সোমেন জমানায় ঘুরতে শুরু করলো চাকা? বাম জমানার হেভিওয়েট সংখ্যালঘু মন্ত্রী এবার কংগ্রেসে কলকাতা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য December 12, 2018 প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে যখন অধীর চৌধুরী তাঁর দায়িত্ব সামলেছিলেন, তখন একের পর এক দলীয় বিধায়ক থেকে নেতারা কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। যার জেরে প্রবল ধ্বস নেমেছিল রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দপ্তর বিধান ভবনে। কিন্তু এবারে প্রদেশ সভাপতি হিসেবে সোমেন মিত্র দায়িত্ব নেওয়ার পরই অবশেষে কি সেই কংগ্রেস ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার ট্র্যাডিশন বদলাতে শুরু করল? হ্যাঁ, বিধানভবনে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিপিএম নেতা আবদুস সাত্তারের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ঘটনায় এইরকম প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেসের রাজ্য সদর দপ্তর বিধান ভবনে এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক গৌরব গগৈ সহ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগদান করেন সিপিএমের এই আব্দুস সাত্তার। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার এই প্রাক্তন বিধায়ক দলের সদস্যপদ নবীকরণ করেননি। এমনকি বেশ কিছুদিন ধরে সিপিএমের সাথে তাঁর দূরত্ব ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছিল। আর তাই অবশেষে, সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এদিন কংগ্রেসের পতাকাই হাতে তুলে নিলেন তিনি। ফলে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করল কংগ্রেস বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। এদিন আবদুস সাত্তারের দলে যোগদান প্রসঙ্গে রাজ্য কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌরব গগৈ বলেন, “ওনার ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন। তাই তাঁকে কংগ্রেসে যোগ দিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সিপিএমে থাকার সময় দীর্ঘদিন ধরে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে ছিলেন। তাই তিনি আজ কংগ্রেসে যোগ দিলেন”। কিন্তু, হঠাৎ করে এই প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কারণ কি? তাহলে কি তৃণমূল বা বিজেপির মত দল ভাঙানোর কাজ শুরু করল কংগ্রেসও? ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে এদিন, এই প্রসঙ্গে রাজ্য প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “আমরা কোনো দল ভাঙানোর কাজ করিনি। সিপিএমের নেতা হলেও সিপিএম থেকে দূরে সরে গিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়েছিলেন আব্দুস সাত্তার। তাই তাঁকে আমাদের দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়”। কিন্তু যাঁকে নিয়ে এত কিছু, সেই সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া আব্দুস সাত্তার এদিন বলেন, “বাম-কংগ্রেসের শাসনাধীন বাংলায় যা হয়নি এই আট বছরে তাই করে দেখাচ্ছে তৃণমূল। একদিকে সংখ্যালঘু তোষণ, আর অন্যদিকে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির সুবিধা করে তৃণমূল এই বাংলায় হিন্দু তোষণ শুরু করেছে”। তিনি আরও বলেন, “আর বিজেপি হিন্দুত্ব ঘেঁষা রাজনীতি করছে। তাই এই অবস্থায় কংগ্রেসের মতো জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে আমি এই বিভাজনের রাজনীতির বিরোধিতা করতে চাই”। রাজনৈতিক মহলের মতে, যখন দিকে দিকে বাংলায় কংগ্রেসের সংগঠন ভেঙে তাদের নেতাকর্মীরা শাসকদলে যোগ দিচ্ছেন, ঠিক তখনই সেই কংগ্রেসেই এই রাজ্যের বিগত বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিপিএম নেতার যোগদান – বিধানভবনকে অনেকটাই অক্সিজেন জোগাল। এদিকে আজ কেন্দ্রের বিজেপি এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মতলায় একটি সমাবেশের ডাক দিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। আর ইতিমধ্যেই সেই সমাবেশকে সাফল্যমন্ডিত করতে জেলায় জেলায় প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সি, আবু হাসেম খান চৌধুরী, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, প্রদীপ ভট্টাচার্য্য, আব্দুল মান্নান সহ একাধিক নেতা-বিধায়কেরা। জানা গেছে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর এই প্রথম শহরে কোনো বড় জনসভা করতে চলেছেন সোমেন মিত্র। তাই সেখানে যাতে কোনরূপ খামতি না থাকে সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন তিনি। এদিন সেই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “এই সাংগঠনিক তৎপরতায় জেলার কর্মীরা সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। এই সমাবেশে প্রচুর জনসমাগম হবে”। এমনিতেই গতকাল ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে নতুন করে হাওয়া লেগেছে কংগ্রেসের পালে। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ধীরে ধীরে এবার এই রাজ্যে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস। তবে তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রভাব কতটা ভোটবাক্সে পরে – এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -