এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > এবার কি “রাজ্যপাল” পদও তুলে দিতে চান মমতা? ‘দু চোখের বিষ’ স্পষ্ট ইঙ্গিত ব্রাত্যের!

এবার কি “রাজ্যপাল” পদও তুলে দিতে চান মমতা? ‘দু চোখের বিষ’ স্পষ্ট ইঙ্গিত ব্রাত্যের!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-এবার কি ক্ষমতা পেয়ে নিয়মকানুন সব কিছুই ভুলে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারের মন্ত্রীরা! যখন জগদীপ ধনকর রাজ্যপাল ছিলেন, তখন তার বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই বলতে দেখা যেত সরকার পক্ষকে। তারা বুঝিয়ে দিত যে, এই রাজ্যপাল বিজেপির দলদাস হিসেবে কাজ করছেন। তবে বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকাতেও সন্তুষ্ট নয় নবান্ন। এখন তারা আবার বোঝাতে শুরু করেছেন, বর্তমান রাজ্যপাল তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করছেন না। যা ইচ্ছে তাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাই এই রাজ্যপালের থেকে জগদীপ ধনকর কিছুটা হলেও ভালো ছিলেন। যার ফলে একাংশ বলছেন, তাহলে কি এবার রাজ্যপাল পদের বিলুপ্তি চাইছেন বর্তমান সরকার এবং তাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! ক্ষমতায় ডুবে থেকে এবার কি নিয়ম কানুন সবকিছুর ঊর্ধে উঠে সাংবিধানিক পদেরও অবলুপ্তি ঘটাতে চাইছে মা মাটি মানুষের সরকার!

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একের পর এক রাজ্যপালের সিদ্ধান্তে রীতিমত ক্ষিপ্ত রাজ্য সরকার। তাদের দাবি, কোনোমতেই রাজ্যপাল এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ইতিমধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন, রাজ্যপাল নাকি শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছেন। শুধু তাই নয়, আগের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার টেবিলে বসে আলোচনা করলেও, বর্তমান রাজ্যপাল তা করেন না বলেও অভিযোগ ব্রাত্যবাবুর। এমনকি এই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনা যায় কিনা, তাও চিন্তা ভাবনার মধ্যে রয়েছে শাসকদলের বলেও জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। আর এত কিছু দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসলে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপালকে ভালো বলে তৃণমূল একটা জিনিস বুঝিয়ে দিতে চাইছে যে, রাজ্যপাল পদটাই তাদের পছন্দের নয়।

তৃণমূল হয়তো খুব খুশি হবে, আনন্দিত হবে, যদি এই রাজ্যপাল পদটাই তুলে দেওয়া হয়। কারণ পশ্চিমবঙ্গকে তারা পৃথক দেশ বলে ভাবে। এখানে তৃণমূলের আইনটাই আইন, তাদের মুখ্যমন্ত্রী যা বলবেন, সেটাই শেষ কথা। তাই রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি চাইলে তার নিয়ম মানবে না রাজ্য সরকার। সেই কারণেই রাজ্যপালের একটি সিদ্ধান্ত অপছন্দ হলেই, তা নিয়ে রীতিমতো ময়দানে নেমে সাংবিধানিক প্রধানকে যা ইচ্ছে তাই বলতে দেখা যায় সরকার পক্ষের নেতাদের ।বিরোধীদের দাবি, রাজ্যপাল একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, আর তাতেই গাত্রদাহ শুরু হয়েছে রাজ্য সরকারের।

রাজ্যপাল বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন যে, উপাচার্যরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শেষ কথা বলবেন, তাতেই রেগে আগুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকার। সেই কারণে এখন সিভি আনন্দ বোস নয়, যে জগদীপ ধনকরের সঙ্গে মিনিটে মিনিটে ঝগড়া করতে দেখা যেত তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে, সেই ধনকর সাহেব তাদের কাছে ভালো হয়ে গেল! বিরোধীদের কটাক্ষ, তৃণমূলের এই সমস্ত নাটক ধরা পড়ে গিয়েছে। আসলে জগদীপ ধনকার ভালো আর সিভি আনন্দ বোস খারাপ, এটা কোনো বিষয় নয়। তৃণমূলের কাছে তাদের সুবিধাই প্রধান প্রাধান্য পায়। তাই রাজ্যপাল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি চাইছেন, তখন ভালো, খারাপের ভেদাভেদ করে তৃণমূল আর একটা জিনিস আরও স্পষ্ট করে দিতে চাইছে যে, সাংবিধানিক পদ তারা চায় না। তারা চায়, সরকার শেষ কথা বলবে। তারা চায়, তাদের ফ্যাসিস্ট নিয়ম শেষ কথা বলবে। তবে দেশে গণতন্ত্র বলে কিছু একটা রয়েছে। তাই তৃণমূলের এই স্বেচ্ছাচারী ইচ্ছা পূরণ হবে না বলেই দাবি বিরোধীদের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট করে দিলেন যে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনা যায় কিনা, তা তাদের ভাবনার মধ্যে রয়েছে। তবে এই বক্তব্য যে শিক্ষামন্ত্রীর নয়, একেবারে সরকারের শীর্ষ মহল থেকেই এই মনোভাব রাজ্যপালের প্রতি রয়েছে, সেই ব্যাপারে সন্দেহ নেই কারোরই। যার জেরে এক পক্ষের কাছে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, রাজ্যপাল পদটাই তৃণমূলের কাছে এখন দু চোখের বিষ হয়ে গিয়েছে। কারণ তৃণমূল জানে যে, তারা যা করবে, তাই নিয়ম বিরোধী। আর সেই নিয়ম বিরোধী কাজ আটকাবেন রাজ্যপাল। ফলে রাজ্যপাল পদটাই তুলে দিলে তৃণমূলের কাছে সেই নিয়ম বিরোধী, স্বেচ্ছাচারী কাজ করা আরও সহজ হয়ে যাবে। তাই যখন যে রাজ্যপাল আসেন, তখনই তারা তৃণমূল সরকারের কাছে শত্রু হয়ে যান। বর্তমান রাজ্যপালও হয়ত সেই তালিকায় পড়ে গিয়েছেন। তবে এত সহজে তৃণমূলের রাজ্যপাল পদ অবলুপ্তির এই গোপন ইচ্ছা পূরণ হবে না বলেই দাবি সমালোচক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!