এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার একদা মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে কাজ করা সরকারি কর্মী!

লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার একদা মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে কাজ করা সরকারি কর্মী!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বিজেপি প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতা সঞ্জীব পালকে। রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেন। বর্তমানে সঞ্জীব পাল পোস্টেড ছিলেন আলিপুরদুয়ারের আরটিও অফিসের হেডক্লার্ক পদে। শনিবার তাঁকে নগর দায়রা আদালতে হাজির করানোর কথা।

প্রসঙ্গত, একটা সময়ে তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠন রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের কোর কমিটির নেতা ছিলেন সঞ্জীব পাল। সরকারের একেবারে উপরতলার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানা গিয়েছে। এমনকি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে কাজ করার ফলে তাঁর প্রভাব আরও প্রবল হয়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ। দুর্নীতি দমন শাখা.সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ উঠছিল সঞ্জীববাবুর ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

আর এইসবের পরিপ্রেক্ষিতেই, এরপর খোঁজখবর শুরু করে দুর্নীতি দমন শাখা। গত এপ্রিল মাসে স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের করে অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ। ১৩ (২) ও ১৩ (৩) ধারায় এফআইআর করা হয় সঞ্জীববাবুর বিরুদ্ধে। তার ভিত্তিতেই সঞ্জীববাবুকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় এবং পরবর্তীকালে তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তাঁর বিরুদ্ধে ৬২ লক্ষ টাকার হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ মিলেছে।

প্রসঙ্গত, আগে তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনের ছাতার তলায় থাকলেও পরে গেরুয়া শিবিরে যান সঞ্জীববাবু। তাঁকে দলে নেওয়া নিয়ে বিজেপির মধ্যেও জলঘোলা হয়েছিল বলে বিভিন্ন মহলে জল্পনা। তবে তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনে থাকাকালীনই তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন – আর তারপরেই উল্লেখযোগ্য ভাবে তাঁর দু-দুবার বদলি হয়, শেষবারে তো তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সুদূর আলিপুরদুয়ারে। এরপর আর দেরী করেননি সঞ্জীববাবু, যোগ দেন গেরুয়া মনোভাবাপন্ন শিবিরে। এই নিয়ে বারেবারেই রাজ্য সরকারের ‘প্রতিহিংসাপরায়ন ভাবমূর্তি’ ও ‘বদলি সন্ত্রাস’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন সঞ্জীববাবু। আর এবার তো তাঁকে সরাসরি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারই করা হল।

এই ব্যাপারে সঞ্জীববাবু যে কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, সেই সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সঞ্জীব পাল ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে আমাদের সংগঠনে সাধারণ সদস্য হিসাবে যোগ দেন। তিনি সংগঠনের কোনো পদ বা দায়িত্বে ছিলেন না। এখন তাঁর বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণরূপে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতস্তরে। সুতরাং ব্যক্তিগতভাবেই তাঁকে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করতে হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

দেবাশীষবাবু আরও জানান, তবে একই সঙ্গে জানিয়ে রাখি রাজ্যের বর্তমান সরকার অসম্ভব রকমের প্রতিহিংসাপরায়ন। নিজেদের ন্যায্য দাবী আদায়ে সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই এতদিন সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে বদলি সন্ত্রাস চলছিল। আর এখন শুরু হয়েছে গ্রেপ্তার বা গ্রেপ্তারের ভয় দেখানোর সন্ত্রাস। আপনারা জানেন, পে-কমিশন নিয়ে রাজ্য সরকারের নজিরবিহীন দীর্ঘসূত্রিতার প্রতিবাদ করায় ঘটনার প্রায় দেড় বছর পরে সম্প্রতি আমাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা হয়, ফলে আমাকে জামিন নিতে হয়েছে।

দেবাশীষবাবুর দাবি, সঞ্জীব পাল সরকারি কর্মচারী পরিষদে যোগ দেওয়ার আগে তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী সংগঠনের রাজ্য কোর কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি যে সাংগঠনিক কাজে অত্যন্ত দক্ষ তা আমাদের সংগঠনে আসার পরেও প্রমাণ করেছেন। সুতরাং তৃণমূল সমর্থিত সংগঠন ছেড়ে এসে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার মাশুল যে সঞ্জীব পালকে দিতে হল না, একথা কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে বলা যাবে না! আমরা চাইব যথাযথ তদন্ত হোক এবং প্রকৃত সত্য সকলের সামনে আসুক।

অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে বাম মনোভাবাপন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন স্টিয়ারিং কমিটির রাজ্য সম্পাদক সঙ্কেত চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কিছুদিন আগে একমাত্র বাংলা পোর্টাল হিসাবে আপনারাই লিখেছিলেন এক সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন বিপুল পরিমান সম্পত্তির জন্য দুর্নীতির তদন্ত শুরু হতে চলেছে। সেই সংবাদ পড়ে আমরা আমাদের সংগঠনের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এক চিঠি দিই।

সঙ্কেতবাবুর বক্তব্য, আমরা স্পষ্ট জানাই, আপনাদের এই খবর যদি সত্য হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীকে শনাক্ত করা হোক এবং দোষ প্রমান হলে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। নতুবা এই খবরের পরিপ্রেক্ষিতে সমগ্র সরকারি কর্মচারী সমাজ কলূষিত হচ্ছে। আপনাদের পরিবেশিত খবর যে সত্য আজকের এই গ্রেপ্তারিতেই প্রমাণিত। আর, আমাদের মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে যদি এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আমরা তারও সাধুবাদ জানাচ্ছি।

সঙ্কেতবাবু আরও জানান, কিন্তু একই সঙ্গে একথাও বলব, কাউকে গ্রেপ্তার করা মানেই কিন্তু তিনি দোষী প্রমাণিত নন। আমরা চাইব, সরকারি কর্মচারী সমাজের স্বার্থে, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক এবং সকলের সামনে সত্যাসত্য বেরিয়ে আসুক। বর্তমান রাজ্য সরকার কর্মচারী স্বার্থবিরোধী বহু কাজ করে থাকলেও, এই ঘটনাকে সরাসরি ‘প্রতিহিংসা’ বলতে আমি নারাজ। কেননা, কেননা তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠন ছেড়ে অনেকেই বিরোধী সংগঠনে নাম লিখিয়েছেন, কারোর বিরুদ্ধেই কিন্তু দুর্নীতির তদন্ত হয় নি। আবারো বলব, যথাযথ তদন্ত হোক এবং সত্য উদ্ঘাটিত হোক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!