জলপাইগুড়িতে বিজেপির পায়ের তলার মাটি কেড়ে নিতে মমতার ডাবল স্ট্রাইক, জল্পনা বাড়ছে জেলাজুড়ে উত্তরবঙ্গ তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য July 25, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গত লোকসভায় উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ব্যাপকভাবে ভরাডুবি হয় জলপাইগুড়ি থেকে শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর, প্রতিটি জেলাতেই পদ্মফুল ফুটিয়ে নেয় ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এর পরেই বিভিন্ন জেলার সংগঠনে রদবদল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সামনে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন যত দিন যাচ্ছে, ততই তৃণমূলের অস্বস্তি বিভিন্ন কারণে বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রতিটি বিধানসভা আসন যাতে নিজেদের দখলে রাখা যায়, তার জন্য ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দলের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে ব্যাপক রদবদল করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে জলপাইগুড়ি জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান করা হল রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে। অন্যদিকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হল ধুপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়কে। স্বাভাবিকভাবেই দুই হেভিওয়েট নেতা নেত্রীর দলে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়াকে এখন অন্য চোখে দেখছে রাজনৈতিক মহল। অনেকে বলছেন, খগেশ্বর রায়কে জেলার চেয়ারম্যান করে জেলার গোষ্ঠী রাজনীতিতে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি খগেশ্বর রায় ও মিতালি রায় দুইজনেই রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ। তাই জলপাইগুড়ি জেলায় দুই মুখকে দায়িত্ব দিয়ে রাজবংশী ভোটারদের সমর্থন পেতে চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই জলপাইগুড়ি জেলায় কিছুদিন ধরেই ব্যাপক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল। জেলা তৃণমূল সভাপতি কিষান কল্যানীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু। স্বাভাবিকভাবেই দিনকে দিন মোহন বসু যখন বিদ্রোহী হয়ে উঠলেন, তখন তার পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে। কিন্তু এবার সেই খগেশ্বর বাবু বিদ্রোহী হলে, তাকে জায়গা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোষ্ঠী কোন্দল রোধ করতে চাইলেন। শুধু তাই নয়, এদিন জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক পদেও বদল ঘটিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন এখানকার দায়িত্বে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কিন্তু এবার সেখানে মলয় ঘটক এবং পূর্ণেন্দু বসুকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয়, জলপাইগুড়ি জেলায় যেভাবে গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে বিজেপি তাদের মাটি শক্ত করেছে, তাতে এখানকার রাজবংশী ভোট সবথেকে বেশি নিজেদের দিকে টানতে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এই রোগটি ধরে ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজবংশী ভোটকে নিজেদের দিকে আনার জন্য বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে এখন খগেশ্বর রায় এবং মিতালী রায়কে যৌথ দায়িত্ত্ব দিয়ে জেলার সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু যদি জলপাইগুড়ি জেলায় গোষ্ঠী কোন্দল একই ভাবে চলতে থাকে, তাহলে বিজেপিকে কুপোকাত করা তো দূর অস্ত, উল্টে নিজেদের সমস্যায় জর্জরিত হয়ে থাকতে হবে ঘাসফুল শিবিরকে। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, দলের দায়িত্ব পেয়ে খগেশ্বরবাবু এবং মিতালীদেবী কতটা ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে পারেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -