এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ‘হেড অফিসের’ জরুরি তলবে দিলীপের দিল্লি যাত্রা! জল্পনা ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে গেরুয়া শিবিরে!

‘হেড অফিসের’ জরুরি তলবে দিলীপের দিল্লি যাত্রা! জল্পনা ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে গেরুয়া শিবিরে!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি রাজনৈতিক দল নিজেদের সংগঠনকে মজবুত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপিও তাদের সংগঠন মজবুত করতে কোন চেষ্টার কোন কমতি রাখছে না। কিন্তু এর মাঝেই, লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির কাছে বিপদ রূপে দেখা দিচ্ছে মতভেদ, মতান্তরে মতো বিষয়গুলি, বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই, বিজেপির অন্দরে বারবার দেখা দিচ্ছে মতভেদ, মতান্তর, অন্তর্দ্বন্দ্বের আবহ। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই দিল্লিতে আগামী নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি করতে বিজেপির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বসেছিল। এই বৈঠকে বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মধ্যে বেশকিছু বিতর্কেও দেখা দিয়েছিল – বলে জল্পনা ছড়ায়। আর এরপরই, সেই জল্পনা আরও উস্কে দিয়ে দিল্লির বৈঠক শেষ হবার পূর্বেই মুকুল রায় দিল্লি ছেড়ে কলকাতা ফিরে আসেন।

এরপর থেকেই রাজ্য বিজেপির মধ্যে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। রাজ্য বিজেপির অন্দরে মতভেদ, মতান্তর, অন্তর্দন্দ্ব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে খোদ রাজ্য সভাপতি নাকি নিজের পদ থেকে অব্যাহতি লাভ করতে চাইছেন – এমন গুঞ্জনও মুরলীধর সেন লেনের আকাশে-বাতাসে শোনা যেতে থাকে। সাংবাদিকদের করা এমনই এক প্রশ্নে, বিজেপির রাজ্য সভপতি দিলীপ ঘোষ, সেই সময় এমন এক মন্তব্য করেন যা নিয়ে সেই সময় রাজ্য-রাজনীতিতে রীতিমত ঝড় বয়ে যায়!

সেই সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপবাবুকে বলতে শোনা যায়, “দিলীপ ঘোষ যদি পদত্যাগ করতে চাইত, তবে এতদিন পদে থাকত না। আমি বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করতে এসেছি। যে সামনে আসবে, তার বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করব।” এখানেই শেষ নয়, এরপর তিনি হুঙ্কার দিয়ে বললেন, “বাংলায় পরিবর্তন দিলীপ ঘোষ একা করতে পারবেন। কারও যদি আত্মবিশ্বাস না থাকে, বিশ্বাস না থাকে, তাঁরা বাড়িতে বসে থাকুন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হলে মিষ্টি খেয়ে যাবেন।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি এই মন্তব্যের পর থেকেই দলের মধ্যে মতভেদ তীব্র হয়। দলের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠে, দলের রাজ্য সভাপতির এধরনের মন্তব্য আদৌ সাযুজ্যপূর্ণ কিনা? তা নিয়ে দলের অন্দরেই বিভিন্ন মহল উষ্মা প্রকাশ করেন। দলের একাংশের তরফ থেকে তার বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ পৌঁছে দেওয়া হয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও আরএসএস-এর কাছে বলেও গুঞ্জন গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। সূত্রের খবর, এই বিষয়টি জানতে পারার পরই নাকি দিলীপবাবুকে তড়িঘড়ি দিল্লিতে তলব করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।

রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের দাবি, রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে তার মন্তব্যের ব্যাপারে সাবধান করে দিতেই তাকে দিল্লি থেকে পাঠিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি। দিলীপ ঘোষকে বাকসংযমে শেখাতে এই জরুরি তলব বলে মত রাজনৈতিক মহলের। কেননা, আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাকসংযমের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে । রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন রাজ্য সভাপতি যদি তাঁর এ ধরনের কোন মন্তব্য ক্রমাগত চালিয়ে যেতে থাকেন তবে এরপর দলের মধ্যেকার ফাটল আরো বৃদ্ধি পাবে। বাড়বে দলের সংকট।

তবে এর সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতামত, দিলীপ ঘোষকে আসন্ন বিধানসভা ভোটের জয় লাভের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রস্তুত করতেই নাকি, এই জরুরি তলব করা হয়েছে। এদিকে তাঁর দিল্লিতে তলব প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “কেন ডেকেছেন সে কথা নাড্ডাজি স্পষ্ট করে বলেননি। তবে আমরা ওনার সময় চেয়েছিলাম। সেই কারণেও উনি ডাকতে পারেন।” আসন্ন ভোট নিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সভাপতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও হতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।

তবে একথা সত্যি যে, রাজ্য সভাপতির মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপি দলের মধ্যে যথেষ্ট অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই দ্বন্দ্ব আগামী নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের জন্য প্রচন্ড ক্ষতিকর হতে পারে বলেও মনে করছেন তাঁরা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ক্ষত নিরাময় করে সামনের নির্বাচনে দলের লক্ষ্য স্থির এগোনোই এখন বিজেপি নেতৃত্বের কাছে একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। আর তাই সব মিলিয়ে দিলীপবাবুর দিল্লি যাত্রা নিয়ে চরম কৌতূহল তৈরী হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!