প্রার্থী জিতেছিলেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৭ টির মধ্যে ৫ টি বিধানসভায় আমাদের দখলে এসেছিল। শাসকদলের নেতাদের আরও দাবি, দুর্গাপুর শহরের দুটি বিধানসভায় কিছু মানুষকে ভুল বোঝানো হয়েছিল ফলে, ওই দুটি আসন বাম-কংগ্রেস জোট পায়। তবে জয়ী এক বিধায়ক এখন বকলমে তৃণমূলে, তাছাড়া বিগত পুর নির্বাচনে দুর্গাপুরে বিরোধীরা খাতা খুলতে পারে নি, যেসব মানুষ ভুল বুঝে বিধানসভা নির্বাচনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, তাঁরা আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে আস্থা রেখে তৃণমূল কংগ্রেসকেই জয়ী করেছেন। আর তাই, বিরোধীদের নিয়ে চিন্তিত নই, আমাদের চিন্তা ২০১৪ এর থেকেও কত বেশি মার্জিনে এই আসন জিতে দলনেত্রীকে উপহার দেওয়া যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - শাসকদলের এই ‘সোজা হিসাব’ অবশ্য এলাকা ঘুরলে অবশ্য একদমই মিলছে না! বিরোধীরা তো প্রকাশ্যেই বলছেন, দুর্গাপুর পুরসভায় নির্বাচনে জিততে যেভাবে বহিরাগত এনে ভোট লুঠ করা হয়েছে – তা দেখে শহরবাসী ক্ষুব্ধ! তাঁরা শুধু চাইছেন, একবার নিজের ভোটটা নিজে দিতে পারি! তাহলেই তৃণমূল বুঝতে পারবে কত উন্নয়ন হয়েছে! শাসকদলের সাংসদকে এলাকাতে দেখাই যায় না, তার উপরে এই অঞ্চলে মাফিয়ারাজ বর্তমানে হয়েছে মাত্রাছাড়া! ফলে, একদা লালদুর্গে আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার বামেদের – আভাষ রায়চৌধুরী প্রার্থী হিসাবেও যথেষ্ট ভালো, ফলে ভালো ফল করার আশায় বামেরা। কিন্তু, বিজেপি এখানে শেষ মুহূর্তে এস এস আহলুওয়ালিয়াকে প্রার্থী করতেই কিন্তু বদলে গেছে অনেক সমীকরণ। তৃণমূল যতই প্রচার করুক, হাতে কালি, মুখে কালি, দার্জিলিং থেকে পালিয়ে এলি! বিজেপির পাল্টা প্রচার, দুর্গাপুরের সামনে সুযোগ এসেছে এই সাংসদ এলাকা থেকে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাওয়ার, যা হলে এলাকার চালচিত্রই কিন্তু পাল্টে যাবে! পাশের কেন্দ্র আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয়র কাজ দেখিয়ে সেই প্রচার কিন্তু বেশ সাড়া ফেলছে। তাছাড়া, গেরুয়া শিবির আরেকটি মোক্ষম অস্ত্র রেখেছে, যা রীতিমত ভাবাচ্ছে বাম ভোটারদের। বিজেপির দাবি, বিধানসভায় বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীকে জিতিয়ে কি হল? সেই তো তিনি তৃণমূলে গেলেন! তাহলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হলে বাম বা কংগ্রেসকে দিয়ে লাভ কি? সুতরাং, তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট প্রচারে যে ঝড় তুলেছে, লোকসভা ভোটে তার ফসল ঘরে তুলতে পারে বিজেপি। আর এমনিতেই এই লোকসভা অবাঙালি অধ্যুষিত, তার উপরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাওয়ার স্বপ্নে বাম ভোট রীতিমত ‘দোদুল্যমান’ – সুতরাং, দুর্গাপুরের রাজনৈতিক সমীকরণ কিন্তু বেশ জটিল হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় সাধারণ মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন – আর তাই, দুর্গাপুর আসনে কি ফলাফল হয় তা নিয়ে কিন্তু জল্পনা ক্রমেই বাড়ছে! আপনার মতামত জানান -