করোনা ভাইরাস যাতে দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য অনেকদিন আগেই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। দেখতে দেখতে চার দফায় লকডাউন হয়ে গিয়েছে। চলছে পঞ্চম দফার লকডাউন। কিন্তু এই লকডাউনে বেশকিছু শিথিলতা জারি করা হয়েছে। যা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে সকলের। কেননা এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাস তার স্থিতাবস্থার রূপ নেয়নি।

ফলে হঠাৎ করেই লকডাউন প্রক্রিয়া শিথিল করে দেওয়ায় গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা করছিলেন অনেকেই। আর এবার অবশেষে কি সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে সূত্রের খবর, এইমস, আইসিএমআর সহ দেশের একগুচ্ছ স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই নানা বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে তৈরি হওয়া রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে জমা পড়ে গিয়েছে বলে খবর।

যেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, ভারতে করোনা ভাইরাস যে পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে, তাতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তার ফলেই দিনকে দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে এমত পরিস্থিতিতে সেই লকডাউন আরও শিথিল হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু হঠাৎ করে ভারতবর্ষে এই গোষ্ঠী সংক্রমণ হল কেন? যেখানে প্রথম থেকে ভারত লকডাউনের পথকে বেছে নিয়েছিল, সেখানে এই ভাইরাস তার ভয়াবহ আকার কিভাবে ধারণ করল?

একাংশের মতে, গত 25 শে মার্চ থেকে 31 মে পর্যন্ত ভারতবর্ষে যে লকডাউন চলেছে, তা অনেক জায়গাতেই ভাল মত পালন করা সম্ভব হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত 25 শে মার্চ দেশে যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 606, সেখানে 24 মে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 1 লক্ষ 38 হাজার 845 জনে। ফলে লকডাউন হলেও তা যে কাজের কাজ হয়নি, তা কার্যত পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে হুহু করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেখেই।

অনেকে বলছেন, পুঁথিগত বিদ্যার উপর নির্ভর করে কেন্দ্রীয় সরকারের আমলারা করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করতে অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। কিন্তু যদি তারা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতেন, তাহলে আজ ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হত না। কিন্তু সেক্ষেত্রে নিজেদের আমলাতান্ত্রিক বুদ্ধি দিয়ে করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করতে গিয়েই ভারতের সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ফলে সেদিক থেকে ভাইরাসকে প্রতিহত করবার জন্য এতদিন নানা লকডাউন করা হলেও, এবার ভারতে এই গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে যাওয়ায় চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে বিশেষজ্ঞদের। গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে লকডাউনে শিথিলতা। ফলে শিথিল হয়ে যাওয়ায় এখন মানুষ অবাধে বাইরে বেরোতে পারবেন না। আর তার ফলে সংক্রমণ আরও চরম আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এখন করোনা ভাইরাসে ভারতের অস্বস্তি কতটা বাড়ে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।