প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলে তিনি ছিলেন হেভিওয়েট মন্ত্রী সহ কলকাতা পৌরসভার মেয়র। কিন্তু বিজেপিতে যোগদানের পর তৃণমূলকে কব্জা করার জন্য তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে মনে করা হলেও, সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাননি শোভন চট্টোপাধ্যায়। শুধুমাত্র বান্ধবী সম্মান না পাওয়ার কারণে দলে সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছিল না তাকে। মাঝেমধ্যেই তার দলবদল নিয়ে জল্পনা বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পাকাপাকিভাবে বিজেপি ত্যাগ করেননি শোভন চট্টোপাধ্যায়।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সেভাবে কাজে না লাগায় ভারতীয় জনতা পার্টি, তাহলে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কার্যত ব্যাকফুটে পড়ে যাবে বলেই দাবি করেছিলেন একাংশ। আর এই পরিস্থিতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বড় দায়িত্ব দিল ভারতীয় জনতা পার্টি। সূত্রের খবর, এবার ভোটের আগে কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বিজেপির কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হল।

পাশাপাশি সহকারি কনভেনর হিসেবে নিয়োগ করা হল তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার ফলে বহু জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলেন এই শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দায়িত্ব পাওয়ার পর কিভাবে কাজ করেন এই জুটি, এখন সেটাই লক্ষণীয় বিষয় রাজনৈতিক মহলের কাছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায় গুরুত্ব পেলেও, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে যোগ্য সম্মান না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। যার পরবর্তীকালে বান্ধবীকে গুরুত্ব না দেওয়ার ফলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। আর এর পরবর্তীকালে দু’জনকেই সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। মাঝে অমিত শাহ রাজ্যে আসলে তার সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা যায় সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।

যার ফলে তিনি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারেন বলে মনে করা হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক কালে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক জনপ্রতিনিধি বিজেপিতে যোগদানের পর বিজেপি আবার রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা জোনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আনা হল। যা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অনেকে বলছেন, বিজেপি তৃণমূল নেতাদের এনে তৃণমূলের ঘরে ভাঙন ধরাতে চাইছে। সেদিক থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায় একসময় কলকাতা পৌরসভার মেয়র থাকার সুবাদে সেখানকার সংগঠনকে অনেকটাই পরিচালনা করতেন। তাই তাকে কাজে লাগিয়ে এখন বিজেপি তৃণমূলের ঘর ভাঙতে চাইছে। আর তাই কি এখন সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হল! এখন তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপির এখন সবথেকে বড় টার্গেট তৃণমূলের ঘরে ফাটল ধরানো। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপি সেই কাজ করতে উদ্যত হয়েছে‌। সেদিক থেকে কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র এবং দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি শোভনবাবু এই অঞ্চলের সংগঠনকে খুব ভালো করেই চেনেন। তাই তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সেখানকার ভোটব্যাংকে নিজেদের দিকে আনতে বিজেপি এই পদ্ধতি প্রয়োগ করল বলে দাবি করছে একাংশ।

এদিন এই প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দু’বছর আগে রাজনীতির ময়দানে এসেছি। বিজেপি নতুন চ্যালেঞ্জ দেওয়ার জন্য দলের নেতৃত্বকে ধন্যবাদ। দায়িত্ব পালনের জন্য যথাযথ চেষ্টা করব।” স্বাভাবিকভাবেই শোভন চট্টোপাধ্যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিজেপি নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার পর এবার এই জুট তাদের দায়িত্ব কতটা সফলতার সঙ্গে পালন করতে পারে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।